Cvoice24.com

রেকি করতে গিয়ে ধরা দুই ভাড়াটে খুনি
আ.লীগ নেতাকে খুন করতে ভাড়াটে খুনি পাঠালেন চেয়ারম্যান!

প্রকাশিত: ১৪:২৯, ২ জুন ২০২০
আ.লীগ নেতাকে খুন করতে ভাড়াটে খুনি পাঠালেন চেয়ারম্যান!

সাতকানিয়ায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকে হত্যা করতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়েছে দুই ভাড়াটে খুনি। মঙ্গলবার (২ জুন) ভোররাতে হত্যার উদ্দেশ্যে বাড়ির এলাকা রেকি করতে গিয়ে ধরা পড়ে তারা। ধরা পরার পর দুই ভাড়াটে খুনি বাজালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ চৌধুরী ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দীন সজিবকে হত্যার পরিকল্পনার কথা ফাঁস করে। তাদের ভাষ্যমতে পরিকল্পনাকারী হিসেবে নাম উঠে এসেছে বাজালিয়া ইউপি’র বর্তমান চেয়ারম্যান তাপস দত্ত ও জামায়াত ক্যাডার সদ্য কারামুক্ত রাশেদের নাম।

পরে তাদের পুলিশের কাছে তুলে দেয় স্থানীয় জনতা। ধরা পড়া দুই ভাড়া করা খুনি হলো উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড়ের আব্দুল গনির ছেলে হাবিবুর রহমান (২৮) ও ছদাহা ইউনিয়নের উত্তর ছদাহা এলাকার মোহাম্মদ সিরাজের পুত্র তরিকুল ইসলাম জিসান (২৫)। তাদের স্বীকারোক্তিমূলক একটি ভিডিও ফুটেজও ইতিমধ্যে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ভিডিওটিতে আটককৃতরা চেয়ারম্যান তাপস দত্তের পরিকল্পনায় রাশেদের সঙ্গী হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা শহীদুল্লাহ চৌধুরী ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সজিবের গতিবিধি অনুসরণ করার কাজ করছিল বলে স্বীকারোক্তি দেয়।

সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শফিউল কবীর বলেন, বাজালিয়া থেকে ২ যুবককে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশের কাছে সোর্পদ করেছে। ২ জনকেই আমরা সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গিয়েছিলাম। তার মধ্যে একজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা যায়, সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক তাপস কান্তি দত্ত দলীয় মনোনয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের উপেক্ষা ও  জামায়াত-শিবির ক্যাডারদের নানাভাবে সহযোগিতা করার কারণে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সাথে দূরত্বের সৃষ্টি হয়। যার কারণে বাজালিয়া ইউনিয়নে ক্ষমতাসীন দল দু’গ্রপে বিভক্ত হয়ে যায়।  এ নিয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। 

যুবলীগ নেতা প্রশান্ত কুমার যিশু অভিযোগ করে বলেন, আমি চট্টগ্রামে রাজনীতি করি, স্থানীয় রাজনীতির সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। আমার মেয়ে গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় আমি গ্রামে অবস্থান করছি। এর মধ্যেই চেয়ারম্যান তাপসের নেতৃত্বে জামায়াত শিবিরের ক্যাডার রাশেদ, মাসুদরা আমার ঘরে হামলা করে মালামাল ভাংচুর ও লুট করেছে। 

বাজালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ চৌধুরী বলেন, তাপস চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই বাজালিয়াতে জামাত-শিবিরের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে চলেছে। আওয়ামী লীগ নির্মূলের জন্য তাপস জামাতের ক্যাডারদের ব্যবহার করছে। আমরা এ বিষয়টি বার বার সংগঠনের উর্ধ্বতন নেতাদের অভিযোগ করে আসছি। সর্বশেষ তিনি আমাকে ও  আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ সজিবকে হত্যার পরিকল্পনা করতেও দ্বিধা করেননি ।
 
এ বিষয়ে সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বাজালিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের এ ধরনের কর্মকান্ডের বিষয়ে আমাদের অবহিত করেছেন। আমরা এ বিষয়ে উদ্যেগ নিচ্ছি। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন সজিবকে হত্যার পরিকল্পনা করে কিলার পাঠানো এটি অত্যান্ত নিন্দনীয় ও গর্হিত কাজ। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নিব। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান তাপস কান্তি দত্ত বলেন, আমি কোন জামায়াত শিবিরকে প্রশ্রয় দিচ্ছিনা। সজিবকে হত্যার পরিকল্পনার বিষয়ে আমি কোন কিছু জানিনা। আমি এলাকার মানুষের জন্য কাজ করি। এটি আমাদের অনেকে সহ্য করতে পারছেন না। তারা নানাভাবে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল বুনছেন। এ ঘটনাটিও তাদের ষড়যন্ত্রের অংশ বলে আমার ধারণা। 
 

সাতকানিয়া প্রতিনিধি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়