Cvoice24.com


ঐতিহ্যের উচ্ছ্বাসে মুখরিত আইইআর পিঠা পার্বন ও হিম আড্ডা

প্রকাশিত: ০৬:৫৩, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০
ঐতিহ্যের উচ্ছ্বাসে মুখরিত আইইআর পিঠা পার্বন ও হিম আড্ডা

যান্ত্রিক সভ্যতার এই ইট-কাঠের নগরীতে হারিয়ে যেতে বসেছে পিঠার ঐতিহ্য। সময়ের স্রোত গড়িয়ে লোকজ এই শিল্প আবহমান বাংলার অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে উঠলেও কালের বিবর্তণে সামাজিকতার ক্ষেত্রে পিঠার প্রচলন অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছে। নতুন চালের পিঠার স্বাদ সত্যিই বর্ণনাতীত। শীতের পিঠার স্বাদের কথা বলতে গিয়ে অনেকেই ছন্দে ছন্দে বলেন, ‘শীতের পিঠা ভারি মিঠা’। চুলার পিঠে বসে পিঠা খাওয়ার শৈশব স্মৃতি সবারই কম বেশি রয়েছে। ‘পৌষ-পার্বণে পিঠা খেতে বসে খুশিতে বিষম খেয়ে, আরও উল্লাস বাড়িয়াছে মনে মায়ের বকুনি খেয়ে।’- কবি সুফিয়া কামাল তার কবিতায় পিঠা খাওয়ার দৃশ্য এভাবেই তুলে ধরেছেন। গ্রামবাংলার হাজার বছরের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির তরুণ প্রজন্মের কাছে পরিচিত করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইআর)  সক্রেটিস চত্বরে আয়োজন করা হয়েছে শীতকালীন পিঠা পার্বন ও হিম আড্ডা।

বৃহস্পতিবার (৬ য়েব্রুয়ারি) আইইআর ৬ষ্ঠ ব্যাচের উদ্যোগে আয়োজিত এ উৎসব উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মহীবুল আজিজ। 

তিনি বলেন, অসাধারণ ঐতিহ্যের প্রবাহের ভেতর বাঙালির গর্বের বিষয় পিঠা। নাগরিক জীবনে যখন সবকিছু যান্ত্রিকতায় আবদ্ধ হয়ে পড়ছে, সীমিত হয়ে পড়ছে আমাদের মানবিক বোধ। তখন আমাদের সেই গ্রামীণ সংস্কৃতির অনন্য এই উপাদান নিয়ে শুরু হল পিঠা উৎসব। এটা শুধু একটি উৎসব নয়, এটা নাগরিক জীবনের যান্ত্রিকতার মাঝে নির্মল আনন্দের খোরাকও। নাগরিক ও ভোগবাদী সমাজের সংস্কৃতিতে এই উৎসব আবহমান বাংলার সংস্কৃতির চিরন্তন উপাদান তুলে ধরার এ আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। আমরা নানা আয়োজনে এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে মুজিব শতবর্ষ উদযাপন করতে যাচ্ছি। আর মুজিববর্ষে আইইআর শিক্ষার্থীদের এ ব্যতিক্রমী আয়োজন সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।

পিঠা পার্বন ও হিম আড্ডা উৎসবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইআর) শিক্ষক হাসান তৌফিক ইমাম, রাজীব আহমেদ ফয়সাল, তাসনিম মুশাররাত, সুস্মিতা দত্ত, আমানুল্লাহ, জেরিন আক্তার প্রমুখ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ৬ষ্ঠ ব্যাচ সেশন (২০১৭-২০১৮) বর্ণাঢ্য এ পিঠা পার্বন ও হিম আড্ডা উৎসবের দিনব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসেবে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আইইআর সক্রেটিস চত্বরে উন্মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠিত হচ্ছে নাচ, গান, আবৃত্তি ও পথনাটকসহ নানা ধরনের সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। এতে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছে।

প্রাণের টানে ছুটে আসা শিক্ষার্থীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে মুখরিত হয়ে ওঠেছিল পিঠা পার্বন ও হিম আড্ডার সক্রেটিস চত্বর। শীতের পিঠা-পুলিসহ নানা অঞ্চলের বৈচিত্র্যময় পিঠার পসরা সাজিয়ে উৎসবে আগত শিক্ষার্থীদের মনোযোগ কেড়েছে পিঠা উৎসবে অংশ নেয় স্টলগুলো। পসরায় মুগ্ধ হয়ে স্টলে স্টলে পিঠা খেতে ভিড় জমিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এবার বেচা-বিক্রিও অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি। ফলে স্টলে নেওয়া শিক্ষার্থী ও সন্তুষ্টচিত্তে উৎসব মুখরতায় ব্যস্ত সময় পার করছেন শিক্ষার্থীরা। মেলায় ঘুরে ফিরে দেখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

অবশ্য এবারের মেলাতে ঘুরে ফিরে আগেরবারের স্টলগুলোকেই দেখা গেছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন অলি-গলি ও ফুটপাতে যেসব পিঠা বিক্রয় হয় স্টলগুলোতে সেসব পিঠার পসরাই ছিল বেশি। তবে কিছু বৈচিত্র্যতাও চোখে পড়েছে। এবার ১০টি স্টলে ৯০-১০০ ধরণের পিঠার সন্ধান মিলেছে। সব মিলিয়ে আইইআর পিঠা উৎসবকে ঘিরে সক্রেটিস চত্ত্বরে শিক্ষার্থীর ঢল।

-সিভয়েস/এমআই/এমএম

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়