Cvoice24.com


'আমি বাংলাদেশের জনগণের 'সার্বক্ষণিক কর্মী'

প্রকাশিত: ০৭:১১, ২ ডিসেম্বর ২০১৯
 'আমি বাংলাদেশের জনগণের 'সার্বক্ষণিক কর্মী'

ছবি : সংগৃহীত

নিজেকে বাংলাদেশের জনগণের ‘সার্বক্ষণিক কর্মী’ হিসেবে অভিহিত করে শেখ হাসিনা বলেন, জনসাধারণের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটানোর জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। যাতে আমাদের কাজের সুফল  শহর ও গ্রাম উভয় এলাকার মানুষ পেতে পারে। আমরা পরিকল্পনা মাফিক কাজ করে যাচ্ছি যাতে আগামী প্রজন্ম একটি সুন্দর জীবন লাভ করে।

প্রধানমন্ত্রী দেশের অদম্য অগ্রগতি অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন যাতে বাংলাদেশকে আর কখনো পিছনে ফিরে তাকাতে না হয়।

জলবায়ু সম্মেলন উপলক্ষে তিন দিনের সফরে স্পেনে পৌঁছে রোববার সন্ধ্যায় মাদ্রিদের হোটেল ভিলা ম্যাগনায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে এক শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।  

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্পেন আওয়ামী লীগের সভাপতি এস আর আই এস রবিন ও সাধারণ সম্পাদক মো. রিজভী আলম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, অসৎ পথে থেকে ‘বিরিয়ানি’ খাওয়ার চেয়ে সৎ পথে থেকে ‘নুন-ভাত’ খাওয়া অনেক ভাল। আমরা জাতির জনকের কাছ থেকে এই শিক্ষা পেয়েছি। আমাদের নতুন প্রজন্মকে এই শিক্ষা দিতে হবে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল, তাদের অপকর্মের কারণে সমাজে মানুষের চারিত্রিক স্খলন হয়েছিল বলে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকারের সময়ে বাংলাদেশ এখন আবার সব দিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন অন্তত বিদেশের মানুষ বাংলাদেশের নাম শুনলে মর্যাদা দিয়ে কথা বলে। আগে নাম শুনলেই বলতো দুর্ভিক্ষের দেশ, বন্যা, খরার দেশ, দুর্নীতিতে দেশ। কারণ বিএনপির আমলে পাঁচবার বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন। এখন আর সে বদনামটা আমাদের নাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশে এখন অনেকেই তার কাছে জানতে চান- সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়নের ‘ম্যাজিকটা’ কী? আমি বলি ম্যাজিকটা কিছু না। দেশকে ভালবাসি, মানুষকে ভালবাসি। আমার বাবার কাছ থেকে শিখেছি। দেশের কল্যাণে কাজ করা। আমার আর কোনো কাজ নেই। বাংলাদেশের জনগণের হোল টাইম ওয়ার্কার আমি।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী অর্থনীতি থেকে খেলাধূলা সকল ক্ষেত্রে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশের নাম শুনলে অন্যান্য দেশের মানুষ এখন বাংলাদেশকে সম্মান করে। কিন্তু তারা আগে জানতো যে বাংলাদেশ হচ্ছে বন্যা, খরা, দুর্ভিক্ষ ও দুর্নীতির দেশ। আমরা সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছি। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, এক শ্রেণির মানুষ ঘুষ-দুর্নীতিতে লিপ্ত হয়ে, সন্ত্রাস করে, লোকজনের সম্পদ ছিনিয়ে নিয়ে বিলাসী জীবন-যাপন করতে চায় এবং তারা বলতে চায় যে ‘মুই কি হনুরে’। কিন্তু আমরা চাই জনগণের মধ্যে এই ধরণের মানসিকতা থাকবে না এবং সমাজের এই অসুস্থতা নির্মূল করতে হবে।

দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদানের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, প্রবাসী যারা আছেন, আপনাদের যথেষ্ট অবদান আমাদের এই উন্নয়নে। আমাদের রিজার্ভের টাকা দিয়ে, আমাদের নিজেদের ব্যাংকের টাকা দিয়ে আমরা ড্রিমলাইনার কিনলাম। অন্য ব্যাংক থেকে… বিদেশ থেকে আমরা ধার নেব কেন? আমাদের ব্যাংকের টাকা দিয়ে আমরা করব। কাজেই এখানে আপনাদের বড় অবদান রয়েছে।

বিএনপি- জামাতের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামাত সরকারের সময় বাংলাদেশ পাঁচবার দুর্র্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। কিন্তু এখন সে দুর্নাম ঘুচে গেছে। “মানিলন্ডারিং, দুর্নীতি, অস্ত্র চোরাকারবারি… ১০ ট্রাক অস্ত্র তো ধরা পরলো।  একটা ধরা পড়েছে। এরকম যে কতবার অস্ত্র চোরাকারবারি- তারা আমাদের বাংলাদেশকে ব্যবহার করেছে, তার তো হিসাব নেই। গোটা দেশে একটা অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করেছিল।

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সমালোচনার জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি এখন অনেক ইলেকশন নিয়ে কথা বলে। ইলেকশনের ভালো-মন্দ খুঁটে দেখে। ওরা আয়নায় চেহারা দেখে না। জিয়াউর রহমানের ‘হ্যাঁ-না’ ভোটের ‘না’ বাক্স তো কোনদিন খুঁজেই পায়নি, সব ‘হ্যাঁ’ বাক্স। সেখানে সবাই ‘হ্যাঁ’ই দিয়ে গেছে। তারপর তার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। ১২০ ভাগ না ১৩০ ভাগের উপর ভোট পড়ে গিয়েছিল। তারপর সেটা কমানোর চেষ্টা। এরপর আবার জাতীয় সংসদ নির্বাচন। দল একটা বানালো, তারাই টু থার্ড মেজরিটি পেয়ে গেল। আওয়ামী লীগের মাত্র ৩৯টা সিট। একটা পার্টি বানালো… মানে একটা বাচ্চা জন্ম নিল। হাঁটতেও শিখলো না, চলতেও শিখলো না। ওমনি টু থার্ড মেজরিটি পেয়ে গেল। আর আওয়ামী লীগ সেই ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত দল, তারা সিট পায় না!

পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো.শাহাব উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, স্পেনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হাছান মাহমুদ খন্দকার উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।

-সিভয়েস/এসসি

সিভয়েস ডেস্ক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়