Cvoice24.com

চট্টগ্রামে আজ, মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪

সময় ঘন্টা মিনিট সেকেন্ড


বোয়ালখালীতে পরিত্যক্ত চিকিৎসালয়কে আইসোলেশন সেন্টার করার দাবি

প্রকাশিত: ১৪:৪০, ৬ জুন ২০২০
বোয়ালখালীতে পরিত্যক্ত চিকিৎসালয়কে আইসোলেশন সেন্টার করার দাবি

বোয়ালখালী উপজেলার আহল্লা করলডেঙ্গা ইউনিয়নের দাশের দিঘীর পাড় সংলগ্ন পরিত্যক্ত ‘করিম গুলশান আরা দাতব্য চিকিৎসালয়’টি অস্থায়ী আইসোলেশন সেন্টার করার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।  

সম্প্রতি চট্টগ্রাম নগরীর পাশাপাশি করোনাভাইরাসের ভয়াবহ বিস্তার লাভ করেছে বিভিন্ন উপজেলায়ও। বোয়ালখালীতেও দিন দিন সংক্রমণের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই হিসেবে বোয়ালখালী ‍উপজেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সুচিকিৎসা প্রদানের লক্ষ্যে ‘করিম গুলশান আরা দাতব্য চিকিৎসালয়’ হাসপাতালকে আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা চান বোয়ালখালীবাসী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ‘করিম গুলশান আরা দাতব্য চিকিৎসালয়’ হাসপাতালটি ১৯৮৫ সালে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সময় রোগীদের থাকার ব্যবস্থা ছিল এবং সেবা প্রদান করা হতো। কিন্তু এখন সেখানে আগের মতো রোগীদের থাকার ব্যবস্থা নেই। তবে বোয়ালখালীবাসীর সুবিধার্থে একজন ডাক্তারের মাধ্যমে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন কর্তৃপক্ষ। আরো জানা যায়, আইসােলেশন সেন্টারের জন্য সেখানে ৭০ থেকে ৮০টি’রও বেশি বেড স্থাপন করা যাবে।  

বোয়ালখালীতে দিন দিন বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বর্তমানে বোয়ালখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদের সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তবে উপজেলায় যখন শনাক্তের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলছে। তখন বোয়ালখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হিমশিম খেতে হচ্ছে দায়িত্বরতদের। সেই কথা বিবেচনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কামাল হাসান রকি (নিশ্চুপ রকি) নামে এক ছেলে তার ওয়ালে এ বিষয়ে একটি পোষ্ট করে এবং তা ভাইরাল হয়ে যায়। এ পোষ্ট দেখে রীতিমতো সাড়া দিয়েছেন ওই এলাকার জনসাধারণ, বিত্তবান, জনপ্রতিনিধি, চেয়ারম্যান এবং উপজেলা প্রশাসন।

এ বিষয়ে কথা হয় কামাল হাসান রকির সাথে। তিনি সিভয়েসকে বলেন, ফেইসবুকে আমি যে পোষ্টটি দিয়েছি সেটা মূলত বোয়ালখালী বাসীর উপকারের জন্য দিয়েছি। আহলা কড়লডেঙ্গা ইউনিয়নের দাশের দিঘীর পাড় সংলগ্ন তিনলতা বিশিষ্ট ‌‘করিম গুলশান আরা দাতব্য চিকিত্সালয়’ নামক হাসপাতালটি অনেক বছর যাবৎ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এ করোনা পরিস্থিতিতে থেমে নেই বোয়ালখালীতে আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা। ক্রমান্বয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে বোয়ালখালী স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সের দায়িত্বরতরাও হিমশিম খাচ্ছে। বোয়ালখালীর মানুষরা যাতে এই করোনা পরিস্থিতিতে চিকিৎসা সেবা কমতি না পায় এবং করোনা রোগীরা অন্তত আইসোলেশনের জন্য এখানে আসতে পারে। সেইজন্য আমরা চাই বোয়ালখালীবাসীর সুবিধার্থে এ পরিত্যক্ত হাসপাতালটি আইসোলেশন সেন্টারের জন্য প্রস্তুত করা হোক।

ওই এলাকার বাসিন্দা প্রবাসী ব্যাংক কর্মকর্তা ইসমাইল জসীম সিভয়েসকে বলেন, দাতব্য চিকিৎসালয়টি নির্মানের পর চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম শুরু করলেও তা বন্ধ বহু বছর ধরে। বর্তমানে এটি পরিত্যক্ত। কেন বা কি কারণে এটি বন্ধ হলো সে বিষয়ে কারো জানা নেই। বর্তমানে করোনাভাইরাস শহর জেলা উপজেলায় হানা দিয়েছে। আমাদের বোয়ালখালী উপজেলাতে করোনায় সংক্রমিত হলে চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই পরিত্যক্ত দাতব্য চিকিৎসালয়টি আইসোলেশন করার দাবি সময়োপযোগী। 

এ বিষয়ে সম্মতি দিয়ে প্রবাসী এমদাদুল ইসলাম তৈহিদ সিভয়েসকে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে বোয়ালখালীবাসীর পাশাপাশি আমিও চায় এ পরিত্যক্ত হাসপাতালটি সংস্কার করতে। যাতে কারো করোনা পজিটিভ আসলে কেউ বাড়িতে আইসোলেশনে না থেকে বাড়ির কারো সংস্পর্শে না এসে আলাদাভাবে এ হাসপাতালের আইসোলেশনে থাকতে পারে। এ ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা লাগলে আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করবো।

এ বিষয়ে কথা হয় ওই এলাকার চেয়ারম্যান হামিদুল হক মান্নানের সাথে। তিনি সিভয়েসকে বলেন, এটা খুব ভালো উদ্যোগ। এ ব্যাপারে বোয়ালখালীবাসী আমাকে জানিয়েছে। আমি এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)’র সাথে কথা বলবো। এ ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করবেন বলে তিনি জানান।

কথা হয় বোয়ালখালী এসিল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর সাথে। তিনি বলেন, দিন দিন যখন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তখন আমরা এমন একটা জায়গা খুঁজছিলাম। যেখানে করোনা রোগী নিজ বাড়িতে না থেকে অন্তত আইসোলেশন সেন্টারে থাকবে। ইউএনও ম্যাডামের সাথে কথা বলে আমরা সেই স্থান পরিদর্শন করতে যাবো। তারপর সিদ্ধান্ত নিবো।

এ বিষয়ে কথা হয় বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আছিয়া খাতুনের সাথে। তিনি সিভয়েসকে বলেন, আইসোলেশন সেন্টার করতে গেলেও সেখানে অনেক কিছুর দরকার আছে। ওয়াসরুম, রান্নার ব্যবস্থা ইত্যাদি আরো অনেক কিছু। আমরা সেখানে গিয়ে তারপর এ সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। তবে যদি আইসোলেশন সেন্টার প্রস্তুত করা যায় 
তাহলে বোয়ালখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরতদেরও হিমশিম খেতে হবে না এবং বোয়ালখালীবাসীদেরও সেবা থেকে বঞ্চিত হতে হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

-সিভয়েস/এমএম
 

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়