Cvoice24.com

শিমের বাম্পার ফলনেও মলিন কৃষকের মুখ

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ১০ জানুয়ারি ২০১৯
শিমের বাম্পার ফলনেও মলিন কৃষকের মুখ

ক্ষেত থেকে বিক্রির জন্য শিম তুলছেন নারীরা।

চলতি মৌসুমে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন ভালো হলেও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসানে কৃষকরা। দেরিতে চাষাবাদ শুরু করায় শিমের ন্যায্য দাম থেকে কৃষকরা বঞ্চিত হচ্ছে বলে জানান কৃষি বিভাগ।
পার্বত্য জেলা বান্দরবানে ২ যুগেরও বেশি সময় ধরে নদীর চরাঞ্চলসহ উর্বর ধানি জমিতে তামাক চাষ হয়ে আসছে। তামাক চাষ লোকসান ও ক্ষতিকারক হওয়ায় মৌসুমি সবজি চাষে ঝুঁকছেন বান্দরবানের কৃষকরা।

গত কয়েক বছর ধরে নদীর চরাঞ্চলসহ উর্বর জমিতে শিম চাষ করে আসছেন বান্দরবানের অধিকাংশ কৃষক।

শিমে ফলন ভালো এবং লাভ বেশি হওয়ায় অন্যান্য বছরের ন্যায় এ বছরও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ব্যাপকহারে শিম চাষ হয়েছে। বান্দরবান সদর উপজেলায় চলতি বছর ১৯২ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ হয়েছে। গত বছর হেক্টর প্রতি ১৮ মেট্রিকটন ফলন হলেও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় এ বছর হেক্টর প্রতি ২০ মেট্রিকটন ফলন হবে বলে আশাবাদ কৃষি বিভাগের। তবে ফলন ভালো হলেও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসান গুণতে হচ্ছে কৃষকদের।

সুয়ালক ইউনিয়নের শিম চাষী মিতালী চাকমা জানান, এ বছর শিমের ভালো ফলন হয়েছে। তবে যে পরিমাণ খরচ হয়েছে, বিক্রি করে তা উঠানো কষ্ট হয়ে যাবে। কারণ ব্যবসায়ীরা শিমের দাম দিচ্ছেন খুবই কম। কেজি প্রতি মাত্র ১০ টাকা। তাই ফলন ভালো হলেও দাম কম হওয়ায় লাভের মুখ দেখছি না।

আরেক চাষী সেলিম উদ্দীন জানান, শিমের বাজার দর কম থাকায় এবং চাষাবাদে মুজুরি বেশি হওয়ায় শিম চাষ করে এ বছর লাভবান হতে পারছেন না তারা।

অপরদিকে ব্যবসায়ীরা জানান, তারা এই শিম ১০ টাকা দরে কিনে পরিবহন করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ে যান এবং কেজি ২০ টাকার কম দামে বিক্রি করেন। শিম পরিবহন করতে গিয়ে তাদের কয়েক দফায় ট্যাক্স ও চাঁদা দিতে হয়। ফলে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে শিম সংগ্রহ করতে হয়।
তবে কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানান, শিমের ফুল আসার সময় বৃষ্টি হওয়ার কারণে ফুল ঝরে যাওয়ায় শিমের ফলন দেরিতে আসে। ফলে সব শিমের ফলন একসাথে হওয়ায় বাজার সীমের চাহিদা কমে গেছে।

এদিকে চাষাবাদে লেবারের মজুরি বেশি হওয়ার কারণে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী এখন ব্যাস্ত সময় পার করছে শিম তোলার কাজে।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক জানান, গত বছর আগাম শিমের আবাদ করায় কৃষকরা ভালো দাম পেয়েছে। এ বছর একটু দেরিতে শিমের আবাদ করায় তুলনামূলক দাম কম পাচ্ছে কৃষকরা। তবে গত বছরের তুলনায় এবছর শিমের ভালো ফলন হয়েছে। হেক্টর প্রতি প্রায় ২ মেট্রিক টন উৎপাদন বেড়েছে।

সিভয়েস/এএইচ

রিমন পালিত, বান্দরবান

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়