Cvoice24.com


মেয়রের পদক্ষেপে দূর হল বিমানবন্দর সড়কের জলাবদ্ধতা

প্রকাশিত: ১৭:০৭, ১১ জুলাই ২০১৯
মেয়রের পদক্ষেপে দূর হল বিমানবন্দর সড়কের জলাবদ্ধতা

ছবি : সিভয়েস

শাহ আমানত বিমানবন্দর সড়কে দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রায় ২০ ফুট ড্রেনের জায়গা দখল করে গেইট নির্মাণ করে রুবি সিমেন্ট কর্তৃপক্ষ। এতে করে ওই এলাকার পানি প্রবাহের পথ বন্ধ হয়ে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো। নালার জায়গাটি অবমুক্ত করার ব্যাপারে রুবি সিমেন্ট কর্তৃপক্ষকে বেশ কয়েকবার চিঠি পাঠায় চসিক। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নালার জায়গাটি অবমুক্ত করার ব্যাপারে এ পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এতে করে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে সিমেন্ট ক্রসিং থেকে রুবি সিমেন্ট পর্যন্ত সড়ক এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে তীব্র যানজটসহ জনদুর্ভোগের অন্ত ছিল না।

চলতি বর্ষা মৌসুমে প্রবল বর্ষণের কারণে এই সড়ক এলাকায় গত চারদিন ধরে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে করে নগরের সাথে  বিমানবন্দরের যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। সৃষ্টি হয় বিমানবন্দর যাত্রীদের নানা হয়রানি ও দুর্ভোগ। অবশেষে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের দৃঢ় পদক্ষেপে রুবি সিমেন্ট কর্তৃপক্ষের দখলকৃত সেই নালার জায়গা আজ বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) উদ্ধার করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।

সরেজমিন দেখা গেছে, রুবি সিমেন্ট গেইটের ডান পাশের প্রায় ২০ ফুট জায়গা উদ্ধার করে সড়কের উক্ত নালা ৭ নম্বর খালের সাথে সংযোগ করে দেয়াতে সংশ্লিষ্ট সড়ক ও এলাকার জলাবদ্ধতা দূর হয়েছে। এতে করে আবার সচল হয়েছে বিমানবন্দর সড়কটি। জনস্বার্থে জলাবদ্ধতা নিরসনে মেয়রের এই দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে সাধুবাদ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট নগরবাসী। 

এ ব্যাপারে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির জানান, এই জলাবদ্ধতা একদিনের নয়। অবৈধভাবে খাল নালা দখল, জলাশয়, জলাধার ভরাটের কারণে নগরের জলাবদ্ধতা আজ ভয়াবহ আকার নিয়েছে। এই নগরে শত শত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নানাভাবে নালা দখল করে ভবন তুলেছে।  আর তার খেসারত দিতে হচ্ছে পুরো নগরকে।

তিনি বলেন, রুবি সিমেন্টের দখলকৃত নালা অবমুক্ত করার জন্য তাদেরকে কয়েকবার বলা হয়েছে। তারা পদক্ষেপ নেননি। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সিমেন্ট ক্রসিং থেকে রুবি সিমেন্ট পর্যন্ত এলাকায় জলাবদ্ধতা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। অচল হয়ে পড়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি। রুবি সিমেন্টকে শেষ বারের মত বলা হলেও তারা নালার দখল ছাড়তে সময় চায়। কিন্তু বিমানবন্দর সড়কটি সচল রাখতে গেলে, এলাকাবাসীকে জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে হলে আমাকে দ্রুত সময়ের মধ্যেই কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।  তাই আমরা জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য পাম্প করে সড়কের পানি অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু অবিরাম বর্ষণের কারণে এই উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। অবশেষে আজকে দখলকৃত নালার জায়গা উদ্ধার করে পানি সরবরাহের পথ খালের সাথে সংযোগ করে দেয়া হয়েছে।

মেয়র বলেন, শাহ আমানত বিমানবন্দর সড়কের সিমেন্ট ক্রসিং থেকে রুবি সিমেন্ট পর্যন্ত  প্রায় ৩ হাজার ফুট সড়ক এলাকা উঁচুকরন ও নালা নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এলাকার  জলাবদ্ধতা নিরসন করার জন্য এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। রুবি সিমেন্টের দখলকৃত নালার জায়গাটা উদ্ধার করা না হলে চলমান প্রকল্পের নির্মিতব্য নালা আমরা খালের সাথে সংযুক্ত করতে পারবো না। আর নালাকে খালের সাথে সংযোগ করা না গেলে প্রকল্পের কোন সুফল পাওয়া যাবে না।

এ ব্যাপারে চসিকের নির্বাহি প্রকৌশলী অসীম বড়ুয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জলাবদ্ধতার কারণে গত তিনদিন ধরে সিমেন্ট ক্রসিং থেকে বিমানবন্দর সড়ক অচল হয়ে পড়েছে। তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। রুবি সিমেন্ট কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নালার জায়গা দখল করে রাখার কারণে পানি প্রবাহের পথ বন্ধ হয়ে পড়ে। সড়কের জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য মেয়রের নির্দেশে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে গত ১০ জুলাই রাত থেকে পাম্প করার উদ্যোগ নেয়া হয়। চারটি পাম্পের মাধ্যমে জমে থাকা পানি অপসারণ করা হলেও সকালের বৃষ্টিতে আবার জলজট সৃষ্টি হয়। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সেনাবাহিনীর সহায়তায় রুবি সিমেন্টের দখলকৃত নালার জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে। আগামীকাল থেকে উদ্ধারকৃত জায়গায় পাকা ড্রেন নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে জানান প্রকৌশলী অসীম বড়ুয়া।

-সিভয়েস/এসএ

উজ্জ্বল দত্ত

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়