Cvoice24.com

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি এক তৃতীয়াংশ পরীক্ষার্থী

প্রকাশিত: ১৫:৩২, ২৮ জুন ২০১৯
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি এক তৃতীয়াংশ পরীক্ষার্থী

চতুর্থ ও শেষ ধাপের প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি প্রায় এক তৃতীয়াংশ পরীক্ষার্থী। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আসতে না পারার কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। 

পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই কেন্দ্রের ফটক বন্ধ করে দেয় পুলিশ। শুক্রবার (২৮ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের মনিটরিং অফিসার নুর মোহাম্মদ জানান, পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য আবেদন করেন ৪৯ হাজার ১৮৯ জন। এর মধ্যে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ৩৬ হাজার ৬১৯ জন। বাকি ১২ হাজার ৫৭০ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি।

সরেজমিনে সকাল ১০টা ১০ মিনিটে নগরীর রেলওয়ে পাবলিক পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন পরীক্ষার্থী কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তাঁদের মধ্যে ৪ জন পরীক্ষা দিতে পারেনি বলে কান্নায় ভেঙে পড়েছে।

চন্দনাইশ থেকে আসা পরীক্ষার্থী তানিয়া সোলতানা সিভয়েসকে বলেন, আমাদের প্রবেশপত্রে সাড়ে ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ঢুকার সময় থাকলেও ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে গেইট বন্ধ করে দেয়। যার কারণে পরীক্ষার হলে আর ঢুকতে পারিনি।

জুবায়ের নামে পরীক্ষার্থী বলেন, ছোট গেইট দিয়ে প্রবেশ করতে হলে একটু সময় তো দিতে হবে। উনারা সময়ও দিচ্ছেনা আবার গেইট দিয়েও একজনের বেশি প্রবেশ করা যাচ্ছে না। তাহলে আমাদের দোষটা কোথায় ? আমরা যে এত কষ্ট করে পরীক্ষা দিতে আসলাম তার মূল্য কে দিবে ? 

পরীক্ষার্থী রূপা বলেন, আমরা যে ঢুকতে পারবো না সেটি আমাদেরকে বুঝিয়ে দিলে হয়তো সমস্যা হতো না। কিন্তু পুলিশ আমাদের উপর যেভাবে তেড়ে আসলেন মনে হলো আমরা বড় ধরণের অপরাধ করে হাজতে এসেছি। পুলিশ যে ধরনের খারাপ আচরণ করলো আমাদের সাথে আমরা তা আশা করিনি।

পুলিশ কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দায়িত্বরত পুলিশ ছিলেন সহকারী উপ-পরিদর্শক শাহাদাত (নেইমপ্লেটে লিখা ছিলো)। 

সাড়ে ১০টায় মিউনিসিপ্যাল পাবলিক স্কুলে পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে ওখানেও ৩০ থেকে ৪০ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি বলে অভিযোগ তোলেন।

পরীক্ষার্থী রুজিনা আক্তার সিভয়েসকে বলেন, সারাবছর পড়ালেখা করেছি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে পরীক্ষা দিবো বলে। কিন্তু আজকে সব মাটি হয়ে গেলো, এ দায়ভার আমারা কাকে দিবো?

লোহাগাড়া থেকে আসা রূপা নামে এক পরীক্ষার্থী বলেন, মানুষের বিবেক আজ কোথায়?  লোহাগাড়া থেকে পরীক্ষা দিতে এসেছি। ১০টা ৫ মিনিট হয়ে গেলো বলে গেইট বন্ধ করে দিবে? দায়িত্বরত পুলিশকে কত করে বুঝালাম তারা কোন কথা শোনেনি।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা সিভয়েসকে বলেন, পরীক্ষার্থীদের বলে দেয়া আছে যে পরীক্ষা শুরু হওয়ার এক ঘণ্টা পূর্বে কেন্দ্রে উপস্থিত হওয়া। তারা যদি দেরি করে আসে তাহলে তো ঢুকার কোন নিয়ম নেই। আমরা বলে দিয়েছি সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। ১০টার পর যাতে কোন পরীক্ষার্থী ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারে পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া ছিলো। আর নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে কেউ ঢুকতে বাঁধা প্রদান করেনি। যারা বলছে তারা মিথ্যা বলছে।

উল্লেখ্য, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় চট্টগ্রাম জেলায় আবেদন জমা পড়েছে ৯৮ হাজার ৯৭০টি। চাকরিপ্রত্যাশী পরীক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষার তৃতীয় ধাপে অর্ধলাখ পরীক্ষার্থী অংশ নিলেও অনুপস্থিত ছিল ১৪ হাজার ২০৪ জন। আজকের পরীক্ষা ছিলো চতুর্থ এবং শেষ ধাপ।

সিভয়েস/এএস

মনিরুল ইসলাম মুন্না

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়