Cvoice24.com


করোনায় নগর থেকে উধাও অপরাধকর্ম

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২৮ মার্চ ২০২০
করোনায় নগর থেকে উধাও অপরাধকর্ম

পরিবেশ যখন প্রতিকূল অবস্থায় থাকে তখন সৃষ্টি হয় অপরাধকর্ম। বিশেষ করে সামাজিক, ব্যবসায়িক এবং রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় এর সূচনা হয়। আবার যখন কোনো একটি দুর্যোগকে কেন্দ্র করে অনুকূল পরিবেশের সৃষ্টি হয় তখন অপরাধকর্ম কমে যেতে শুরু করে। কভিড-১৯ নামের করোনা ভাইরাসের কারণে বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরীতে ঠিক এমনটিই দেখা যাচ্ছে। এখানে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া বড় কোনো ঘটনায় ঘটছে না। বলা যায়, করোনা প্রভাবে নগরীর ১৬ থানা এলাকা থেকে উধাও হয়ে গেছে অপরাধকর্ম।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা ভাইরাসের ফলে জনমনে ভীতি এবং আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। সবার মধ্যে কাজ করছে মৃত্যু ভয়। নিজে কিভাবে বাঁচতে পারে সে নিয়ে সবাই ব্যস্ত। যার ফলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমে গেছে। 

সংশ্লিষ্টরা আরও বলছেন, জন্মগতভাবে কেউ অপরাধী নয়। সমাজই তাকে অপরাধী করে তুলে। ক্ষমতা-ঘনিষ্টতার বহিঃপ্রকাশ, রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক নেতারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য সমাজে অপরাধ জিইয়ে রাখেন। তবে সামাজিক বন্ধন ও জাতীয় ঐক্য যখন একীভূত হয় তখন কেউ আর অপরাধ জিইয়ে রাখতে পারে না। তখন সমাজ থেকে অপরাধ উধাও হয় যায়। এটা ভাল একটা দিক। এটাকে ধরে রাখা প্রয়োজন। সে জন্য সরকারের উচিত হবে, মানুষের প্রতি আন্তরিকতা বজায় রাখা।

অপরাধ বিজ্ঞানের ভাষায়, অপরাধের তিনটি স্তর রয়েছে। সেগুলো হলো- (১) সন্ত্রাস বা টেররিজম (২) হোয়াইট কালার ক্রাইম, যেখানে অপরাধী ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে (৩) সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধ বা অরগ্যানাইজড ক্রাইম। এর মধ্যে বর্তমানে সন্ত্রাস কার্যক্রম নেই বল্লেও চলে। কিছুটা হোয়াইট কালার ক্রাইম ও সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। এই কিছুটা অপরাধের জন্য ব্যবসায়ী সমাজই দায়ী। যারা মিয়ম বহির্ভূতভাবে দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি ঘটাচ্ছেন।

অপরাধ বিজ্ঞানের ভাষায় বলা যায়, যখন পরিবেশ প্রতিকূলে চলে যায় তখনই অপরাধের পরিমান বাড়তে থাকে। আবার যখন পরিবেশ অনুকূলে আসে তখন স্বাভাবিকভাবেই অপরাধকর্ম কমে যায়।

সুশাসনের জন্য নাগরিক চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক আকতার কবির সিভয়েসকে বলেন, অপরাধকর্ম একটি রোগের মতো। সময় সময় এটির চরিত্র পাল্টে যায়। করোনা ভাইরাসের আগে দেখা যায়, সমাজে অপরাধ বেড়েই চলছে। কোনভাবেই তা কমছিলো না। কিন্তু বর্তমানে করোনা প্রভাবে অপরাধ নিম্নগামী। কোনোভাবেই তা বাড়ছে না। এটা পজিটিভ একটি দিক। সরকারের দায়িত্বশীল কর্তাদের উচিত হবে এই ব্যবস্থা ধরে রাখা।

নগর পুলিশ কমিশনার মাহবুবুর রহমান সিভয়েসকে বলেন, অপরাধকর্ম কমাতে করোনা ভাইরাসের অবশ্যই প্রভাব রয়েছে। তবে কেউ বা কোনো গোষ্ঠী যদি এর মাঝেও নগরে কোনো ধরণের অপরাধকর্ম পরিচালনা করতে চাই নিশ্চিত সফল হবে না। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ রয়েছে। অবশ্যই নেতিবাচক সবকিছু কঠোরভাবে দমন করা হবে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম নগরীতে প্রায় প্রতিদিনই চুুরি, ছিনতাই, শারিরিক নির্যাতন, ধর্ষণ, পুলিশি হয়রানি, ঘুষ লেনদেন ও নিয়মবহির্ভূত দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির মতো ঘটনা ঘটে থাকে। এছাড়াও কয়েকদিন পরপর ঘটে থাকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। মূলত রাজনৈতিক, সামাজিক এবং ব্যবসায়িক স্বার্থরক্ষার জন্যই চট্টগ্রামসহ সারা দেশে এসব ঘটে থাকে।

-সিভয়েস/এসএইচ/এমএম

সরকার হাবীব

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়