Cvoice24.com


অন্তর্বর্তীকালীন রায়কে আশার আলো বলছেন কক্সবাজারের সচেতন মহল

প্রকাশিত: ১৫:২৫, ২৪ জানুয়ারি ২০২০
অন্তর্বর্তীকালীন রায়কে আশার আলো বলছেন কক্সবাজারের সচেতন মহল

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার অভিযোগে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার অন্তর্বর্তীকালীন রায়ের আদেশকে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্বাগত জানিয়েছেন জেলার সচেতন মহল। তারা বলছেন, এই রায়ের আদেশ রোহিঙ্গাদের জন্য আশার আলো। এর ফলে মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়বে এবং রোহিঙ্গারা নিরাপদে স্বদেশে ফেরার পথ সুগম হবে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, রোহিঙ্গাদের উপর এই নৃশংসতাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর আইসিজেতে মামলা করে গাম্বিয়া। গত বৃহস্পতিবার আইসিজে’তে অন্তর্বতীকালীন রায় ঘোষণার তারিখ থাকায় বুকভরা আশা নিয়ে অপেক্ষো করছিলেন রোহিঙ্গারা। তাদের অনেকে রেডিও, টিভি ও মোবাইল ফোনে খবর নিচ্ছিলেন আইসিজে কি রায় দেন। অবশেষে বিকালে রায় ঘোষণার পর রোহিঙ্গারা খুশি হওয়ার অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যমে নিরাপদে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার দাবী জানায়। আইসিজে’র অন্তর্বর্তীকালীন রায়কে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্বাগত জানিয়েছেন জেলার সচেতন মহল।

এই প্রসঙ্গে ব্যারিষ্টার আবুল আলা ছিদ্দিকী জানান, আন্তর্জাতিক আদালতে অন্তর্বর্তীকালীন রায়ের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে পরিষ্কার হয়ে গেল তারা যে রোহিঙ্গাদের উপর গণহত্যা চালিয়েছিল সেই বিষয়টা। তিনি আশা করেন আন্তর্জাতিক আদালতের সঠিক বিচারের মাধ্যমে রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাবে পাশাপাশি জেলাবাসীও ফিরে পাবে পুরাতন সেই উখিয়া-টেকনাফ। 

কক্সবাজার জেলার সুজন (সুশাসন জন্য নাগরিক) এর সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান বলেন, আইনের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে সকল রোহিঙ্গাকে তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরিয়ে দিতে হবে। এইটাই জেলাবাসীর প্রত্যাশা।

কক্সবাজার শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পূর্ণবাসন কেন্দ্রের উপ প্রকল্প পরিচালক জেসমিন আক্তার জানান, আন্তজাতিক আদালতে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের উপর কতটা নির্যাতন চালিয়েছে। কক্সবাজারবাসী হিসেবে তিনি চান সঠিক বিচারের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিয়ে রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাক এবং জেলাবাসীও মুক্তি পাক।

আন্তর্জাতিক আদালতের এই রায় একটি সম্মানজনক ও নিরাপদ প্রত্যাবাসনে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন, রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতা ও আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) এর সহ সভাপতি মাস্টার মো. আব্দুর রহিম।
 
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাহমুদুল হক চৌধুরী বলেন, এই রায় রোহিঙ্গাদের জন্য আশার আলো। এই ধারা অব্যাহত থাকলে রোহিঙ্গা সমস্যার এইটি স্থায়ী সমাধান হবে। এতে করে রোহিঙ্গারা নাগরিক অধিকার সহ তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যাবে। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে আশ্রয় দিতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ কক্সবাজারবাসীর রক্ষাপাবে।

উল্লেখ্য, গত নভেম্বরে গণহত্যার বিষয়ে জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে ওআইসির পক্ষে মামলা করে আফ্রিকার এই দেশটি। আইসিজে’র অন্তর্বর্তীকালীন এ রায়ের মধ্যদিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের আরো আন্তরিক তৎপরতায় রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরিয়ে নেয়ার পথ উন্মুক্ত হবে এমনটি প্রত্যাশা সকলের।

-সিভয়েস/এমএম

ওমর ফারুক হিরু

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়