নারী স্বাধীনতা এবং ধর্ষণের এলিভেটর
এটি ছিলো একটা আর্ট, একটা শিল্প। যেখানে ছিলো স্বপ্নীল একটা অনুভুতি ! স্বর্গীয় একটি ব্যাপার। ছিলো রহস্যঘেরা একটা জিনিস। যার জন্য একটা সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো দুজনকেই। ছিলনা মোটেও সহজলভ্য। অনুভূতিটা ছিলো ১০০% পিওর।
কথাগুলো বলছিলেন; সে সময়ের মডার্ন অতিবৃদ্ধ এক দাদি, যার বয়স ৭০ এর কাছাকাছি। তার মতে তখনকার প্রেম বলতে শুধু অনুভব-অনুভুতি, ভালোলাগা, চোখা-চোখী আর উঁকি-ঢুকি। এখনকার মত মাখামাখি নয়।
টেলিফোনের অপর প্রান্তে কথা, ডেটিংয়ে অন্তত ৫০ হাত দূর থাকা আর চোখে চোখ রাখা অন্যরকম একটা ব্যাপার স্যাপার। আর বিয়ের পরে সে অনুভূতির বাস্তবতার ঘরে ফেরায় কি সে সুখ। কি সে আনন্দ!
তার সাথে কথা বলা প্রতিবেশীর অনেক ছেলের বৌ, নাতি বৌ, পুতি বৌ ও পাড়ার অনেক মেয়েরাও আজ সেই অনুভূতি, আনন্দ ও উপভোগ খুঁজে পায়না। তাদের কাছে এটা যেন ঝালমুড়ির মত একটা ব্যাপার। কাগজের ঠোঙ্গায় নিয়ে হাটতে হাটতে খাওয়া আর খাওয়া শেষ হলে ঠোঙ্গাটাকে ছুড়ে ফেলা!
অথচ সেদিনের প্রেমে ছিলনা যৌনতা আর খুল্লাম খোলো অবস্থা। ছিলনা কোন মাখা মাখি। ছিল বিশ্বাসের একটা চতুরবন্ধন আর পবিত্রতা।
আসলেই বাস্তবতা কিন্তু এমনই; এখন যত্র-তত্র প্যাকেট প্যাকেট যৌনতা কিনতে পাওয়া যায় হর হামেশাই। আর লিটনের ফ্লাটগুলোতেতো পাওয়া যায় বিনে পয়সায়। যেখানে ভালোবাসার কোন স্পর্শ নাই, নাই কোনো স্বর্গীয় অনুভুতি ও গ্রান্টিহীন উপভোগ্যতা!
এখন যেন সাময়িক সুখের জন্য মাতাল এক উম্মাদনা! ঘোর শেষ, তো সব শেষ। এবার সব দোষ ঐ খাঙ্কির ছেলের!
আচ্ছা, আপনার হৃদয়ের অন্তর চক্ষু ৩৬০ ডিগ্রী ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে উপলব্ধি করে দেখেন তো, দোষ কি আপনার একটুও ছিলো না?
আহারে, মায়ের জাতী! একবারও কি ভেবে দেখলে নাঃ-
প্রেম করেছো নিজের ইচ্ছায়। হোটেলে গেছো নিজের ইচ্ছায়। প্রেমিকের সাথে যখন তখন ফোনে সেক্স করেছ তাও লুকিয়ে লুকিয়ে, সেটাওতো নিজের ইচ্ছায়। কেওতো তোমাকে শিখিয়ে দেয়নি। বরং তোমার কাছ থেকে ফোন কেড়ে নিতে চাইলে তুমি আত্মহত্যার হুমকি দিছো। ডেটে গেছো পরিবার সাথে মিথ্যে বলে। শরীরের জায়গায় জায়গায় হাত দিতে দিয়েছো, সেও তো তুমি নিজেই সুখ নিছো, না কি ঐ খাঙ্কির ছেলেটা শুধু একাই সুখ নিছে?
