Cvoice24.com


মেয়র পদে প্রার্থী হতে চান শাহাদাত-বক্কর

প্রকাশিত: ১৭:২৩, ৯ আগস্ট ২০১৯
মেয়র পদে প্রার্থী হতে চান শাহাদাত-বক্কর

ফাইল ছবি।

আগামী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ-বিএনপির প্রার্থী কে হচ্ছেন তা নিয়ে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে আলোচনা। এবারের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিবে বলে জানিয়েছে দলের কেন্দ্রীয় একটি সূত্র। 

এছাড়াও নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য এরই মধ্যে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর।

গত ২৫ জুলাই নির্বাচন কমিশন আগামী বছরের মার্চের মাঝামাঝিতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের সম্ভাবনার কথা জানান। এরপর থেকে আগামী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির প্রার্থী কে বা কারা হচ্ছেন তা নিয়ে নেতাকর্মী সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে।

বিএনপির একটি সূত্র জানায়, বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন কোতোয়ালী-বাকলিয়া আসন থেকে , সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ান চান্দগাঁও বোয়ালখালী সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচন করেছেন। যার কারণে সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হবেন বলে শোনা যাচ্ছে।

এছাড়াও নগর বিএনপির কমিটি ঘোষণা করার সময় এক প্রকার আপোষ করেন শাহাদাত-বক্কর। সভাপতি সংসদ নির্বাচন করলে সাধারণ সম্পাদক মেয়র নির্বাচন করবেন। সেই হিসাবে নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করার পাশাপাশি এলাকাবাসীর সাথে কুশল বিনিময় করছেন।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, নির্বাচন করার সকল রাজনৈতিক নেতার স্বপ্ন থাকে। আমার সেই স্বপ্ন আছে। বিগত সংসদ নির্বাচনে নগর বিএনপির সভাপতি, সিনিয়র সহসভাপতি নির্বাচনে অংশ নেন। আমি এখনো কোন নির্বাচনে অংশ নিইনি। যেহেতু তারা দুজন সংসদ নির্বাচন করেছেন সেহেতু সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমার অগ্রাধিকার থাকবে বলে আমি আশাবাদী।

তিনি আরো বলেন, স্কুল জীবনে ছাত্র রাজনীতি করে এনায়েত বাজার ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের পদ নিয়ে রাজনৈতিক জীবনের শুরু হয়। এরপর কোতোয়ালী থানা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য, নগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি কেন্দ্রীয় যুবদলের দুইবার সহসভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। এরপরে বিএনপির মহানগর কমিটির যুগ্ম আহবায়ক, কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে এখন নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছি। এই নগরের অলিগলি মানুষজন সবাই আমাকে চেনে, কাছে টেনে নিচ্ছে। তারা চাই আমি যেন মেয়র পদে নির্বাচন করি।

তিনি বলেন, নির্বাচনে যদি আমি মেয়র পদে প্রার্থী হয়। তাহলে আমাকে পরিচিত করে দিতে হবে না। কারণ দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের মানুষের স্বার্থে দেশের স্বার্থে বিএনপির স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছি। তাই দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে আমি নির্বাচন করব।

গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছিলেন নগর বিএনপির তৎকালিন সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন। কিন্তু সেই নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পান মনজুর আলম মনজু। যার কারণে বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাকলিয়া কোতোয়ালী আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পান।

এছাড়াও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছের নেতা হিসাবে পরিচিত এই নেতাকে নগর বিএনপির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব দেওয়ার পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার মাধ্যমে নিজের গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ করেন। সংসদ নির্বাচনে কারাগারে থেকে নির্বাচনে অংশ নিলেও প্রচারণায় নামতে পারেননি তিনি। যার কারণে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের কাছে পরাজিত হন তিনি। 

সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে আগামী মার্চে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তিনি। যার কারণে সভাপতি -সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে চলছে বিএনপির মধ্যে আলোচনা। 

জানতে চাইলে নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিবে এটা সত্য। ২০১০ সাল থেকে নির্বাচন করার জন্য আমি কাজ করছি। এবার নির্বাচন যদি সুষ্ঠু হয়, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ থাকে তাহলে আমি নির্বাচন করতে আগ্রহী। ৩০ ডিসেম্বরের মতো যদি দিনের ভোট রাতে হয়, তাহলে তো হবে না। মানুষের ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে নির্বাচন করব।

তিনি আরো বলেন, যে কোন নেতা নির্বাচন করার আগ্রহ দেখাতে পারে, তাতে সমস্যা নাই। দল যোগ্য জনপ্রিয়তা আছে এমন কাউকে মনোনয়ন দিবে। দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে। দল যাকে মনোনয়ন দিবে তিনিই নির্বাচন করবেন।

এদিকে মেয়র পদে নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করের পাশাপাশি আলোচনায় আসছে সাবেক মেয়র মীর মো. নাছির উদ্দীনের পুত্র বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দীনের নামও।

গত ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন আওয়ামী লীগ থেকে আসা মনজুর আলম মনজু। সেই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মনজুর আলম মনজুকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নাছির উদ্দীন।

স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন অনুযায়ী পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে ভোট করতে হবে। যার কারণে আগামী ২০২০ সালের মার্চ মাসে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

বিএনপির সিনিয়র একাধিক নেতা জানান, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নূন্যতম স্পেস তারা পাচ্ছেন না। সেক্ষেত্রে নির্বাচনই একমাত্র ইস্যু তাদের সামনে। নির্বাচনে অংশ নিলে নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা রাখার পাশাপাশি সক্রিয় করা যাবে ভোটের রাজনীতি। তাই সামনে যত প্রতিকূল পরিবেশই আসুক, সব নির্বাচনেই অংশ নেবে বিএনপি। এছাড়া নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তনে বিশ্বাসী বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে সামনে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নিবে বিএনপি। নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে হয় মাঠে কর্মসূচি থাকবে, নয়তো ভোটের রাজনীতি থাকতে হবে। যেহেতু এখন কর্মসূচি নেই, তাই নির্বাচনের মাঠে থাকাই শ্রেয়। কাজেই সামনে স্থানীয় সরকারসহ সব ধরনের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

-সিভয়েস/এমআই/এসএ

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়