Cvoice24.com

চট্টগ্রামে আজ, বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪

সময় ঘন্টা মিনিট সেকেন্ড


চার বছরে মিতু হত্যা মামলা : পিবিআই-ও বলছে 'আন্ডার ইনভেস্টিগেশন'

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ৫ জুন ২০২০
চার বছরে মিতু হত্যা মামলা : পিবিআই-ও বলছে 'আন্ডার ইনভেস্টিগেশন'

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যামামলার তদন্তকাজ চার বছরেও আলোর মুখ দেখেনি। সিএমপি গত বছর যখন বলছিল 'তদন্ত শেষ পর্যায়' 'যে কোনও মুহূর্তে দেওয়া হবে' চার্জশিট। এসব বলে বলে বছর পার করতে না করতেই জানুয়ারি থেকে চাঞ্চল্যকর মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব গেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন'র ( পিবিআই) হাতে। আর আদালতের নির্দেশে তদন্ত যখন পিবিআই'র কাছে গেল তখন 'স্বস্তির' নিশ্বাস নিল সিএমপি। তবে সিএমপির মত যথারীতি পিবিআইও বলছে 'আন্ডার ইনভেস্টিগেশন'!

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ের প্রকাশ্য সড়কে গুলিতে খুন হন মাহমুদা আক্তার মিতু। ওই দিনই স্বামী তৎকালীন পুলিশ সদর দপ্তরে কর্মরত এসপি বাবুল আক্তার বাদি হয়ে পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যামামলা দায়ের করেন। অনেকবার আলোচিত এ মামলার চার্জশিট দেওয়ার গুঞ্জন শোনা গেলেও কোন অগ্রগতি নেই। মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন যেমন দ্রুত এ মামলার চার্জশিট দেওয়ার দাবি করছেন, তেমনি মামলার বাদি মিতুর স্বামী বাবুল আক্তারও চান দ্রুত চার্জশিট দেওয়া হোক।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মাহাবুবর রহমান সিভয়েসকে বলেন, 'মামলাটি আদালতের আদেশে এখন তদন্ত করছে পিবিআই। আমাদের হাতে আর কিছু নেই।' অথচ গত বছরই এমন দিনে তিনি বলেছিলেন, 'তদন্তের কাজ একেবারেই শেষ পর্যায়ে, কিছুটা যাচাইবাছাই শেষে চার্জশিট দেওয়া হবে।' 

মামলার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির এডিসি কামরুজ্জামানও সিভয়েসকে বলছেন, 'মামলাটিতো এখন কোর্টের অর্ডারে পিবিআই দেখছে। আমার কাজও শেষ পর্যায়ে ছিল। তদন্তভার যেহেতু পিবিআইয়ের কাছে গেছে তাই আমার এই বিষয়ে কথা বলতেও ইচ্ছে করছে না।' 

জানতে চাইলে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের প্রধান ও মিতু হত্যা মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন সিভেসকে বলেন, 'গত জানুয়ারিতে কোর্টের অর্ডারে তদন্তভার পেয়ছি। মামলাটি আন্ডার ইনভেস্টিগেশন।'

অগ্রগতি কতটুকু এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'মামলার তদন্তে সব সময় অগ্রগতিই থাকে। তদন্তের অগ্রগতি নেই তা আপনাদের ভাষা, আমাদের ভাষায় অগ্রগতি আছে।'

জানুয়ারি মাস থেকে তদন্ত করেও দেওয়া যায়নি চার্জশীট। গ্রেপ্তার করা যায়নি 'পলাতক' মুসা ও কালুকে। তাহলে তদন্তের অগ্রগতিটাই কি? এমন প্রশ্নের উত্তরে পিবিআই চট্টগ্রাম প্রধান বলেন, 'আমরা পলাতক এক আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। আর তদন্ততো একটা চলমান প্রক্রিয়া।'

পলাতক আসামি একজন না দুজন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'আমিতো জানি একজনই পলাতক। দুজন নাতো।'

তদন্ত কর্মকর্তা যখন পলাতক হিসেবে একজনের কথায়-ই জোর দিয়ে বলছেন তখনই প্রশ্ন জাগে তাহলে কি মুসার পরিবার থেকে যে অভিযোগ করা হয়েছিল মুসাকে ওই সময়েই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গুঞ্জন আছে তাকে ওই সময়েই নীরবে ক্রস ফায়ার দেওয়া হয়েছিল। সেটাই কি তাহলে সত্যি হতে যাচ্ছ?  

