Cvoice24.com

চট্টগ্রামে চোরচক্রের ১১ সদস্য গ্রেফতার
সাংকেতিক শব্দ ব্যবহার করে চুরি করে ওরা, টার্গেট দোকান-অফিস

প্রকাশিত: ০৯:০২, ২৫ আগস্ট ২০১৯
সাংকেতিক শব্দ ব্যবহার করে চুরি করে ওরা, টার্গেট দোকান-অফিস

চট্টগ্রামে পুলিশের হাতে গ্রেফতার চোরচক্রের ১১ সদস্য। ছবি : সিভয়েস

চট্টগ্রামে সংঘবদ্ধ চোর চক্রের মূল হোতাসহ ১১ জন চোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ চক্রটি ৯ থেকে ১০টি দলে ভাগ হয়ে গত ১২ বছর সারাদেশে চুরির ঘটনা করে আসছিল বলে দাবি পুলিশের। সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামে সংগঠিত দুটি চুরির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে এই চক্রটির সন্ধান পায় সিএমপির কোতোয়ালী থানা পুলিশ।

রোববার (২৫ আগস্ট) দুপুরে সিএমপির দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার এসএম মেহেদী হাসান এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

গ্রেফতার ১১ চোর হলো- মো. লিয়াকত হোসেন (২৪), মো. আকরাম (২৩), মো. হানিফ (৪০), মো. তৌফিক (২৬), মো. মাসুম (২৬), নয়ন (২২), মিলন (২৫), কামাল হোসেন (২৮), জামাল (৩০), ভূসি কামাল (৩২)।

তিনি বলেন, সংঘবদ্ধভাবে তিনটি ধাপে চুরির ঘটনা সংগঠিত করে এ চক্রটি। যার প্রথমধাপে চক্রের প্রধান হানিফ বিভিন্ন মার্কেট, বাণিজ্যিক এলাকা ঘুরে ঘুরে চুরির জন্য দোকান বা অফিস টার্গেট করে। দ্বিতীয় ধাপে হানিফের টার্গেট করা দোকান বা অফিসগুলো রেকি করে। এ সময় সে দোকানগুলোতে কি পরিমাণ অর্থ থাকতে পারে, দোকানে কিভাবে ঢুকতে হবে, চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে কি না, চুরি করতে কি ধরণের সরঞ্জাম ও লোকবল লাগবে এসব পর্যবেক্ষণ করে গ্রীন সিগন্যাল দেয়। কামাল এ চক্রের সেকেন্ড ইন্ড কমান্ড। তার গ্রীন সিগনাল পেলেই কাজ শুরু হয় তৃতীয় ধাপের এই ধাপে প্রয়োজনীয় লোকজন ও সরঞ্জাম নিয়ে সুবিধাজনক সময়ে চুরি করতে যায় চক্রের বাকি সদস্যরা। এক্ষেত্রে দোকান বা অফিসের শার্টারের প্রস্ত ছোট হলে তালা কেটে আর, বড় হলে শার্টারের দুপাশে দুজন টেনে ধরে মাঝখানে ফাঁক করে একজনকে ভেতরে ঢুকিয়ে দেয় তারা। এরপর দুই তিন মিনিটের মধ্যে ভেতরে ঢোকা লোকটি স্ক্রু ড্রাইভার, ছোট কোরাবারির মাধ্যমে ক্যাশবাক্স ও লকার ভেঙ্গে দোকানের মূল্যবান মালপত্র সরিয়ে নিতে সক্ষম তারা। 

চুরির এ পুরো প্রক্রিয়ায় নিজেদের মধ্যে সাংকেতিক শব্দ ব্যবহার করে তারা। যেমন টার্গেট করা দোকানকে বলে অফিস, তালাকে বলে আম, পুলিশকে বলে তেইল্লাচোরা, চুরি করাকে বলে ডিউটি, চুরি করতে দোকানের ভেতরে যে ঢুকে তাকে বলে অফিসম্যান।

শনিবার (২৪ আগস্ট) রাতে নগরীর লালদীঘির পাড় এলাকার আবাসিক হোটেল তুনাজ্জিন থেকে এই ১১ চোরকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন একটি টিম।

এসময় তাদের কাছ থেকে ২টি এলজি, ১টি লোহার রড কাটার যন্ত্র, চারটি কার্তুজ ও একটি রড উদ্ধার করে পুলিশ।

উপ-কমিশনার মেহেদী হাসান বলেন, ইতোমধ্যে তারা আমাদের অনেকগুলি চুরির ব্যাপারে তথ্য দিয়েছে। সারাদেশের যেসব থানায় তারা চুরির ব্যাপারে তারা তথ্য দিয়েছে আমরা সেসব থানাকে অবহিত করেছি। এসব মামলায় তাদের শ্যোন এরেস্ট দেখিয়ে মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে। তাছাড়া আমরা এদের রিমান্ড আবেদন করবো। এদেরকে রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরো অনেক তথ্য পাওয়া যাবে। তাছাড়া এ চক্রের বাকি সদস্যদেরকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আব্দুর রউফ, কোতোয়ালী জোনের সিনিয়র এসি নোবেল চাকমা ও কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন।

সিভয়েস/এআরটি/এএইচ

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়