Cvoice24.com


আন্তর্জাতিক তকমা হারাতে বসেছে জহুর আহমেদ স্টেডিয়াম! 

প্রকাশিত: ১৫:২৪, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯
আন্তর্জাতিক তকমা হারাতে বসেছে জহুর আহমেদ স্টেডিয়াম! 

ছবি : আকমাল হোসেন

আসন্ন একমাত্র টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের ৩টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। তবে কার্যক্রমে আন্তর্জাতিক হলেও ভেতরের অবস্থা বেহাল। নাজুক অবকাঠামোর পাশাপাশি হারানোর পথে স্টেডিয়ামের দর্শকদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা।

২০০৪ সালে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ দিয়ে আন্তর্জাতিক মানের সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ভেন্যু হিসেবে স্বীকৃতি পায় জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম। ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে ও টেস্ট ম্যাচ আয়োজনের মধ্য দিয়ে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখে স্টেডিয়ামটি। 

২০১১ বিশ্বকাপের সময় মূল প্রবেশ গেইটে লাগানো হয় উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন টিকিট স্ক্যানার ট্রাসটেল গেইট। এখন সেগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে গেইটগুলোতে দেখা মিলছে পুলিশের বসার চেয়ার, সিকিউরিটি ভেস্ট। এছাড়া গেইটগুলো কুকুরের আশ্রয়স্থলসহ কর্মচারিদের সাইকেল বেঁধে রাখার নিরাপদ জায়গায়ও পরিণত হয়েছে।
 
এদিকে ২০১১ বিশ্বকাপের সময় ২২ হাজার দর্শকের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন মাঠটি সাজানো হয়েছিল রঙ -বেরঙের ১৫ হাজার চেয়ার দিয়ে। সেইগুলোও এখন স্বরূপে নেই। এর মধ্যে প্রায় কয়েক হাজার চেয়ার নষ্ট হয়ে কেবল নাট-বল্টু পড়ে আছে।  তবে অল্প সংখ্যক চেয়ার থাকলেও সেগুলোও ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।


  
এছাড়া কোনো কোনো গ্যালারিতে চেয়ারের অবকাঠামো পর্যন্ত উঠে গেছে। কিছু কিছু চেয়ারে পানি জমে থাকতেও দেখা যায়। এমনকি বেশকিছু টয়লেট দুর্গন্ধময় ও বালু জমে ব্যবহার অনুপযোগী। সব মিলিয়ে একটি আন্তর্জাতিক ভেন্যুর যে পরিবেশ এবং উন্নত অবকাঠামোর থাকা দরকার তা নেই বর্তমানে।

শুরুতে সাগরে ঘেরা এই সুন্দর স্টেডিয়ামটি নগরবাসীর নজর কাড়লেও, তা বেশীদিন স্থায়ী হতে পারেনি। মাঠটিতে রয়েছে অত্যাধুনিক জায়ান্ট স্ক্রীন, ইলেকট্রনিক স্কোর বোর্ড, প্রেসিডেন্ট বক্স, ফ্লাড লাইট, হসপিটালিটি বক্স, বিশাল ড্রেসিং রুম, ট্রাসটেল গেইট, মিডিয়া সেন্টারসহ অনেক কিছু। 

২০১১ বিশ্বকাপে এবং ২০১৪ টি২০ বিশ্বকাপের ম্যাচের অনেক খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল এ ভেন্যুতে। এছাড়াও প্রতিবছর এখানে আন্তর্জাতিক বেশকিছু ম্যাচও অনুষ্ঠিত হয়। এই মাঠেই আগামী ০৫ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে আফগানিস্তান ক্রিকেট দল একটি  টেস্ট ম্যাচ খেলবে।

এরপরই ১৩ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের তিনটি ম্যাচ স্টেডিয়ামটিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। অথচ স্টেডিয়ামের গ্যালারি দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার ভেন্যু।   

চট্টগ্রামেরে এই ভেন্যুটি টাইগারদের লাকি গ্রাউন্ড হিসেবে পরিচিত। যার দরুন ২০১১ সালে আইসিসি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয় পায় স্বাগতিক দল। এছাড়া ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত টি-২০ বিশ্বকাপ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে জয় পায় টিম বাংলাদেশ। এছাড়াও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্টে একটি জয় রয়েছে ভেন্যুটিতে। পাশাপাশি তামিম-সাকিব-মুশফিকদের ব্যক্তিগত অনেক সুখস্মৃতিও রয়েছে।


 
এদিকে ২০১১ সালের পর থেকে স্টেডিয়ামটিতে বড় ধরনের কোন সংস্কার হয়নি। তবে ২০১৪ সালের টি২০ বিশ্বকাপে আংশিক সংস্কার হয়েছিল। বিসিবি থেকে কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে সংস্কারের কথা থাকলেও এবার তাও করতে দেখা যায়নি।

এই বেহাল দশার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চট্টগ্রাম ভেন্যু ম্যানেজার ফজলে বারী রুবেল সিভয়েসকে বলেন, ২০১১  বিশ্বকাপের সময় গ্যালারিতে কাঠামো দিয়ে ভালো মানের বিভিন্ন রঙের প্রচুর চেয়ার বসানো হয়েছিল। কিন্তু সেসবের অনেকগুলোই এখন ভাঙাচুড়া। এসব চেয়ারের অনেক দাম, তাই ক্রমান্বয়ে সেসব ঠিক করা হবে।
 
দুইতলার গ্যালারির টয়লেটে বালু ও ময়লার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন তো এমন হওয়ার কথা না। ম্যাচকে ঘিরে সেগুলো পরিষ্কার করার কাজ চলছে।  

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবির এক কর্মকর্তা সিভয়েসকে বলেন, এসব দেখভালের দায়িত্ব জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের। তারা এসে একটি তালিকা তৈরি করে এবং যাহাই বাছাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে বিসিবির পক্ষ থেকে  জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়েছে।

-সিভয়েস/এসএ

আকমাল হোসেন ও ফয়সাল আব্দুল্লাহ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়