পুলিশের এই তিন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে, তদন্ত শেষ হলেও শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশেরই অপেক্ষায় থমকে আছে।এছাড়া সিএমপির দুজন উপ পুলিশ কমিশনার এ প্রতিবেদককে আনঅফিসিয়াল আলাপে জানিয়েছেন, চাঞ্চল্যকর এই মামলাটির দায় কেউ নিতে চান না। একবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সাবেক আইজিপি তা স্থগিত রাখতে বলেন। ঘটনার সময়ে আইজিপি থাকা শহীদুল ইসলামও কালক্ষেপণের পক্ষে ছিলেন যাতে বির্তক না উঠে৷ এরপরের আইজিপি জাবেদ পাঠোয়ারিও চার্জশীটের বিষয়ে আগ্রহ দেখাননি। পরে তিনিও অবসরে যান। মিতু হত্যা মামলার সময় র্যাবের প্রধানের দায়িত্বে থাকা বেনজির আহমেদ এখন পুলিশ প্রধান। তাই তার মেয়াদে এই চার্জশিট দেওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।     

নগর পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এ মামলার তদন্ত প্রায় শেষ হয়েছে। প্রতিবেদনও প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশ পেলেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হবে। এমন প্রস্তুতিই ছিল ডিবির। অন্যদিকে তদন্তে গ্রেপ্তার অন্য আসামিদের জবানবন্দিতে নির্দেশদাতা হিসেবে যে মুছা শিকদারের নাম ওঠে এসেছে তাকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি ডিবি ও পিবিআই। এখনো অধরা এ খুনের মাস্টারমাইন্ড। তবে এসবের উত্তর জানতে চার্জশিট পর্যন্ত অপেক্ষায় রাখছে তদন্ত সংস্থ।  

যদিও ২০১৯ বছরের মার্চ মাসে আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সিএমপিতে সংবর্ধনা নিতে এসে বিদায়ী আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী বলেছিলেন, মিতু হত্যা মামলার চার্জশিট দ্রুত জমা দেওয়ার জন্য তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই নির্দেশও বাস্তবায়ন হয়নি অথচ তিনিই আইজিপির পদ থেকে বিদায় নিয়েছেন। এদিকে মেয়ে হত্যামামলার চার্জশিট জমা না হওয়ায় সুষ্ঠু তদন্ত নিয়ে সন্দিহান মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন। অন্যদিকে মিতুর স্বামী ও সাবেক এসপি বাবুল আক্তারও চান দ্রুত সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে চার্জশীট দেওয়া হোক।

ফ্ল্যাশব্যাক ৫ জুন ২০১৬

চট্টগ্রামে জঙ্গি দমন অভিযানের জন্য আলোচিত বাবুল আক্তার সিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের এডিসি থেকে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদর দফতরে যোগ দেন বাবুল আক্তার। এর কয়েক দিনের মাথায় ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রামের ওআর নিজাম রোডের বাসা থেকে কয়েকশ গজ দূরে নগরীর জিইসি মোড়ে খুন হন বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু। মোটরসাইকেলে করে আসা কয়েকজন সেখানে ছেলের সামনে তাকে প্রথমে ছুরিকাঘাত করে। পরে গুলি করে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন বাবুল আক্তার।

