Cvoice24.com


‘শ্রমজীবী নারীদের নিজের সময় বলতে কিছু নেই’

প্রকাশিত: ১১:৩০, ৮ মার্চ ২০২০
‘শ্রমজীবী নারীদের নিজের সময় বলতে কিছু নেই’

আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীর অধিকার রক্ষায় ১৯৭৫ সালে জাতিসংঘ ৮ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। নারী অধিকার রক্ষায় এই দিবসটি ঘিরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা কর্মসুচীসহ সরকারি বন্ধ থাকলেও আমাদের দেশে তার কোনটি নেই। জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার লড়াইয়ে শ্রমজীবী নারীদের অনেক বাধাবিপত্তি অতিক্রম করতে হয় প্রতিনিয়ত, পাশাপাশি বর্তমান সমাজের মানুষের কাছে নারীদের চাকরি করাটা অনেকটাই বেমানান। কিন্তু বর্তমানে প্রতিটি সেক্টরে নারীরাই এগিয়ে। বর্তমান সরকার নারীবান্ধব সরকার। নারীদের ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রী বদ্ধপরিকর। নারীর ক্ষমতায়ন থেকে শুরু করে নারীদের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের জন্য বর্তমান সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। কিন্তু কি চায় নারীরা? নারী দিবস উপলক্ষে সরকারের কাছে নারীদের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে সিভয়েস২৪ডটকমের কাছে চট্টগ্রাম ইপিজেডের ৭নং সেক্টরের ইউ-জিন এললিডি লিমিডেট এর প্রোডাশন টীম লিডার সাবানা আক্তার বলেন,  " সমাজে উপহারের নামে অদৃশ্য যৌতুক প্রথা বিলুপ্ত হউক। বিয়ে যেন কনের পিতার জন্য অভিশাপ না হয়"।

পরিবারে উপার্জনকারী না থাকায় সংসার চালাতে লেখাপড়া বাদ দিয়ে কাজের সন্ধানে পাঁচ বছর আগের কাজের সন্ধানে কুমিল্লা চাঁদপুর মতলবের দিঘীপাড়া গ্রাম থেকে চট্টগ্রামে আসেন শাবানা আক্তার। পরিবারের চাকা স্বচ্ছল রাখতে চট্টগ্রামে এসে উপার্জনের প্রথম হাতেকড়ি গার্মেন্টস দিয়ে শুরু। চলতে চলতে ৫ বোনের মধ্যে সবার ছোট সাবানা আক্তার আজ চট্টগ্রাম ইপিজেডের ৭নং সেক্টরের ইউ-জিন এললিডি লিমিডেট এর প্রোডাশন টিম লিডার।

অতীত থেকে বর্তমান জীবন কেমন চলছে জানতে চাইলে শাবানা আক্তার সিভয়েসকে বলেন, একজন গার্মেন্টস নারীর নিজের জন্য সময় বলতে কিছু নেই। দিন শুরু হয় ভোর ৫টার মোবাইল ফোনের এর্লামে। ঘুম থেকে উঠেই হাত মুখ ধোঁয়ার আগেই চুলায় ভাত বসাতে হয়। তারপর আবার বাথরুমের সিরিয়াল এর জন্য অপেক্ষা। কোনো রকমে রান্না শেষ করে অফিসের উদ্দেশ্যে পথ চলা। সকাল ৬.৩০ থেকে বিকাল ৪.৩০ পর্যন্ত অফিস শেষ করে বাসায় আসা। বিকেলে অফিস থেকে বের হয়ে বাসা পর্যন্ত অভাবনীয় কৃত্রিম পরিবহন সঙ্কট নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। তারমধ্যে আবার বখাটের উত্তপাৎ। বাজার শেষ করে বাসায় ফিরে আবার রাতের রান্নার যুদ্ধ। নিজের স্বাদআল্লাদ বলতে কিছু নেই। সপ্তাহে একদিন বন্ধ পেলেও শিপমেন্ট থাকলে তাও বাতিল হয়ে যায়। তিনি বলেন, বড়বোন কাজ করে সংসার চালাতো। বয়সে বেড়ে ‍ওঠার সাথে সাথে সববোনের বিয়ে হয় যায়। তারপর নিজের লেখাপড়া বাদ দিয়ে সংসার চালাতে সংগ্রামী হয়ে উঠি। মাস শেষে বেতনের ৬ হাজার টাকা বৃদ্ধ বাবা- মাকে পাঠাই, ২ হাজার টাকা রুম ভাড়া, ৪ হাজার টাকায় খাওয়া আর বিয়ের জন্য ১ হাজার টাকা সঞ্চয়; এভাবেই চলে যাচ্ছে জীবনের চাকা।

ইউ-জিন-এলিডি ফ্যাক্টরির মানব সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা রিপন বড়ুয়া সিভয়েসকে বলেন, সরকার এবং বেপজার নির্দেশনা মোতাবেক নারীকর্মজীবী শ্রমিকদের জন্য  সকালের নাস্তা, দুপুরের ভাত, বিকালে টিফিন, স্পেশান বোনাস দেয়া হয়। এছাড়া  উপস্থিত বোনাস, বছরে দুইটা উৎসব বোনাস, যাতায়াত ব্যবস্থা প্রদান করা হয়। একই সাথে নারী শ্রমিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করার লক্ষে প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা করা হয়।

-সিভয়েস/এসসি

তাপস বড়ুয়া

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়