Cvoice24.com


‘আইকন ও শিল্পপতি’ শব্দগুলোকে সস্তা বানাবেন না: তানভীর শাহরিয়ার রিমন (ভিডিওসহ)

প্রকাশিত: ১৩:২৬, ২ নভেম্বর ২০১৮
‘আইকন ও শিল্পপতি’ শব্দগুলোকে সস্তা বানাবেন না: তানভীর শাহরিয়ার রিমন (ভিডিওসহ)

ছবি : সিভয়েস

তানভীর শাহরিয়ার রিমন। নিজ মেধা ও যোগ্যতায় একজন সফল কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব ও জনপ্রিয় পাবলিক স্পিকার হিসেবে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। সম্প্রতি তিনি মুখোমুখি হয়েছিলেন সিভয়েস’এর। দেশের তরুণ যারা নিজেকে কর্পোরেট জগতে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তাদের জন্য তিনি তুলে ধরেছেন গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা। সেই সাথে সমসাময়িক কিছু বিষয় নিয়ে ব্যক্ত করেছেন নিজস্ব কিছু ভাবনা। তারই চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সিভয়েস প্রতিবেদক হিমাদ্রী রাহা। 


সিভয়েস- নিজ মেধা ও যোগ্যতায় আপনি নিজেকে দেশের একজন সুপরিচিত কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। অনেকেই বলে থাকেন আপনি একজন কর্পোরেট আইকন। নিজেকে কিভাবে এই অবস্থানে নিয়ে এসেছেন?

তানভীর শাহরিয়ার রিমন-দেখুন প্রথমেই বলতে চাই, আমি কোন কর্পোরেট আইকন নই। আইকন অনেক বড় শব্দ। আমি এখনো ওই জায়গায় পৌঁছাতে পারিনি। আজকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে আইকন কিংবা শিল্পপতি শব্দগুলোর যথেচ্ছ অপব্যবহার হচ্ছে। তাই আমাকে যারা কর্পোরেট আইকন বা ইয়ুথ আইকন বলেন তাদের উদ্দ্যেশে বলি, আইকন বা শিল্পপতি এই শব্দগুলোকে সস্তা বানাবেন না। 

সিভয়েস- যাই হোক নিজেকে তো একটা সফল অবস্থানে নিয়ে এসেছেন। এটিকে কিভাবে মূল্যায়ণ করবেন?

তানভীর শাহরিয়ার রিমন- জীবনে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি তা হলো ইচ্ছাশক্তি। আপনি যাই করুন না কেন, আপনার ভেতরে যদি ইচ্ছাশক্তি না থাকে সে কাজে আপনি কখনো সফল হবেন না। তাই নিজের মধ্যে আগে ইচ্ছাশক্তির বীজ বপন করতে হবে। প্রতিটি মানুষই মেধা নিয়ে জন্মায়। কিন্তু সেই মেধার সাথে যদি ইচ্ছাশক্তির সমন্বয় না ঘটে তবে সফলতা অর্জন অনেক কঠিন। আমি এটা বিশ্বাস করি, আমি যতকিছু করেছি যদিও মনে করিনা আমি এখনো কিছু অর্জন করতে পেরেছি, এর সবকিছুই আমার ইচ্ছাশক্তির কারণে। তাই সফলতার জন্য ইচ্ছাশক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। স্টিভ জবস একটা কথা  বলেছেন, stay hungry & stay foolish । আমি নিজেকে বোকাই ভাবতে পছন্দ করি। তাই সবসময় জানার জন্য নিজেকে ক্ষুধার্ত রাখতে হবে।


সিভয়েস- একটা বিষয় লক্ষ্যণীয়, আমাদের দেশে শিক্ষাগত যোগ্যতার সাথে পেশার সমন্বয় নেই। যেমন কেউ অনার্স মাস্টার্স শেষ করলো এক সাবজেক্টে। কিন্তু পেশাগত দিক থেকে দেখা গেলো তার ট্র্যাক ভিন্ন। এই বৈষম্যটা কেন?

