Cvoice24.com


জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে জোয়ারের পানি, ঝুঁকিতে চিংড়ি ঘের  

প্রকাশিত: ০৯:২১, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯
জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে জোয়ারের পানি, ঝুঁকিতে চিংড়ি ঘের  

ছবি: সিভয়েস

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নে জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ উপচে গত দুইদিন সামুদ্রিক জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে লবণ ও চিংড়ি উৎপাদন।

এদিকে জরাজীর্ণ  বেড়িবাঁধের কারণে বন্যা আতঙ্কে রয়েছে ইউনিয়নের প্রায় দশ হাজার মানুষ। 

এলাকাবাসীদের অভিযোগ, বেড়িবাঁধ পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না করায় তারা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। তাছাড়া যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়াতে পারে এ জনাকীর্ণ এ বেড়িবাঁধ।  বেড়িবাঁধের অবস্থা এতোটাই শোচনীয় যে একজন মানুষও তার উপর দিয়ে হেঁটে যেতে ভয় পায়।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, ইউনিয়নের মগনামা লঞ্চঘাট থেকে শরত ঘোনা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ উপচে সামুদ্রিক জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। জোয়ারের পানির ধাক্কায় ক্রমশ ভাঙছে  বেড়িবাঁধ। ভাঙনের কবলে কোথাও কোথাও মাত্র এক থেকে দেড় ফুট অবশিষ্ট রয়েছে। এতে বন্যা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ওইসব এলাকার মানুষ।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, যেটুকু বেড়িবাঁধ অবশিষ্ট রয়েছে, তা খুব কম সময়ে বিলীন হয়ে যেতে পারে। গত দুদিন ধরে সামুদ্রিক জোয়ারের পানি বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করে ইউনিয়নের বাজার পাড়া, বহদ্দার পাড়া, শরত ঘোনা ও উত্তর পাড়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার বেশ কয়েকটি চিংড়ি ঘের জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সরকারি কার্যাদেশ পেয়ে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে মগনামা ইউনিয়নের ৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সংস্কারকাজ শুরু করে উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এ প্রতিষ্ঠান দুই বছরের নির্দিষ্ট সময়ে ৬ কিলোমিটার  সংস্কারকাজ সম্পন্ন করলেও সম্পূর্ণ অরক্ষিত অবস্থায় রেখে দেয় দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির এমন অবহেলায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে শত কোটি টাকার সরকারি এ উন্নয়ন প্রকল্প।

স্থানীয় বাসিন্দা নেজামুল ইসলাম বলেন, বেড়িবাঁধটির সংস্কারকাজ দ্রুত শেষ করতে আমরা সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দিয়ে আসছিলাম। কিন্তু ঠিকাদারের ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে অত্যন্ত ধীরগতিতে সংস্কারকাজ হয়েছে। তাই কার্যাদেশের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও সংস্কারকাজ শেষ হয়নি।

মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম বলেন, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু ও আইলার আঘাত এখনো সামলে উঠতে পারেনি মগনামার মানুষ। বেড়িবাঁধ ভেঙে ২০১৫-১৮ সাল পর্যন্ত মগনামা ইউনিয়ন অন্তত ১০ বার প্লাবিত হয়েছে। এখনো ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছে গ্রামীণ অবকাঠামো।

দুর্যোগের পর সরকার মগনামা ইউনিয়নে অন্তত ৮ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছে। এখন ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে বর্ষায় পানি ঢুকলে এসব উন্নয়নকাজ ভেস্তে যাওয়ার পাশাপাশি কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হবে এলাকাবাসীর।

তিনি আরো বলেন, মগনামা ইউনিয়নে ৩০ হাজার মানুষের বসবাস। বেড়িবাঁধের এই অরক্ষিত অংশ নিয়ে মগনামাবাসীর মাঝে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাই মগনামা ইউনিয়নের বাসিন্দাদের আসন্ন প্লাবন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় সাংসদ ও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ জরুরি।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, মগনামা ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ অধিকাংশ সংস্কার করা হয়ে গেছে। তবে বেড়িবাঁধের সামান্য কিছু অংশ এখনো সংস্কার করা হয়নি। এটি দ্রুত সংস্কারের জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সিভয়েস/আই
 

ইমরান হোসাইন, পেকুয়া

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়