Cvoice24.com


শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে রায়ছটা প্রেমাশিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ১৩ জানুয়ারি ২০২০
শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে রায়ছটা প্রেমাশিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়

ছবি : সিভয়েস

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপকূলীয় খানখানাবাদ রায়ছটা প্রেমাশিয়া এলাকায় আলোকিত মানুষ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে ১৯৯৩ সালে মাত্র ৯৮ শতক জমির উপর এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। আধুনিক মানসম্মত শিক্ষার দৃঢ় প্রত্যয়ে মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠেছে রায়ছটা প্রেমাশিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়।

শুরুতেই গুরুত্ব দেওয়া হয় নিয়ম শৃঙ্খলা ও পড়াশোনা দিকে। সাফল্যও এসেছে। প্রত্যেকটি পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানটি ভালো ফলাফল অর্জন করেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে আর কখনো পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দুইতিন বছর যাবৎ বেশ সাফল্যও এসেছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২০১৮ সালে জেএসসি পরীক্ষায় ৬৪.২৪% এসএসসি পরীক্ষায় ৭১.১৩% পাস করেছে পাশাপাশি ২০১৯ সালে জেএসসি পরীক্ষায় ৭৪% এবং এসএসসি পরীক্ষায় ৬৭.০৭% পাস করেন এই বিদ্যালয়টি।

লেখাপড়ার পাশাপাশি নিয়মিত সংস্কৃতির চর্চার কারণে উপজেলা অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তুলনায় স্কুলটি ব্যাপক পরিচিত লাভ করেছে। বর্তমানে স্কুলটিতে ৭০৩ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে রয়েছে ১৩ জন অভিজ্ঞ শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রতিনিয়ত পাঠদান। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও এলাকাবাসীর আন্তরিকতায় এই বিদ্যালয়ে বর্তমানে জায়গা বৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে এর ছাত্র ,শিক্ষক ও কর্মচারী। বিদ্যালয়ে চালু আছে বিজ্ঞান ,ব্যবসায় শিক্ষা (বাণিজ্য) ও মানবিক বিভাগ। বিদ্যালয়ে একটি সমৃদ্ধ পাঠাগারে বই রয়েছে ৫ শতাধিক। স্বল্প পরিসরে রয়েছে খেলার মাঠ। বিদ্যালয়ে রয়েছে আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম।
 
রায়ছটা প্রেমাশিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানায় এর পেছনের গল্প ১৯৯৩ সালে মাত্র অর্ধ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে স্কুলটির যাত্রা শুরু হয়। শিক্ষার মান নিয়ে তিনি কখনো আপস করেননি। শিক্ষক নিয়োগ ক্ষেত্রে ডিগ্রিধারী মেধাবীদের অগ্রাধিকার দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের রয়েছে ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও লাইব্রেরি। তিনি আরো বলেন, সাফল্যের অন্যতম কারণ কঠোর নিয়ম শৃঙ্খলা শতভাগ উপস্থিতি নিয়মিত ক্লাস ও বছর শেষ হওয়ার আগেই সিলেবাস শেষ করানো ও সীমিত আসন সংখ্যা। মেধা যাচাইয়ের জন্য নিয়মিত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা। অপেক্ষাকৃত দুর্বলতা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার মাধ্যমে সমস্যা চিহ্নিত করে। অতিরিক্ত ক্লাসের মাধ্যমে তাদের সমস্যার সমাধান করা।

প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন,তাদের কোনো শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়তে হয় না। ক্লাসের মাধ্যমেই ছাত্র-ছাত্রীদের সকল সমস্যা সমাধান করা হয়। দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীকে স্কুল থেকে বিনামূল্য শিক্ষা উপকরণ প্রদান করা হয়। শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করতে শ্রেণি কক্ষ ও দেওয়ালে কবি, পাঠ্য বইয়ের গল্পের দৃশ্য, বর্ণমালা, জাতীয় পতাকা, স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনার, ভাষা শহীদ, বীর শ্রেষ্ঠদের পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে।

মিনা-রাজুর স্কুলে যাওয়ার দৃশ্য দেখার মতো। স্কুল প্রাঙ্গণ সাজানো হয়েছে সবুজের সমারোহ দিয়ে। এতে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন জাতের ফুল, ফল, বনজ ও ঔষধি গাছ। নিয়মিত শরীর চর্চা পাশাপশি ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে বিজ্ঞান মেলা ও চিত্রাঙ্কন, বিতর্কসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

শিক্ষার্থীরা জানায়, কঠোর নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলা নিয়মিত পড়াশোনা ও শিক্ষাকদের আন্তরিকতার কারণে প্রতিবছরই তারা ভালো রেজাল্ট করতে পারছে। সেই সঙ্গে সন্তানদের ধারবাহিক ফলাফলে অভিভাবকরাও সন্তুষ্ট। জানালেন ভবিষ্যতের ধারাবাহিক সাফল্য ধরে রেখে মাধ্যমিক থেকে কলেজে রূপান্তরিত করতে চান প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুস সবুর জানান, এই উপকূলীয় অঞ্চলে এই বিদ্যালয়টি পুরো গ্রামের মানচিত্র বদলে দিয়েছে। এখন গ্রামের লোকজন শিক্ষামুখী হয়েছে। ভবিষ্যতে এই বিদ্যালয়টি কলেজে রুপান্তর হবে বলে আমি আশা রাখি।

-সিভয়েস/এসসি

মুহাম্মদ মিজান বিন তাহের

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়