তানভীর শাহরিয়ার রিমন- দেখুন আমি পড়ালেখা করেছি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। কিন্তু যখন আমি অনার্স লাইফের মাঝামাঝি আসি, তখন মনে হয় এই ট্র্যাক আমার না। পরে যখন অনার্স শেষ করে এমবিএ কমপ্লিট করে রিয়েল এস্টেট কোম্পানিতে চাকরি শুরু করলাম তখন বুঝলাম, হ্যাঁ এই ট্র্যাকটাই আমার। আমি এই পেশাকে মন থেকে নিয়েছি। যার  ফলে আমি খুবই স্বল্প সময়ের মধ্যেই মার্কেটিংয়ের হেড হিসেবে পদোন্নতি পাই একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে। আমি যখন রিয়েল এস্টেট পেশায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছিলাম তখন বিভিন্ন ব্যাংক থেকে আমার কাছে অফার আসে এমনকি বিভিন্ন মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানি থেকেও অফার আসে। কিন্তু আমার লক্ষ্য স্থির ছিলো। তাই আমি অন্য পেশায় নিজেকে ডাইভার্ট করিনি। আমার মনে হয় এই স্থির লক্ষ্যই আমাকে আজকে এই অবস্থায় আসতে সহযোগিতা করেছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো নিজের মধ্যে থাকা স্বপ্নকে লালন করা উচিত। আরোপিত বা চাপিয়ে দেওয়া বিষয় নিয়ে বেশিদূর আগানো যায়না। যার ফলশ্রুতিতে শিক্ষার সাথে  পেশার একটি দৃশ্যমান বৈপরীত্য তৈরি হয়েছে। 

সিভয়েস- এই শিক্ষার সাথে পেশার একটি বৈপরীত্য। এ থেকে পরিত্রাণের উপায় কি?

তানভীর শাহরিয়ার রিমন- এটার জন্য আমাদের অভিভাবকরাই দায়ী। আমাদের অভিভাবকরা মনে করেন, আমার সন্তানকে ডাক্তারই হতে হবে, ইঞ্জিনিয়ারই হতে হবে কিংবা বিসিএস ক্যাডারই হতে হবে। আমাদের এই ধ্যান ধারণা থেকে বের হতে হবে। এই চাপিয়ে দেওয়া বিষয়ের কারণেই দেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী তাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেন না। আমাদের অভিভাবকদের উচিত সন্তান কি বিষয়ে আগ্রহী তা জানা। সে যে বিষয়ে নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে চায় সে বিষয়টাকে প্রধান্য দিতে হবে। তবে হয়তো শিক্ষার সাথে পেশার যে বৈপরীত্য তা কমে আসবে।

সিভয়েস- সবশেষ প্রশ্ন, দেশের তরুণদের জন্য আপনার কি দিকনির্দেশনা থাকবে?

তানভীর শাহরিয়ার রিমন- দেখুন আমি আগেও বলেছি, ইচ্ছাশক্তিই আপনাকে সফলতার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে। আর নিজেকে প্রতিযোগিতামূলক পেশার জন্য তৈরি রাখতে হবে। নিজের বায়োডাটা তৈরি করতে পারাও কিন্তু একটা আর্ট। এই বিষয়ে জোর দিতে হবে। মোট কথা সময়ের সাথে নিজে আপডেট রাখতে হবে। আর একটা বিষয়, আমাদের লক্ষ্য স্থির রাখতে হবে। আমার মতে, ইচ্ছাশক্তি আর স্থির লক্ষ্য সফলতার একমাত্র নিয়ামক।

সিভয়েস- আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের সময় দেয়ার জন্য।

তানভীর শাহরিয়ার রিমন- আপনাকেও ধন্যবাদ। সেই সাথে সিভয়েস’এর সকল পাঠকদেরও ধন্যবাদ।

সিভয়েস/এসএ/এমডিকে
 

হিমাদ্রী রাহা

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়