Cvoice24.com


৩৩ নং ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ড: প্রার্থীদের বিদ্বেষ এবং ক্ষোভের ফুলজুড়ি!

প্রকাশিত: ১০:১৯, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০
৩৩ নং ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ড:  প্রার্থীদের বিদ্বেষ এবং ক্ষোভের ফুলজুড়ি!

ছবি : সিভয়েস

তৎকালিন চট্টগ্রামের শাসককর্তা ছিলেন গৌড়ের সুলতান হোসেনশাহ। ১৬শ শতকের প্রথম দিকে চট্টগ্রামে পর্তুগিজ ব্যবসায়িদের অনুপ্রবেশ ঘটে। পর্তুগিজরা এ-অঞ্চলে "ফিরিঙ্গি" নামে পরিচিত ছিলো। ১৫৩৭ সালের দিকে শের শাহের আক্রমণে ভীত হয়ে সুলতান গিয়াসউদ্দিন মাহমুদ শাহ সামরিক সাহায্যের বিনিময়ে পর্তুগিজদের চট্টগ্রামে বাণিজ্য কুঠি এবং চট্টগ্রাম বন্দরের শুল্ক আদায়ের অধিকার প্রদান করেন। ফলে পর্তুগিজরা দেয়াঙ্গ বাণিজ্য কুঠি এবং গির্জা নির্মাণ করার পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দরে শুল্ক সংগ্রহ কেন্দ্র এবং পণ্যসামগ্রীর আড়ত স্থাপন করেন। পরবর্তীকালে এলাকাটি ফিরিঙ্গিদের নামানুসারে ‘‘ফিরিঙ্গি বাজার’’ নামে পরিচিতি লাভ করে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মধ্যাংশে ফিরিঙ্গি বাজার ওয়ার্ডের অবস্থান।

এই ওয়ার্ডের সিটি কপোরেশন নির্বাচনের সম্ভব্য কাউন্সিলর প্রার্থী, বর্তমান কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিল্পব, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, আক্তার খান, মোহাম্মদ ফারুক।

মোট ভোটার সংখ্যা মোট ১৯৭০৭ তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০০৪২ ,মহিলা ভোটার ৯৬৬৫।

এই ওয়ার্ড কে দুর্নীতি মুক্ত, সন্ত্রাস মুক্ত, নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ সমন্বয়ভিত্তিক অবকাঠামো উন্নয়নের অঙ্গীকার করেছেন প্রার্থীরা। তবে প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছে পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষ এবং ক্ষোভের ফুলজুড়ি।

পূর্বে ৩৪নং পাথরঘাটা ওয়ার্ড, উত্তরে ৩২নং আন্দরকিল্লা ওয়ার্ড, পশ্চিমে ৩১নং আলকরণ ওয়ার্ড এবং দক্ষিণে কর্ণফুলি নদী ও কর্ণফুলি উপজেলার চর পাথরঘাটা ইউনিয়ন অবস্থিত। এ ওয়ার্ডে দেড় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস হলেও ভোটারের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার।

গত নির্বাচনে দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়েছে দাবি করে
আওয়ামী লীগ সমর্থিত বর্তমান কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিল্পব সিভয়েসকে বলেন, গত নির্বাচনের আগে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম সেগুলো বাস্তবায়নে কাজ করছি। অনেক উন্নয়ন কাজ বর্তমানে চলমান। সেগুলো বাস্তবায়ন ও সুন্দর একটি ওয়ার্ড গঠনে আবার প্রার্থী হতে চাই। একটি মডেল ওয়ার্ড হিসেবে আখ্যায়িত করে বিপ্লব বলেন, আমি আন্তরিকতার সাথে নাগরিকদের শতভাগ সেবা দেয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। রাস্তাঘাট উন্নয়ন সহ এ ওয়ার্ডের হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নের জন্য মহিলাদের মাঝে নিজ অর্থায়নে সেলাই মেশিন বিতরণ করছি। জাকির হোসেন হোমিওমেডিকেল কলেজ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি। আগামীতে নির্বাচিত হলে বেকার মুক্ত সমাজ গঠনে কারিগরি শিক্ষা এবং মাদকমুক্ত সমাজ ঘটনে কাজ করব।

তিনি বলেন, ওয়ার্ডে উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের পরিকল্পনা লিখিত আকারে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে পাঠিয়েছি। এলাকায় আধুনিক স্যুয়ারেজ ব্যবস্থাসহ নতুন নতুন রাস্তাঘাট নির্মাণে কাজ করব। আবারও নির্বাচিত হলে পরিকল্পনার কাজগুলোসহ ওয়ার্ডে চলমান উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখব।

বংশাল রোডের বাসিন্দা নুরুল আনোয়ার বলেন, রাস্তার উপর যত্রতত্র ভাবে আবর্জনা ফেলার কারণে যান চলাচল ও মানুষের চলাফেরা বিঘ্নিত হচ্ছে। পরিবেশ এবং মানুষেরা ক্ষতি হচ্ছে, বর্তমান কাউন্সিলর কে অভিযোগ করলেও, প্রতিশ্রুতেই সীমাবদ্ধ থাকে। আমরা প্রতিশ্রুতিতে সীমাবদ্ধ না থেকে প্রকৃত সেবক কে কাউন্সিলর হিসেবে দেখতে চাই।

আওয়ামী লীগ সমর্থিত মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সম্ভব্য কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, এই ওয়ার্ডে এখনও নগরভিত্তিক নাগরিক সেবা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। এই এলাকায় আগে কখনো পানি উঠেনি কিন্তু সঠিক তদারকির অভাবে এখন জলাবদ্ধতা দীর্ঘ সময় ধরে থাকে। এছাড়া নালা নর্দামা আর্বজনার কারনে জলাবদ্ধতা এবং মশা উপদ্রব রয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ইতিমধ্যে ওয়ার্ডে নতুন কিছু রাস্তাঘাট নির্মাণ হলেও এখনও সমন্বয়ভিত্তিক পরিকল্পিত উন্নয়ন হয়নি। নির্বাচিত হলে নাগরিক সেবা এবং অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করবেন করবেন বলে জানান।

৩৩নং ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আক্তার খান বলেন, আমি দলবল নির্বিশেষে সকল কে নিয়ে কাজ করব । জনগণের প্রত্যাশা পূরণের জন্য এখন পরিবর্তন চাই জনগণ।‘ ওয়ার্ডের মূল সমস্যা হচ্ছে মাদক। সবাই মিলে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। পাশাপাশি পরিকল্পিতভাবে রাস্তাঘাট সংস্কার, উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, পরিচ্ছন্ন সমাজ ও আধুনিক নাগরিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন ওয়ার্ড গড়ার লক্ষ্যে কাজ করব।

ফিরিঙ্গীবাজারের ব্যবসায়ী সাফিউল্লাহ বলেন, এলাকার উন্নয়নের জন্য দোভাষী ভাইয়ের বিকল্প হিসেবে একজন শিষ্টাচারী কাউন্সিলর চাই। 

আওয়ামী লীগ সমর্থিত আরেক কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ ফারুক বলেন, আমি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান, এই ওয়ার্ডের নাগরিক অধিকার ও সেবা দুটোই ধ্বংস হতে চলেছে। এলাকার মানুষ বর্তমান কাউন্সিলর কে ভোট দিয়ে খুব আপসোস করে। দখলদারি চাঁদাবাজির মাধ্যমে এলাকার পরিবেশ নষ্ট করছেন।

তিনি বর্তমান কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লবের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ করেন। 

-সিভয়েস/এসসি

তাপস বড়ুয়া

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়