Cvoice24.com


স্বার্থান্বেষী মহল যেন চবি’র সৌন্দর্য হরণেই ব্যস্ত!

প্রকাশিত: ০৫:০০, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০
স্বার্থান্বেষী মহল যেন চবি’র সৌন্দর্য হরণেই ব্যস্ত!

ফাইল ছবি।

কোনো নির্বাচনী আমেজ বা নির্দিষ্ট কোন উৎসব নয়। সারাবছরই বিভিন্ন অজুহাতে দেয়ালজুড়ে স্হান পায় রং বেরংয়ের পোস্টার,ব্যানার ও চিকা। এতে করে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্হাপনার সৌন্দর্যহানির পাশাপাশি ক্যাম্পাসের পরিবেশ ও বিপর্যয়ের মুখে পরেছে।

বলছিলাম সবুজ পাহাড়বেষ্টিত ২১০০ একরের ক্যাম্পাস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কথা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক বিস্তৃত প্রাঙ্গণ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরা যেখানে এই সৌন্দর্য ধরে রাখার চেষ্টায় ব্যস্ত সেখানে একদল স্বার্থান্বেষী মহল যেন সৌন্দর্য হরণেই ব্যস্ত!

প্রতিনিয়ত ক্যাম্পাসের দেয়ালে পোস্টার, ব্যানার,দেয়ালিকা লাগিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন কোচিং সেন্টার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক গ্রুপ-উপগ্রুপ ও আঞ্চলিক ফোরাম। বাইরে থেকে ক্যাম্পাসের দেয়ালগুলো দেখে প্রকৃতপক্ষে এটিকে বিশ্ববিদ্যালয় বলে মনে না হওয়াটাই স্বাভাবিক। বিলবোর্ড কিংবা পোস্টার বোর্ড বা প্রচারণার মাধ্যম ভাবলেও ভুল হয় না!

কখনো কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং গেইটের মূল প্রবেশ পথের দেয়ালে শোভা পায় নগর বা স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ অথবা বিভিন্ন আঞ্চলিক ফোরাম আবার কখনও সিনেমা হলের বিজ্ঞাপনের ছবিযুক্ত পোস্টার! প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দু হতে বাদ পড়েনা জিরো পয়েন্টস্থ ওয়াচ টাওয়ার,বঙ্গবন্ধু উদ্যান, প্রশাসনিক ভবন, লাইব্রেরিসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্হাপনা।

এসব কারণে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যহানির বিষয়ে রীতিমত ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা! বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বললে তারা বিষয়টিকে প্রশাসনের অবহেলিত মনোভাব ও শিক্ষার্থীদের অসচেতনতার ফল বলে জানান।

ইতিহাসের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী রায়হান জানান, 'আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের দিকের দেয়ালগুলোতে যেভাবে পোস্টার লাগানো থাকে তা দেখে এটাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙ্গিনা বলে মনে হয় না। অহেতুক এসব প্রচারণায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দর পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় পোস্টার ও ব্যানারগুলো অপসারণ করলে স্হাপনাগুলোর প্রকৃত সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এ বিষয়ে শুধুমাত্র প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকলেই পরিবেশ সুন্দর রাখা সম্ভব'।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপনাসমূহের সৌন্দর্য রক্ষায় আমরা শীঘ্রই ব্যবস্থা নিব। শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা সচেতন ও যত্নশীল হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নিরাপদ ও সুন্দর থাকে। আমরা তাদেরকে সৌন্দর্য রক্ষায় সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাই।

ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী সোহাগ মিয়া আক্ষেপের স্বরে জানান, 'আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে এমন বিষয়গুলোর ব্যাপারে প্রশাসনকে আরও সতর্ক হওয়ার দাবি জানাই। সেই সঙ্গে ক্যাম্পাসের সুন্দর সাবলীল পরিবেশ কামনা করছি'।

এ সকল বিষয়ে জনতে চাওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত নিরাপত্তা প্রধান মো: বজল হক বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের তোয়াক্কা না করে নিজের খেয়াল খুশি মত ব্যানার ফেস্টুন লাগাচ্ছে। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও রাজনৈতিক গ্রুপ নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এসব করছে। এমনকি বিভিন্ন সময় আমাদের নিরাপত্তা কর্মীরা পোস্টার লাগানোয় বাধা দিলেও তারা তা মানে নি। তাই এ ব্যাপারে দীর্ঘস্থায়ী ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা কষ্টকর হয়ে উঠেছে। তবে প্রক্টরিয়াল বডি এসব উচ্ছেদে উদ্যোগ গ্রহণ করলে আমরা তাদের সহযোগিতা করব।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্হাপনায় লাগানো পোস্টার,ব্যানার ও চিকা অপসারণে বিগত ভর্তি পরীক্ষার সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্হা নিলেও তার কোন কার্যকরী সুফল মেলেনি।

-সিভয়েস/এসসি

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়