Cvoice24.com


‘আমার লাইফ জ্যাকেট খুলে দিয়েও ভাতিজাকে রক্ষা করতে পারলাম না’

প্রকাশিত: ১১:৫৮, ১২ জুলাই ২০১৯
‘আমার লাইফ জ্যাকেট খুলে দিয়েও ভাতিজাকে রক্ষা করতে পারলাম না’

ছবি : সিভয়েস

পাঁচ দিন বঙ্গোপসাগরে ভাসার পর উদ্ধার হওয়া ভারতীয় জেলে রবীন্দ্রনাথ দাস বাংলাদেশে থেকে যাওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়েছে। বাংলাদেশিদের আন্তরিকতা, মানবিকতা ও ভালবাসায় মুগ্ধ হয়ে কেএসআরএম এর কর্মকর্তাদের কাছে এই ইচ্ছার কথা জানিয়েছে রবীন্দ্রনাথ।

শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমির ঘাটে উদ্ধার হওয়ার ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে এই কথা বলেন রবীন্দ্রনাথ দাস।

তিনি জানান, ৫ জুলাই সীমান্তবর্তী এলাকা কেদুয়া থেকে কাঠের নৌকা নিয়ে মাছ শিকারে বের হন তারা। তিনি সহ মোট ১৫ জন জেলে ছিলেন ওই নৌকায়। পরের দিন অর্থাৎ শনিবার উত্তাল স্রোতের ধাক্কায় তাদের নৌকা উল্টে ডুবে যায়। এরপর তারা ১৫ জন একটা বাঁশকে ধরে ২/৩ দিন এক সাথেই ছিলেন। পরে একজন একজন করে বিচ্ছিন্ন হয়ে তলিয়ে যেতে আরম্ভ করে। সর্বশেষ ব্যক্তি হিসেবে তিনি ও তার ভাতিজা স্বপন দাশ (২২) জীবিত ছিলেন।

তিনি বলেন, আমার গায়ের লাইফ জ্যাকেট খুলে দিয়েও ভাতিজাকে রক্ষা করতে পারলাম না। এমভি জাওয়াদ আমাকে উদ্ধার করার ঘন্টা তিনেক আগে বড় একটি ঢেউয়ের সাথে ভাতিজা ভেসে যায়।

বাংলাদেশের মানুষের আন্তরিকতা ও ভালবাসায় মুগ্ধতার কথা জানিয়ে রবীন্দ্রনাথ বলেন, এদেশের মানুষ আমার জন্য যা করেছে তা আমি কখনোই ভুলবো না। বাংলাদেশের কোস্টগার্ডরা যদি একটু খুঁজে দেখে তাহলে বাকিদেরও খোঁজ মিলতে পারে৷

এদিকে, রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধার করা খুব সহজ ছিল না জানিয়ে জাওয়াদের ক্যাপ্টেন এস এম নাছির উদ্দিন বলেন, আমরা ১০ জুলাই তাকে উদ্ধার করি। সকাল ১১টায় তাকে আমরা দেখেছিলাম। তাকে যখন আমরা উদ্ধার করি তখন ঘড়িতে ঠিক ১২টা ৪৫ মিনিট। আমাদের জাহাজ পেছনে ঘুরাতে হয়েছে। এখানে টেকনিক্যাল অনেক টার্ম ছিল। মানবিকতার জায়গা থেকে আমরা আমাদের সবটুকু সামর্থ দিয়ে চেষ্টা করেছি তাকে উদ্ধার করতে। তা করতে পেরে আমরা আনন্দিত।

এই কাজে কোম্পানির সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণা পেয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথকে দেখতে পেয়ে সাথে সাথেই আমি হাই কমান্ডকে জানিয়েছি। উনারা আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন যেকোন মূল্যে তাকে উদ্ধার করার। তাছাড়া আমাদের ক্রুরা প্রত্যেকেই খুব অসাধারণ ভূমিকা রেখেছে।

এদিকে উদ্ধারকৃত ভারতীয় জেলে রবীন্দ্রনাথকে ভারতে ফেরত পাঠানোর অংশ হিসেবে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ। বিকেল ৬টার দিকে কোস্ট গার্ড কার্যালয়ে মেডিকেল চেকাপ শেষে সিএমপির পতেঙ্গা থানায় তাকে হস্তান্তর করা হয়।

কেএসআরএম’র সিও মেহেরুল করিমের তত্ত্বাবধানে এই হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন নৌ বাণিজ্য অধিদপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার ইঞ্জিনিয়ার সাজিদ হোসেন মাস্টার পুলক কুমার ভাস্কর, মেরিন সুপার ওসমান গনি, ডিপিএ-সিএসএ ফয়েজ আহমদ জুকব, ডাক্তার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট ব্রান্ড ম্যানেজার মনিরুজ্জামান রিয়াদ, মিজানুল ইসলাম প্রমুখ।

-সিভয়েস/এআরটি/এসএ

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়