Cvoice24.com


নামেই ভার্চুয়াল কোর্ট, আইনজীবীদের যেতে হচ্ছে আদালতে

প্রকাশিত: ১৩:১৩, ১৪ মে ২০২০
নামেই ভার্চুয়াল কোর্ট, আইনজীবীদের যেতে হচ্ছে আদালতে

ভার্চুয়াল কোর্টের বেড়াজালে পড়ে হিমশিম খাচ্ছেন চট্টগ্রামের আইনজীবীরা। করোনা দুর্যোগ চলাকালে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্ব-শরীরে কোর্টে হাজির হচ্ছেন। আইনজীবীরা বলছেন, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠানর জন্য এবং কারাবন্দি আাসামিদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই তারা আদালতে স্ব-শরীরে হাজির হয়ে মক্কেলের জামিনের জন্য ম্যানুয়ালি সব ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে আদালতের কাছে ভার্চুয়ালি আবেদন করছেন।

আইনজীবীরা বলছেন, ভার্চুয়াল কোর্ট নামেমাত্র ভার্চুয়াল। তাদের কোর্টে যেতেই হচ্ছে। মামলার কপি সংগ্রহ থেকে শুরু করে ওকালতনামা, বেইলবণ্ড, দরখাস্ত লেখা সব কাজের জন্যই আইনজীবীদের স্বশরীরে যেতে হচ্ছে আদালত ভবনে।

লঘু মামলায় কারাবন্দি আসামিদের মুক্তি দিতে সম্প্রতি ডিজিটাল ব্যবস্থায় ভার্চুয়াল কোর্ট চালু করে সুপ্রীম কোর্ট। এর আগে সপ্তাহে দু'দিন স্বাভাবিক কোর্ট চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও আইনজীবীদের প্রতিবাদের মুখে পড়ে তা বন্ধ হয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা যায়, আদালতপাড়ায় আইনজীবীদের বড় একটি সংখ্যা উপস্থিত আছেন। ওকালতনামা সংগ্রহ করতে আইনজীবী সমিতি অফিসে যাচ্ছেন। মামলার কপি সংগ্রহ করতে নতুন আদালত ভবনের জিআরও শাখায় যাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট কোর্ট থেকে বেইলবন্ডও সংগ্রহ করছেন।

আইনজীবী আসাদুজ্জামান খান জানান, তার মক্কেল বিদেশে থেকেও নারী নির্যাতনের মামলা খেয়েছেন। গত তিন মাস ধরে সে কারাগারে বন্দি। তার জামিনের জন্য তার স্বজনরা নিয়মিত বিরক্ত করে যাচ্ছেন। যার কারণে ম্যানুয়ালি সব ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে ভার্চুয়াল কোর্টে জামিন আবেদন করেছেন।

তিনি বলেন, এখানে নিজেদের স্বার্থ চিন্তা করলে চলবে না।  কথায় চিন্তা করতে হবে। একমাত্র তাদের কথা চিন্তা করেই করোনা সংক্রমনের ঝুকি মাথায় নিয়ে কাজ করছেন।

আইনজীবী টি আর খান বলেন, বিভিন্ন মামলায় তার প্রায় ৭-৮ জন আসামি কারাগারে রয়েছেন। তাদের স্বজনরা নিয়মিতভাবে জামিন প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলছেন। যার কারণে স্ব-শরীরে আদালতে হাজির হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলো থেকে ডকুমেন্ট সংগ্রহ করছেন।

তিনি বলেন, ভার্চুয়াল কোর্টকে ভার্চুয়াল বলা মুশকিল। এটা কখোনা ভার্চুয়াল হতে পারে না। এখানে আইনজীবীকে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়েই কোর্ট করতে হচ্ছে। ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহ করতে চেম্বার করতে হচ্ছে। বাসায় বসে মক্কেলের জামিন শুনানি করা অসম্ভব।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সেক্রেটারি এএইচএম মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন সিভয়েসকে বলেন, জামিন আবেদন করতে আইনজীবীদের ওকালতনামা সংগ্রহ থেকে শুরু করে অসংখ্য ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে হয়। যার কারণে ঝুঁকি থাকা সত্বেও আইনজীবীরা কোর্টে আসছেন। এখানে কিছুই করার নেই। সবার স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি নিজ নিজ উদ্যোগে দেখভাল করতে হবে। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীদের ত্যাগ শিকার করতে হবে।

জিয়াউদ্দিন বলেন, ভার্চুয়াল কোর্ট নিয়ে প্রচুর প্রশিক্ষণের প্রয়োজন ছিল। যেটা নেয়া হয়নি। প্রশিক্ষণের অভাবে আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টদের ভার্চুয়াল কোর্ট ব্যবস্থা বুঝতে কষ্ট হচ্ছে। ধীরে ধীরে মনে হচ্ছে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। আইনজীবী সমিতি সবকিছু অবজার্ভ করছেন। আইনজীবীদের প্রয়োজনে যা করা প্রয়োজন তা করবেন।

উল্লেখ্য, দেশে করোনা প্রাদুর্ভাব মাথাচাড়া দিলে নিম্ন আদালতসহ সব রকম আদালত বন্ধ করে দেয় সরকার। এতে লঘু মামলায় কারাবন্দি থাকা আাসামিরা দুশ্চিন্তায় পড়েন। মূলত  লঘু মামলায় কারাবন্দি থাকা আসামিদের মুক্তি দিতে সম্প্রতি ভার্চুয়াল কোর্ট চালু করা হয়।


সিভয়েস /এসএইচ

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়