Cvoice24.com


জেএসসি’র প্রভাব এসএসসি’তে!

প্রকাশিত: ১১:৫৭, ১৬ জানুয়ারি ২০২০
জেএসসি’র প্রভাব এসএসসি’তে!

ছবি: সিভয়েস

আগামী ১ ফেব্রুয়ারী থেকে সারাদেশে এসএসসি সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে। পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীন এবার ১৯৬টি কেন্দ্রের ১ হাজার ৪৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯০ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। গতবছর ১৯০টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮৬৭ জন। গত বছরের তুলনায় কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়লেও  কমেছে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা।

সূত্র অনুয়ায়ী আরো জানা যায়, তিন পার্বত্য জেলায় রাঙ্গামাটিতে ১৯টি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৮ হাজার ৮০৮ জন। গতবছর এই জেলায় পরীক্ষার্থী সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ২৭ জন।

খাগড়াছড়িতে ১৯টি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৯ হাজার ৯৭ জন। গতবছর এই জেলায় পরীক্ষার্থী সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৭২০ জন।

বান্দরবানে ১২টি কেন্দ্র মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪ হাজার ৫৫৪ জন। গত বছর এই জেলায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ২৮২ জন।

চট্টগ্রাম জেলা এবং মহানগরে এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৫৭৬ জন। ১১৬টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেবে এসব পরীক্ষার্থী। গতবছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৪ হাজার ৩১০ জন।

কক্সবাজার জেলায় এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২১ হাজার ৫৫ জন। মোট ২৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেবে এ জেলার পরীক্ষার্থীরা। গত বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২১ হাজার ৩৫০ জন।
 
এবার এসএসসিতে অংশ নিতে যাওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ১ লাখ ১২ হাজার ৯৯০ জন নিয়মিত, ৩০ হাজার ৯৬৫ জন অনিয়মিত এবং ১৩৫ জন মান উন্নয়ন পরীক্ষার্থী।

এ বছর এসএসসিতে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ সিভয়েসকে বলেন, ২০১৭ সালে জেএসসি পরীক্ষায় প্রায় ১৫০০০ শিক্ষার্থী ফেল করেছিল। আর যারা পাস করেছিল তারাই ২০২০ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। চট্টগ্রাম মহানগরে শিক্ষাথীর সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং গ্রাম অঞ্চলে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে।

তিনি আরো বলেন, তারমধ্যে খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্কুলে গতবারের তুলনায় এই বার শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম। পার্বত্য চট্টগ্রামে অনেক অঞ্চলে সুযোগ সুবিধা কম থাকায় এবং আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে অনেক শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ছে। এব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে নাসিরাবাদ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনী সিভয়েসকে বলেন, আমার স্কুলে ২০১৯ সালের পরিক্ষার্থী সংখ্যা ছিল ৪৬৭ জন আর ২০২০ সালে বেড়ে হয়েছে মাত্র ৪৭৯ জন। 

তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম বোর্ডের অধীনে গ্রাম অঞ্চলের অনেক প্রতিষ্ঠানে অনেক শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ছে। সামাজিক এবং আর্থিক কারণে এই ঝড়ে পড়ার সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। ২০১৭ সালে জেএসসি পরীক্ষায় ফেলের সংখ্যা বাড়ায় এর প্রভাব ২০২০ সালের এসএসসি’তে পড়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন এ প্রধান শিক্ষক। 

ডাঃ খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শাহেদা আক্তার সিভয়েসকে বলেন, আমাদের স্কুলে ২০১৯ সালে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩২৪ জন, ২০২০ সালে ৩৪০ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিবে। 

তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চল এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিভিন্ন কারণে অনেক শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়েছে, উন্নয়ন গত সমস্যার কারণে নগর থেকে ওরা একটু পিছিয়ে। এ বিষয়ে কিছুটা লক্ষ্য রাখলে আশা করি সামনের বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়বে। 

রেলওয়ে হাসপাতাল কলোনী সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার আশ্চ্যার্য সিভয়েসকে বলেন, আমাদের সিটি কর্পোরেশন স্কুল গুলোতে পরিক্ষার্থীদের সংখ্যা আগের মতই। কিন্তু আমার স্কুলে গতবারের তুলনায় এবার পরিক্ষার্থীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। 

চন্দনাইশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত ধোপাছাড়ি শীলঘাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব মোহাম্মদ ইসহাক সিভয়েসকে বলেন, এইবার স্কুলে নিয়মিত পরিক্ষার্থীর সংখ্যা ২২জন এবং অনিয়মিত ফেল করা পরিক্ষার্থী সংখ্যা ৫০জন।

নিয়মিত পরিক্ষার্থীর সংখ্যা কম কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ধোপাছড়ি একটা পাহাড়ি জনপদ। এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাপ। এছাড়াও এ অঞ্চলে বাল্যবিবাহের প্রবণতা এবং অভিভাবকদের অসচেতনতার কারণে অনেক শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ছে।

সাতকানিয়ার পুরানগড় শাহ সরফুদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার দে সিভয়েসকে বলেন, গত বারের তুলনায় এইবার স্কুলে পরিক্ষার্থীর সংখ্যা কিছুটা কম। এর কারণ হিসেবে ২০১৭ সালের জেএসসি’র কিছুটা প্রভাব পড়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, সরকারের নির্দেশ অনুয়ায়ী নির্বাচনী পরীক্ষায় এক বিষয়ে ফেল করলেও আমরা এস এস সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দিচ্ছি না। সে দিক থেকেও এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা একটু কম।  

-সিভয়েস/এমএম

তাপস বড়ুয়া

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়