Cvoice24.com


রেজাউল করিমের বর্ণাঢ্য অতীত

প্রকাশিত: ০৭:১৫, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০
রেজাউল করিমের বর্ণাঢ্য অতীত

ফাইল ছবি

১৯৫৩ সালের ৩১ মে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার অন্তর্গত ৬নং পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডের ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন জমিদার বংশ বহরদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ক্ষমতাসীন দলের নব্য মনোনিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। ২০০৬-২০১৪ সালে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে ২০১৪ সালে থেকে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

তৎকালীন ইংরেজ শাসিত ভারত এবং পাকিস্তান আমলে চট্টগ্রামের একজন খ্যাতিমান আইনজীবী ও চট্টগ্রামে বৃটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত বিলুপ্ত কমরেড ব্যাংকের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তাঁর প্রয়াত দাদা ছালেহ আহমদ চৌধুরী। পিতা প্রয়াত হারুন-অর-রশীদ চৌধুরী ছিলেন একজন উচ্চ পদস্থ সরকারী কর্মকর্তা। পরিবারের বড় ভাই অধ্যাপক সুলতানুল আলম চৌধুরী ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯৫৪ সালের যুক্ত ফ্রন্ট নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়াও তার পূর্ব পুরুষেরা চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ২৩টি মসজিদ প্রতিষ্ঠাসহ অসংখ্য জনকল্যাণমূলক কাজ করেছেন।

নগরের বহরদার হাটে ১৮২০ সালে ‍নিজস্ব জমির উপর প্রতিষ্ঠিত পূর্ব ষোলশহর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হাতেখড়ি ধরেন রেজাউল করিম। ক্রমান্বয়ে ১৯৬২ সালে ৫ম শ্রেণী এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রাম সরকারী মুসলিম হাই স্কুল থেকে এস.এস.সি পাশ করেন। চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এইচ.এস.সি. এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর অব আর্টস ডিগ্রী অর্জন করেন এবং তারপর আইন বিষয়ে পড়াশোনার জন্যে ভর্তি হন। কিন্তু জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডের পর হত্যার প্রতিবাদে সামরিক দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিরোধ লড়াইয়ে নেমে ফাইনাল পরিক্ষা দিতে পারেননি।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর ১৯৭৬ সালে সামরিক শাসনকে উপেক্ষা করে “সূর্যপথ” পত্রিকা প্রকাশ করেন রেজাউল করিম। মাসিক অযুত কন্ঠ (১৯৭২) ছাড়াও পাক্ষিক পত্রিকা “বারুদ” এর সম্পাদক তিনি। চট্টগ্রামের উন্নয়নের দাবীতে সর্বপ্রথম সংগঠন চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ ও চট্টগ্রামের দুঃখ নামে খ্যাত চাক্তাই খাল খনন সংগ্রাম কমিটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ছিলেন ১৯৮৩-১৯৯৪ সাল পর্যন্ত। প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান সামশুন নাহার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও সামশুন নাহার টেকনিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের। দায়িত্ব পালন করছেন বদর শাহী জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির। চান্দগাঁও এন এম সি উচ্চ বিদ্যালয় ও পূর্ব ষোলশহর ওয়াছিয়া আহমদিয়া মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি তিনি।

১৯৬৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগে যেগ দেন তিনি। পরে ১৯৬৯-১৯৭০ সালে সাংগঠনিক সম্পাদক চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগ, ১৯৭০-১৯৭১ সালে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগ, ১৯৭২-১৯৭৬ সালে সভাপতি চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগ, ১৯৭০ সালে বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলা ছাত্রলীগ কার্য্যকরী কমিটির সদস্য, ১৯৭২-১৯৭৩ সালে দপ্তর সম্পাদক চট্টগ্রাম জেলা ছাত্রলীগ, ১৯৭৩-১৯৭৫ সালে সাংগঠনিক সম্পাদক চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগ, ১৯৭৬-১৯৭৮ সালে সাধারণ সম্পাদক চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগ, ১৯৭৮-১৯৭৯ সালে আহ্বায়ক চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগ, ১৯৮০ সালে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের কার্য্যকরী কমিটির সদস্য, ১৯৯২ চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের কার্য্যকরী কমিটির সদস্য ও ১৯৯৭-২০০৬ সালে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৯১-১৯৯২ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিজয় মেলা পরিষদের ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। চট্টগ্রাম বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব ছিলেন ২০১১সালে এবং ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন ২০১৪ সালে।

ব্যক্তিগত জীবনে স্ত্রী, দুই কন্যা এবং এক পুত্রে জনক এম রেজাউল করিম চৌধুরী। স্ত্রী- সেলিনা আক্তার, মেয়ে- তানজিনা শারমিন নিপুন (শিক্ষক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও বর্তমানে সরকারি বৃত্তি নিয়ে পি.এইচ.ডি ডিগ্রী অর্জনের জন্যে বিদেশে পড়াশোনা করছেন)। দ্বিতীয় কন্যা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতোকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেছেন এবং ছোটো ছেলে ইমরান রেজা চৌধুরী কেমিক্যাল প্রকৌশল বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছেন।

রজাউল করিমের প্রকাশিত বইগুলোর মেধ্যে রয়েছে, জামায়াত শিবিরের হিংস্রতা ও ধর্মীয় রাজনীতি (১৯৯৩), কালো টাকা নির্ভর রুগ্ন রাজনীতি থেকে মুক্ত হতে হবে (২০১৪), ছাত্রলীগ ষাটের দশকে চট্টগ্রাম (২০১৬) এবং স্বদেশের রাজনীতি ও ঘরের শত্র বিভীষন (২০১৯)।

-সিভয়েস/এমএম/এসসি

সিভয়েস ডেস্ক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়