Cvoice24.com


ছালামের পাঁচ অনুচরকেই ১০ কোটি টাকার প্লট!

প্রকাশিত: ১২:৩৪, ১১ এপ্রিল ২০১৯
ছালামের পাঁচ অনুচরকেই ১০ কোটি টাকার প্লট!

ফাইল ছবি

দশ বছর ধরে সিডিএ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছেন আবদুচ ছালাম। দায়িত্ব নেওয়ার পরে নগরীর অবকাঠামোগত উন্নয়নে বেশকিছু কাজ করলেও নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পের কাজে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। বিদায়ের আগে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে নিয়ম ভেঙ্গে ঘনিষ্ঠ পাঁচ অনুচরের হাতে ১০ কোটি টাকা মূল্যের প্লট বরাদ্দের। এছাড়াও ১০ বছর ধরে দায়িত্ব পালনে তার বিরুদ্ধে প্লট বরাদ্দ নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে নানা মহলের।

এ বিষয়ে একাধিক কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, সিডিএ’র প্রশাসন নিজের খেয়ালখুশি মতো চালিয়েছেন। গায়ের জোর খাটিয়ে ধারাবাহিকভাবে অনিয়ম করেছেন। এ নিয়ে কেউ কথাই বলতে পারেননি। কিছু বললেই শাস্তি। আর শাস্তি হিসেবে বদলি করা হতো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, নিজ ধারাবাহিকতায় সিডিএ’র কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য ১১০টি প্লটের মধ্যে ৪০টি প্লট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বরাদ্দ দেন। সিডিএ চেয়ারম্যানের ইচ্ছামতো কিছু প্লট বরাদ্দ দেন এবং নিজের পছন্দমতো অন্যান্য প্লটগুলো ঘনিষ্ঠদের বরাদ্দ দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সরকারদলীয় রাজনৈতিক নেতা হওয়ায় অনেকটা গায়ের জোরে ধারাবাহিকভাবে অনিয়ম করেছেন। সিডিএ চেয়ারম্যান অনন্যা আবাসিক ও কল্পলোক এলাকায় পাঁচটি প্লট বরাদ্দ দিয়েছেন। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী এ পাঁচটি প্লটের মূল্য দশ কোটি টাকা। আর এ দশ কোটি টাকার প্লট তুলে দেন চেয়ারম্যানের পাঁচ অনুচরের হাতে।

তারা হলেন- সিডিএ’র দুই বোর্ড সদস্য কেবিএম শাহজাহান ও জসিম উদ্দিন শাহ। চেয়ারম্যান ছালামের নিজস্ব ব্যক্তিগত সহকারী (পিএ) তারেক গণির মা জাকিয়া বেগম, ওয়েল গ্রুপের জনসংযোগ কর্মকর্তা সেতু বড়ুয়া এবং চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি। চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিটির নাম জানা যায় নি।

কেবিএম শাহজাহানের জন্য প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয় অনন্যা আবাসিক এলাকায়। বাকি চারজনের জন্য প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয় কল্পলোক আবাসিক এলাকায়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ওয়েল গ্রুপের জনসংযোগ কর্মকর্তা সেতু বড়ুয়া বলেন, ‘আমি সেখানে চাকরি করি। প্লট বরাদ্দ পেয়েছি এবং বরাদ্দের চিঠিও হাতে পেয়েছি। কিন্তু এসবের ব্যাপারে কখনো দফতরে তদবির চালায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিডিএ’র উপ-সচিব অমল গুহ বলেন, এ ব্যাপারে শুনেছি। কিন্তু বিস্তারিত কিছুই জানি না। চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেন তিনি এ বিষয়ে ভালো বিশ্লেষণ করতে পারবেন।

এ বিষয়ে জানতে সিডিএ’র সচিব তাহেরা ফেরদৌস বেগমের সাথে দেখা করতে গেলে নিজ দপ্তরে পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইল ফোনে যোগযোগ করতে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে জানতে সিডিএ’র চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

উল্লেখ্য, বুধবার (১০ মার্চ) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি না হওয়া পর্যন্ত নতুন নিয়োগ বন্ধ ও দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্তদের পদোন্নতি না দেয়াসহ পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্মচারীরা। এতে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, আবদুচ ছালাম সিডিএ’র চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে পদোন্নতি বন্ধ রয়েছে। বার বার আবেদনের পরও কোনো পদোন্নতি হয়নি। ১০ বছর হয়ে গেলেও চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম পদোন্নতির বিষয়ে আগ্রহ দেখাননি।

-সিভয়েস/এসএ

মিনহাজ মুহি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়