এরপর চট্টগ্রামে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততাও মিতু হত্যাকাণ্ডের সম্ভাব্য কারণ হতে পারে ধরে নিয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তবে অল্পদিনেই সে ধারণা থেকে সরে আসেন তদন্তকারীরা। হত্যাকাণ্ড নিয়ে নানা গুঞ্জনের মধ্যে ওই বছরে ২৪ জুন রাতে ঢাকার বনশ্রীতে শ্বশুরের বাসা থেকে বাবুল আক্তারকে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে নিয়ে প্রায় ১৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখন তার কাছ থেকে জোর করে পদত্যাগপত্র নেওয়ার খবর ছড়ালেও সে বিষয়ে কেউ মুখ খুলছিলেন না।

তার ২০ দিন পর ২০১৬ সালের ১৪ আগস্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, বাবুলের অব্যাহতির আবেদন তার কাছে রয়েছে। আরও ২২ দিন পর ৬ সেপ্টেম্বর বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নানা আলোচনা সমালোচনার মধ্যে চুপ থাকা বাবুল আক্তার হত্যাকাণ্ডের দুই মাস পর ফেসবুকে স্ত্রীকে নিয়ে আবেগঘন একটি স্ট্যাটাস দিয়ে আবার আলোচনায় আসেন। মিতু হত্যার পর থেকে বাবুল ঢাকায় শ্বশুরবাড়িতে থাকলেও নতুন চাকরিতে (বেসরকারি) যোগ দেয়ার পর দুই সন্তান নিয়ে ঢাকার মগবাজারে আলাদা বাসা নিয়ে থাকতে শুরু করেন। 

মামলায় উঠে আসে যাদের নাম 

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের দায়ের করা মিতু হত্যা মামলায় ঘটনার পর সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও এ চার বছরে অধরা মূল অভিযুক্ত নিদের্শদাতা মুছা। গ্রেপ্তার অন্য আসামিরা হলেন, আনোয়ার, ওয়াসিম, এহতেশামুল হক ভোলা, সাইদুল ইসলাম সিকদার ওরফে সাকু, শাহজাহান, আবু নাসের গুন্নু ও শাহজামান ওরফে রবিন। এর মধ্যে আবু নাসের গুন্নু ও শাহজামান ওরফে রবিনের এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি বলে সাবেক সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন।

অপর চারজনের মধ্যে সাইদুল ইসলাম ওরফে সাকুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, হত্যায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি তিনিই সরবরাহ করেছেন তার বড় ভাই মুসা সিকদার ওরফে আবু মুসাকে। মুসা এ মোটরসাইকেল চালিয়েই মিতু হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দেয়। অপর তিনজনের মধ্যে এহতেশামুল হক ভোলা মিতু হত্যাকাণ্ডে অস্ত্র সরবরাহকারী। শাহজাহান, ওয়াসিম ও আনোয়ার হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ছিল। এ ছাড়া মিতু হত্যায় সন্দেহভাজনদের মধ্যে রাশেদ ও নবী নামে দু’জন রাঙ্গুনিয়ায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।

বর্তমানে পলাতক আছে মুসা সিকদার ও কালু নামে দু’জন। ওই সময়ে পলাতক মুসাকে ধরতে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে সিএমপি। তবে এরপরও সে ধরা পড়েনি। গ্রেফতারদের মধ্যে ওয়াসিম ও আনোয়ার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মুসার পরিকল্পনায় তারা মিতুকে খুন করেছে বলে জবানবন্দিতে দাবি করে।

দ্রুত চার্জশিট চেয়েছেন মিতুর পিতা

মিতুর মা শাহেদা মোশাররফ ও বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আমরা শুরু থেকে বলে আসছি যে বা যারা মিতুকে হত্যা করে থাকুক না কেন তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হোক। কিন্তু পুলিশ এখনও আমাদের জানাতে পারেনি কার নির্দেশে মিতুকে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি বের করে আনতে এতো সময় লাগার কথা নয়। কোনো এক রহস্যজনক কারণে পুলিশ নির্দেশদাতাকে শনাক্ত করতে পারেনি। চার্জশিটও দিচ্ছে না। আমরা দ্রুত তদন্ত শেষ করে হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। তারা বিভিন্ন সময় এ খুনের পিছনে মিতুর স্বামী বাবুল আক্তারের সম্পৃক্তারও অভিযোগ তুলেছেন।

