সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাচন ২০১৯
রাত পোহালেই ভোট

আজ রোববার রাত পোহালেই আগামীকাল সোমবার শুরু হচ্ছে সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। ২৮২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ উপজেলায় এটি পঞ্চম ও শেষ ধাপের নির্বাচন। বেশ কয়েকটি কারণে সাধারণ মানুষের দৃষ্টি এখন এ নির্বাচনের দিকে। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএমের) মাধ্যমে অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচনে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপির প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ মোট ৩জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 

নির্বাচন উপলক্ষে গতকাল মধ্যরাত থেকেই উপজেলা জুড়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী টহল ব্যবস্থা জোরদার করেছে। আজ সকাল থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়া হয়েছে ইভিএম সহ নির্বাচনী সব সরঞ্জাম মাঠ পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
নির্বাচনের দিন সাধারণ নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী এলাকায় আজ দিবাগত রাত ১২টা থেকে সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত বাস, ট্রাক, টেম্পো, সিএনজি, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বেবিট্যাক্সি বা অটোরিকশা ইত্যাদি যানবাহনের চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

৪ প্লাটুন বিজিবি, র‌্যাবের ৬টি টিম, পুলিশের ৪টি টিম স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে কাজ করবে। এছাড়া নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সহযোগিতার জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে দুইজন করে সেনাবাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। অতিরিক্ত প্রয়োজনে ৪জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১ প্লাটুন বিজিবি থাকবেন। এছাড়া প্রতি কেন্দ্রে ৩জন পুলিশ, অস্ত্র ও লাঠিসহ একজন অঙ্গীভূত আনসার, অঙ্গীভূত আনসার ১০জন(মহিলা ৪ ও পুরুষ ৬) একজন করে গ্রাম পুলিশ দায়িত্বে থাকবেন।

১৩ অক্টোবর থেকে নির্বাচনের দিন ১৪ অক্টোবর এবং পরের দিন ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ৬জন নির্র্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে গঠিত ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে কাজ করবে। এছাড়া সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাচনে নির্বাচনী অপরাধ বিচারার্থে আমলে নেওয়া এবং তা সংক্ষিপ্ত বিচারের জন্য ১জন বিচার বিভাগীয়(জুডিশিয়াল) ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী এম এ মোতালেব সিআইপি (নৌকা), বিএনপি মনোনীত আবদুল গাফফার চৌধুরী (ধানের শীষ) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মোনায়েম চৌধুরী মুন্না (মোটর সাইকেল) প্রতীক নিয়ে  প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাতকানিয়া উপজেলা বঙ্গবন্ধু সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি সালাউদ্দিন হাসান চৌধুরী (বই), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান (তালা), জসিম উদ্দিন (চশমা), বিএনপি সমর্থিত বশির উদ্দিন (ধানের শীষ) এবং মো. আসিফুর রহমান সিকদার (মাইক) এবং মোহাম্মদ ওমর ফারুক (টিওবওয়েল) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা  করছেন তারান্নুম আয়েশা (প্রজাপতি) ও  আঞ্জুমান আরা বেগম (কলস)।

গত ৩ সেপ্টেম্বর সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদের তফসিল ঘোষণা করা হয়। তাতে ভোট গ্রহণের তারিখ ১৪ অক্টোবর সোমবার নির্ধারণ করা হয়। ২০১৪ সালের ২৩ মার্চ সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে চেয়ারম্যান, ভাইস- চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াত সমর্থিতরা নির্বাচিত হন। আগামী ২১ অক্টোবর এ পরিষদের মেয়াদ শেষ হবে।

এই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে একজন অংশ নিলেও মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এম এ মোতালেব সিআইপি  (নৌকা) ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আবদুল গাফফার চৌধুরীর (ধানের শীষের) মধ্যে। সাধারণ মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হলো কারা পরবর্তী উপজেলা পরিষদ পরিচালনার দায়িত্বে আসছে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ প্রার্থী জিতছে নাকি প্রধান প্রতিদ্বদ্বী বিএনপি জিতবে, সাধারণ মানুষের এমন নানামুখী আলোচনার উত্তর পাওয়া যাবে সোমবার রাতের মধ্যেই। বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণের পর শুরু হবে ভোট গণনা।

এ উপজেলা ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ২ লাখ ৮৩ হাজার ৩৮০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫০ হাজার ২৮৬ জন ও ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৪ জন নারী ভোটার। 

সিভয়েস/এএস