Cvoice24.com


কে হচ্ছে চসিক নির্বাচনে বিএনপি’র প্রার্থী?

প্রকাশিত: ১৪:৫৬, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০
কে হচ্ছে চসিক নির্বাচনে বিএনপি’র প্রার্থী?

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র প্রার্থী কে হচ্ছেন তা নিয়ে চলছে চট্টগ্রামের মানুষের আলাপচারিতা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র প্রার্থী কে হচ্ছেন তা নিয়ে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যেও কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। 

গত ১১ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে এক সভায় বিএনপি’র পক্ষে চসিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার ঘোষণা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আগামী রোববার ১৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। সরকারী দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই বর্তমান মেয়রসহ দলীয় মনোয়নয় ফরম নিয়েছেন ১৫ জন প্রার্থী। মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা আরো বাড়তেও পারে। তবে অন্যতম বড় দল বিএনপি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে এখনও পর্যন্ত দলীয় মনোনয় ফরম দেয়া শুরু করেনি। তবে নির্বাচনকে ঘিরে তোড়জোড় শুরু হয়েছে বিএনপি নেতাদের মধ্যে। 

নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য এরই মধ্যে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন নগর বিএনপি’র সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, সাবেক মেয়র মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের পুত্র বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার মীর হেলাল, চট্টগ্রাম মহানগরের সাবেক যুগ্ম সম্পাদ এরশাদ উল্লাহ ও নগর বিএনপির সহ-সভাপতি সাবেক কাউন্সিলার নিয়াজ মোহাম্মদ খান।

বিএনপির একটি সূত্র জানায়, বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন কোতোয়ালী-বাকলিয়া আসন থেকে, নগর বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান চান্দগাঁও-বোয়ালখালী সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচন করেছেন। যার কারণে সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হিসেবে বেশি শোনা যাচ্ছে। এছাড়াও নগর বিএনপি’র কমিটি ঘোষণা করার সময় এক প্রকার আপোষ করেন শাহাদাত-বক্কর। সভাপতি সংসদ নির্বাচন করলে সাধারণ সম্পাদক মেয়র নির্বাচন করবেন। সেই হিসাবে নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে নগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর এগিয়ে রয়েছেন। 

বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশী নগর বিএনপি সহ-সভাপতি সাবেক কাউন্সিলার নিয়াজ মোহাম্মদ খান জানান, দীর্ঘদিন যাবত বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত। বিএনপি করার কারণে জেল-জুলুম নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে। দল আমাকে মূল্যায়ন করবে আশা করি। সাবেক চসিকের তিনবারের কাউন্সিলর ও সিডিএ’র বোর্ড মেম্বার হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সে হিসেবে নগরীর জলবদ্ধতাসহ চট্টগ্রাম নগরীকে সাজানোর পূর্বের অভিজ্ঞতাও রয়েছে। 

বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ব্যরিষ্টার মীর হেলাল জানান, বিএনপি’র প্রতি জনসমর্থন রয়েছে প্রচুর। সাম্প্রতিকালের ভোটের পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়। তবে দলের হাই কমান্ড যাকেই মনোনয়ন দেবেন আমরা সবাই তারপক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো। 

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর জানান, নির্বাচন করার সকল রাজনৈতিক নেতার স্বপ্ন থাকে। আমারও সেই স্বপ্ন আছে। বিগত সংসদ নির্বাচনে নগর বিএনপি’র সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্বাচনে অংশ নেন। আমি এখনো কোন নির্বাচনে অংশ নেইনি।

তিনি আরো বলেন, স্কুল জীবনে ছাত্র রাজনীতি করে এনায়েত বাজার ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের পদ নিয়ে রাজনৈতিক জীবনের শুরু হয়। এ নগরের অলিগলি মানুষজন সবাই আমাকে চেনেন, কাছে টেনে নিচ্ছেন। নির্বাচনে যদি দল আমাকে মনোনয় দেন। তাহলে আমাকে পরিচিত করে দিতে হবে না। কারণ দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের মানুষের স্বার্থে দেশের স্বার্থে বিএনপি’র স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছি। তাই দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে আমি নির্বাচন করব। গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছিলেন নগর বিএনপি’র তৎকালিন সাধারণ সম্পাদক ডা.শাহাদাত হোসেন। কিন্তু সেই নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পান মনজুর আলম মনজু। যার কারণে বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাকলিয়া-কোতোয়ালী আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন পান।

নির্বাচন বিষয়ে জানতে চাইলে নগর বিএনপি’র সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন জানান, যে কোন নেতা নির্বাচন করার আগ্রহ দেখাতে পারে, তাতে সমস্যা নাই। দল যোগ্য ও জনপ্রিয়তা আছে এমন কাউকে মনোনয়ন দিবে। দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে। দল যাকে মনোনয়ন দিবে তিনিই নির্বাচন করবেন। 

উল্লেখ্য, চসিক নির্বাচনে ২০১০ সালে বিএনপি’র প্রার্থী ছিলেন আওয়ামী লীগ থেকে আসা মনজুর আলম মঞ্জু। সেই সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও সিটির মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীকে লক্ষাধিক ভোটে হারিয়ে জয়ী হন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মনজুর আলম। ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে গত নির্বাচনে মনজুর আলম বিএনপি’র প্রার্থী হলেও শেষ পর্যন্ত ভোট চলাকালে বেলা ১১টা না পেরোতেই সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বয়কট করে দল থেকে সরে দাঁড়ান মনজুর আলম। সেই নির্বাচনে বিএনপি’র প্রার্থী মনজুর আলম মঞ্জুকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দীন।

-সিভয়েস/এমআই/এমএম

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়