শনাক্ত হয়নি পরিকল্পনাকারী

এদিকে মিতুর স্বজনদের দাবি, মূল আসামিকে বাঁচাতে দীর্ঘায়িত করা হচ্ছে এ মামলার তদন্ত। তারা এ হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে মিতুর স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকেই ইঙ্গিত করছেন। যদিও তদন্তকারী সংস্থা কোনও সময়ে এ বিষয় মুখ খোলেনি। সিএমপির ডিবিতে বাবুল আক্তারের অধীনে একই টিম কাজ করেছিলেন। যদিও বা বর্তমানে মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছে।  

হত্যাকাণ্ডের পর বাবুলের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন জামাতার পক্ষে কথা বললেও পরে তার মেয়ের হত্যাকাণ্ডের পেছনে জামাতার ‘পরকীয়া সম্পর্কের’ সন্দেহের ইঙ্গিত করে তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করে তিনি এসব দাবি জানানোর পাশাপাশি ওই সময় সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন। বাবুল আক্তারের সঙ্গে উন্নয়নকর্মী গায়ত্রী সিং ও রাজধানীর বনানীর বিনতে বসির বর্ণি নামে দুই নারীর সম্পর্কের কথা বলেছিলেন তিনি।

তবে সে সময় উল্টো শ্বশুরপক্ষ তাকে ঘায়েল করতে চাচ্ছেন অভিযোগ করে সঠিক তদন্তেই হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হবে বলে দাবি করেছিলেন বাবুল আক্তার।

দ্রুত চাজশিট চান বাদি বাবুল আক্তার

সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার তার স্ত্রী মিতু হত্যা মামলার বাদি। তিনি ঘটনার পর দিন নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার দায়েরের এক মাসের মধ্যেই এ হত্যা রহস্যের উদঘাটন করে সিএমপি। কিন্তু তাকে ঢাকা গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ, চাকরি থেকে অব্যাহতি নেওয়া, শ্বশুর শ্বাশুড়ির পক্ষ থেকে অভিযোগের তীর তার দিকে থাকায় এ হত্যাকাণ্ডে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্তা আছে কিনা তা নিয়ে নানা গুঞ্জন তৈরি হয়। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা বরাবরই বিষয়টি নিয়ে চুপ থাকলেও স্বয়ং বাবুল আক্তারই এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে জানিয়েছেন, তিনিও চান দ্রুত এ মামলার চার্জশিট দেওয়া হোক। উদঘাটিত হোক খুনের রহস্য। তার স্ত্রী মিতুর হত্যার বিচার হোক।

ডে-কেয়ার সেন্টারে সন্তানরা

ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দেওয়ার সময় খুন হন বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। সেই সময়ে সঙ্গে ছিলেন ছেলে মাহির আক্তার। আর বাসায় ছিলেন মেয়ে নিখাদ আকতার তাবাসুম। মা খুনের পর এ দুই সন্তানকে নিয়ে কয়েক মাস মিতুর বাপের বাসা ঢাকার বনশ্রী থাকলেও সম্পর্কের তিক্ততায় বাবুল আক্তার শ্বশুরের বাসা ছাড়েন। পরে তিনি ঢাকার মগবাজারের আদ-দ্বীন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) পদে চাকরি নেন। তারপর থেকে সেখানেই আলাদা বাসায় দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন। তবে প্রথম বছর বাসা থেকে সন্তানদের পড়ালেখা করালেও গত ২০১৮ সাল থেকে একটি ডে কেয়ার সেন্টারে ভর্তি করান মাহির ও নিখাদকে। সকাল ৭টায় বাসা থেকে বেসরকারি একটি ডে কেয়ার সেন্টারে দু সন্তানকে দিয়ে অফিসে যান বাবুল আক্তার। পরে সন্ধ্যার পর তাদের আবার বাসায় নিয়ে আসেন তিনি। এরমধ্যে মাহির পড়ে পঞ্চম শ্রেণীতে আর নিখাদ পড়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে।

-সিভয়েস/এডি/এসসি
 

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়