তোমার চাকে মধু জমেছে বলে তুমি অবৈধভাবে যাকে ইচ্ছা তাকে দিলে? বুঝলে না। এটা বৈধ, না অবৈধ। খাওয়া শেষে কেও কি আর বসে থাকে?
সে তো তোমার মধু টেস্টের নামে তোমার চরিত্রটাও টেস্ট করে গেলো।
বুঝলে না, করলে ফেল!
এখন বলছো, পৃথিবীর সব ছেলেরাই খারাপ!
হায়রে, তুমি যে খারাপ ছেলেটাকে বেছে নিয়েছিলে, তা তো বলো না! তোমাদের তো এসব লুচু ছেলেদেরই পছন্দ, যারা লুতু পুতু কথা বলে মেয়ে পটাতে পারে তাদেরকেই তোমরা বেছে নেও। কখনো কি বুঝার বা জানার চেস্টা করেছ, একজন ছেলের পারসোনালিটি বলতে কি বুঝায়?
যে ছেলে তোমার পিছে পিছে ঘুরে, তোমাকে ইম্প্রেস করছে কিসের আশায়? তোমার কি মোটেও সুখের সুড়সুড়ি লাগেনি সেসময়? কোন ভরসায় তুমি তারে সব দিলে? একবারও ভাবলে না, তোমার মতো সে অন্য মেয়ের পিছে ঘুরবে না? তোমার স্বাদ পাওয়ার পর সে হাঁটবে না?
তুমিতো এমন শিকারের একমাত্র পাত্রী নও, তোমার সামনে ঘটছে এমন নানা ঘটনা।
কিন্তু এসবের পরও তুমি যে নিজেই তার হাতে তোমার সম্ভ্রম তুলে দিয়ে তাকেই গালি দিচ্ছো। একবারও কি ভাবলেনা ওই ছেলে নিশ্চিত বাইরে বলে বেড়াবে “ওই মেয়েটা ভালো না আমিও করেছি”।
এই কথা তো আর মিথ্যা না। তাকে এই কথা বলার সুযোগতো তুমিই দিলে, না কি? এরপরও পুরুষ জাতিকে বলছো খাঙ্কির ছেলে।
এবার তোমার বাবা-মা এখন যার সাথে বিয়ে দিবে, তাকেই বেছে নিয়ে চুপ থাকবে। তাইতো না কি?
আচ্ছা, তোমার এই ব্যবহৃত শরীরকে, সতীত্বের মিথ্যা মোড়কে পেচিয়ে, তাকে উপহার দিতে তোমার কি একটুও লজ্জা করবে না?
আর কবে বুঝবে, বাবা-মা যা করে সন্তানের ভালোর জন্যই করে। তবে আগে কেন এমন করতে গেলে? বাবা-মার উপর কি মোটেও ভরসা ছিল না তোমার? নাকি প্রেমের টা তোমার বেশি ছিল?
তুমি বুঝবা কবে, তুমি দুই পয়সার হ্যের, তুমি পণ্য। এখন ভাবতো, বাজারের ঐ পণ্যগুলো যারা তাদের শরীর বিকিয়ে দিতে পুরুষদেরকেই ক্রেতা হিসেবে ডাকে; লাগবে না কি? আছে। কচি কচি আছে! আসেন এদিকে আসেন। মাত্র ৩০ টাকা।
হায়রে নারী! তোদের স্থান ওদের বুকে আর তাদের স্থান তোদের পায়ে।
তবে কেন চুলকানির জন্য আজ ওদের কাছে পণ্য!
এখন তার থুথু খেতে কেমন লাগছে?
যেখানে তোমার বুকভরা ভালোবাসা পাওয়ার কথা, সেখানে করে দিচ্ছ তুমি ধর্ষণের এলিভেটর স্বচল।
সিভয়েস/এএইচ
আরিফুল ইসলাম