‘হায় হোসাইন’ মাতমে চট্টগ্রামে আশুরার শোক মিছিল
ছবি: আকমাল হোসেন
আরবি বর্ষের প্রথম মাস। অর্থাৎ মহররম মাসের ১০ তারিখ মুসলিমদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এদিনে ইমাম হোসাইন (আঃ) এবং তাঁর পরিবার-অনুসারীরা সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন। এ ঘটনা স্মরণ করে বিশ্ব মুসলিম যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করে থাকেন। শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের মহান আদর্শকে সমুন্নত রাখতে তাঁদের এ আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। কারবালার এই শোকাবহ ঘটনা ও পবিত্র আশুরার শাশ্বত বাণী সবাইকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং সত্য ও সুন্দরের পথে চলতে প্রেরণা জোগায়।
কারবালায় ৩০ হাজার ইয়াজিদী সেনার বিরুদ্ধে মাত্র ৭২ জন সাথী নিয়ে ইমাম হোসাইনের বীরত্বপূর্ণ জিহাদ ও শাহাদাতের দিন স্বরণে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) মার্সিয়া জুলুস বের করে শিয়া ইশনা আশারা ইমামিয়া জামা’আত। মার্সিয়া জুলুসের “নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবার, নারায়ে রেসালাত, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, নারায়ে হায়দারী, ইয়া আলী, লাব্বাইক ইয়া হোসাইন” এসব ধ্বনির সঙ্গে এবার যুক্ত হয়– ইসলামের নামে সন্ত্রাস-রুখে দাড়াও মুসলমান” স্লোগান।
শিয়া ইশনা আশারা ইমামিয়া জামা’আত শোহাদায়ে কারবালা স্মরণে পহেলা মহররম থেকে ২০ সফর পর্যন্ত রোজা, নামাজ, শোক-মজলিস, মার্সিয়া ইত্যাদি কর্মসূচীর মাধ্যমে শোক পর্ব পালন করে থাকে। তবে ১০ মহররম তাদের জন্য সবচেয়ে বড় শোকের দিন। এদিন তারা মার্সিয়া, জুলুস আহাজারি তথা শোকর্যালি নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে।
মিছিলে অংশগ্রহণকারী হোসাইন প্রেমিরা ‘হায় হোসাইন, হায় হোসাইন’,‘ইয়া হোসাইন, ইয়া হোসাইন’, বলে বুক চাপড়ে মাতম করতে থাকে। মিছিলে ইমাম হোসাইনের প্রতিকী কফিন, ঘোড়া (দুলদুল) এবং শোকাবহ পতাকা (ঝান্ডা) বহন করা হয়।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় নগরের সদরঘাট ইমামবাড়া থেকে হাজার লোকের এই র্যালি নগরের বিভিন্নপথ প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শেষ হয় সদরঘাটে। এ জুলুস থেকে বিশ্ব মুসলিমকে ঐক্যের জন্য এগিয়ে আসতে আহ্বান করেন মিছিলের নেতৃত্বদানকারী ইমাম মওলানা আমজাদ হোসেন।
তিনি সরকার ও নগর পুলিশের সকল কর্মকর্তার প্রতিও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
এছাড়া দুপুর দুইটায় বাকলিয়া শান্তিনগর এলাকা থেকে একটি মিছিল বের করে বিহারিরা। নগরীর দেওয়ান বাজার, সিরাজদ্দৌলা সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিকেল পৌনে ৪টায় শান্তিনগর চেয়ারম্যান কলোনিতে গিয়ে মিছিলটি শেষ হবে বলে জানা যায়।
জুলুস ও তাজিয়া মিছিলকে ঘিরে নগরীতে কয়েকটি স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন সিএমপির কমিশনার মাহবুবর রহমান।
তিনি জানান, কোন দুষ্কৃতিকারী যাতে এই শোক মিছিলে বাঁধা সৃষ্টি কিংবা পণ্ড করতে না পারে সেজন্য সাদা পোশাকে পুলিশসহ অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলো সজাগ আছেন।
-সিভয়েস/এএইচ/এমএম
সিভয়েস প্রতিবেদক