Cvoice24.com


ভিন্ন রূপে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, দর্শনার্থীর ঢল

প্রকাশিত: ১৬:২৬, ৭ জুন ২০১৯
ভিন্ন রূপে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, দর্শনার্থীর ঢল

ছবি সিভয়েস

চট্টগ্রাম মহানগরীর অন্যতম প্রধান বিনোদন কেন্দ্র চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ঈদ পরবর্তী ছুটির দিনগুলোতে ব্যাপক দর্শনার্থীর সমাগম ঘটেছে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নানা বয়সী দর্শনার্থীদের ঢল নামছে এই চিড়িয়াখানায়।

শুক্রবার (৭ জুন) চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় এমন দৃশ্য দেখা যায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন পরিচালিত চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানাকে এবার ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে দেশি-বিদেশি প্রাণী ও পশুপাখি দেখতে দর্শকরা ব্যাপক ভিড় জমিয়েছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায়। ঈদের দিন থেকেই মানুষের ঢল নামছে এখানে। শিশু-কিশোর সহ সব বয়সী বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ চিড়িয়াখানার প্রাণী সম্ভার দেখে পুলকিত। সাদা বাঘ, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, জেব্রা, সিংহ, ভল্লুক, বিভিন্ন প্রজাতির হরিণ ও বানর, নতুন সংযোজিত প্রাণী অস্ট্রিচ, ইমু দর্শকদের প্রচুর আনন্দ দিচ্ছে। এর পাশাপাশি চিড়িয়াখানার পাহাড়ি পরিবেশ উপভোগ করার জন্য চিড়িয়াখানার একাংশজুড়ে ওয়াকওয়ে, বসার বেঞ্চ এর আদলে সম্প্রতি পার্ক তৈরি করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।

এদিকে, পাহাড়ের পাদদেশ ঘেঁষে প্রাণীদের চিত্র সম্বলিত সম্প্রতি নির্মিত নান্দনিক দেয়ালচিত্র দর্শকদের  ব্যাপকভাবে আকৃষ্ট করছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ঈদের দিনই প্রায় ১১ হাজার দর্শনার্থী চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ঘুরতে গেছে। ঈদের পরদিন বৃহস্পতিবার সাড়ে ১৭ হাজার দর্শনার্থী, আজ শুক্রবার প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার দর্শনার্থী চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ঘুরতে গিয়েছে।

ঈদের ছুটি উপলক্ষে সকাল ৮টা থেকে খুলে দেওয়া হয় চিড়িয়াখানার প্রবেশদ্বার। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ছিল দর্শনার্থীদের চিড়িয়াখানায় ঘোরাঘুরির নির্ধারিত সময়। প্রতিটি টিকেটের দাম ধরা হয় ৫০ টাকা।

এবার চিড়িয়াখানায় বাঘ-সিংহ, জেব্রা আর পাখির খাঁচার সামনে দর্শণার্থীদের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। অনেককে চিড়িয়াখানার ভেতরে ঘুরে ফিরে সময় কাটাতেও দেখা গেছে। চিড়িয়াখানায় ভেতরে নতুন দেওয়ালচিত্রসহ সামগ্রিক পরিবেশ দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে।

চট্টগ্রাম মহানগরী সহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে স্ব-পরিবারে  চিড়িয়াখানায় বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা জানান, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে  চট্টগ্রাম  চিড়িয়াখানা তো অনেক বদলে গেছে। পাখির অভয়ারণ্য এভিয়ারি নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি প্রাণীকে স্বযত্নে পরিচর্যা করা হচ্ছে।  চিড়িয়াখানার পরিবেশ খুবই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। চিড়িয়াখানার বর্ণিল পরিবেশে শিশুরা খুব  আনন্দ পাচ্ছে। এইরকম পরিবেশে ঘুরতে এসে ও প্রাণীদের দেখে খুব ভালো লাগছে। আমরা চাই সারা বছরই চিড়িয়াখানা এরকম পরিপাটি থাকুক।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার সীমানা প্রাচীরে বিভিন্ন ধরনের শিল্পকর্মের পাশাপাশি প্রাণীর খাঁচাগুলোকেও সাজানো হয়েছে বর্ণিলভাবে। এতে ভিন্নরূপ পেয়েছে চিড়িয়াখানা।

উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সালে চট্টগ্রাম নগরীর ফয়’স লেক এলাকায় ছয় একর জায়গা নিয়ে নির্মিত হয় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এ চিড়িয়াখানায় রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, বাঘ, সিংহ, হরিণ, কুমির, ভাল্লুকসহ প্রায় ৬৪ প্রজাতির প্রাণী। উটপাখী ও এমু মিলিয়ে এখন প্রাণী প্রজাতির সংখ্যা ৬৬ ও মোট পশু-পাখি-প্রাণী সংখ্যা ৬৩০টি।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার মনিটরিং অফিসার ও কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তৌহিদুল ইসলাম সিভয়েসকে বলেন, আমরা কঠোরভাবে চিড়িয়াখানাকে মনিটরিং করছি। ঈদ উপলক্ষে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিভিন্ন স্পটে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে এবং আমরা দর্শনার্থীদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। কেউ যদি আমাদের আরও ভালো কিছু পরামর্শ দেয়, আমরা তা পালন করার চেষ্টা করবো।

-সিভয়েস/এসএ

মনিরুল ইসলাম মুন্না

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়