Cvoice24.com

চসিকের সাথে চুক্তি আজ
মেয়র নাছিরের হস্তক্ষেপে নগরীতে হচ্ছে প্রথম হাইটেক পার্ক 

প্রকাশিত: ০৭:১৬, ১১ মার্চ ২০১৯
মেয়র নাছিরের হস্তক্ষেপে নগরীতে হচ্ছে প্রথম হাইটেক পার্ক 

আইসিটি খাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে ‘হাইটেক পার্ক’ নির্মাণের পরিকল্পনা আছে সরকারের। তারই ধারাবাহিকতায় ৪ বছর আগে নগরীর বাকলিয়া এলাকায় হাইটেক পার্ক করার ঘোষণা দিয়েছিলেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলক। কিন্তু ভূমি জটিলতার কারণে নির্মিত হয়নি কোনো পূর্ণাঙ্গ হাইটেক পার্ক। অবশেষে জটিলতা কাটিয়ে অপেক্ষার অবসান ঘটছে। 
মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের উদ্যোগে সিটি কর্পোরেশনের জায়গার উপর নির্মিত হবে এ হাইটেক পার্ক। এ লক্ষ্যে চসিক ও বাংলাদেশ হাইটেক কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। 

আজ সকালে চসিক মিলনায়তেন তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলক ও সিটি মেয়রের উপস্থিতিতে দ্বিপাক্ষিক এ চুক্তি সম্পাদন হওয়ার কথা রয়েছে। একই দিনে চসিকর মালিকানাধীন নগরীর ব্যাংকক-সিঙ্গাপুর মার্কেটের ‘আইটি ভিলেজের’ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন মন্ত্রী। 
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে প্রধান নির্বাহী মো. সামসুদ্দোহা ও বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হোসনে আরা বেগম, এনডিসি চুক্তিতে সই করবেন। 
চসিক সূত্রে জানা গেছে, নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন চর রাঙ্গামাটিয়া মৌজার বিএফআইডিসি রোড সংলগ্ন ১১ দশমকি ৫৫ একর জমিতে এ হাইটেক পার্ক নির্মাণ করা হবে। ৪৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকার ব্যয়ে হাইটেক পার্কটি নির্মাণ করবে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ হাইটেক পাক কর্তৃপক্ষ। যেখানে ২ হাজার ১শ জন প্রশিক্ষক ও উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে। চুক্তির মেয়াদ হবে ৩০ বছর এবং শুরুর ৩ বছরের মধ্যে স্থাপনা নির্মাণ শেষ করবেন হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লভ্যাংশের বন্টন হবে সমানে-সমানে। 

তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলক ২০১৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি নগরীর এক অনুষ্ঠানে ঘোষণা দিয়েছিলেন, চট্টগ্রাম শহরের বাকলিয়ায় ৯৮ একর জায়গার ওপর দেশের প্রথম সাইবার সিটি ও রাউজানের চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পার্শ্ববর্তী ৩’শ একর জায়গার উপর হাইটেক পার্ক গড়ে তোলা হবে। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ২৬ অক্টোবর চট্টগ্রামে আরেকটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় হাইটেক পার্ক গড়ে তোলা হবে। ২০১৫ সালে ঘোষণা দিলেও চট্টগ্রামে এখনো পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কোনো হাইটেক পার্ক গড়ে উঠেনি।
জানা গেছে, বাকলিয়ায় যে জমিতে হাইটেক পার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল সেখানে বিরোধ থাকায় প্রকল্প গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের আগ্রহে হাইটেক পার্ক নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে নগরীতে। এর মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামবাসীর চার বছরের অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে। গত বছরের জুনে নগরীতে এক অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামে হাইটেক পার্ক নির্মাণ না হওয়া প্রসঙ্গে হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম বলেছিলেন, চট্টগ্রাম আইটি শিল্পের জন্য অন্যতম উপযোগী ক্ষেত্র। বাকলিয়ায় হাইটেক পার্ক করার জন্য আমরা ৯৭ একর জমি পাওয়ার কথা ছিল। ৯৭ থেকে ৪০ একর, সেখান থেকে ২০ একর এবং সর্বশেষ ১০ একর জমি চেয়েছিলাম। কিন্তু মামলা থাকায় সে জমিও আমরা পাইনি। আমাদের অনেক প্রকল্প আছে। অবশ্যই জমি দরকার। সেদিনেই মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন কালুরঘাট বিএফআইডিসি রোড সংলগ্ন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন ১১ দশমিক ৫৫ একর জমিতে হাইটেক পার্ক নির্মাণে আগ্রহ দেখান এবং অনুষ্ঠান শেষে জায়গা পরিদর্শনে যান হোসনে আরা বেগম। পরে গত ১৮ জানুয়ারি জায়গাটি পরিদর্শন করেন আইসিটি মন্ত্রী মোস্তাফা জাব্বার। মেয়রের এ আগ্রহে সম্মতি জানিয়ে সরকারের আইসিটি বিভাগের অধীন ‘হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ’ ওই জমি তাদের অনুকূলে গ্রহণ করতে চায়। ফলে গত বছরের ২৩ জুলাই এ বিষয়ে চসিকের কাছে গতকাল হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ একটি চিঠিতে, ১ হাইটেক পার্ক’ প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম শুরুর জন্য প্রস্তাবিত জমিটি হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের অনুকূলে কিভাবে হস্তান্তর হবে বা ব্যবহৃত হবে তা জানানোর অনুরোধ করা হয়। একইসঙ্গে ওই জমির পর্চা, নক্সা, স্কেচম্যাপ ও জমির তফসিল পাঠাতে বলা হয়েছিল। এর পরেই প্রয়োজনীয় কর্ম সম্পাদনের পর অবশেষে বন্দরনগরীতে হতে যাচ্ছে প্রথম হাইটেক পার্ক। 

এ বিষয়ে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা বলেছেন, আগামীকাল (সোমবার) সিটি কর্পোরেশনের মিলনায়তেন আইসিটি মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও মেয়রের উপস্থিতিতে সমঝোতা স্মারক চুক্তি সম্পাদন হবে। চুক্তির পর হাইটেক পার্ক স্থাপনে কোনো বাঁধা থাকবে না বলে জানান এ কর্মকর্তা।

সিভয়েস/এএইচ/এসএ

আব্দুল্লাহ আহাদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়