Cvoice24.com


দুই বছরেও নগর বিএনপিতে কার্যকর হয়নি ‘এক নেতার এক পদ’ নীতির সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত: ০৭:০০, ২২ ডিসেম্বর ২০১৯
দুই বছরেও নগর বিএনপিতে কার্যকর হয়নি ‘এক নেতার এক পদ’ নীতির সিদ্ধান্ত

ফাইল ছবি।

বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের পর চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির কমিটি গঠন করা হলেও কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে প্রায় ১ বছর ৪ মাস । কিন্তু তিন বছরে একটিও নির্বাহী কমিটির সভা করতে পারেনি চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি। কমিটি দেয়ার পর কমিটির সদস্যদের জাগিয়ে তোলার নানা স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মহানগরের শীর্ষ নেতৃত্ব।

কিন্তু প্রায় ২ বছরের মাথায় নেতারা বলছেন, পুনর্গঠন দূরে থাক, চট্টগ্রাম মহানগরের সাংগঠনিক ৪৩ ওয়ার্ড ও ১৫ টি থানার অনেক ওয়ার্ড ও থানা কমিটি পূণাঙ্গ করতে পারেনি নগর কমিটি।

দলটির নেতারা বলছেন, ২০১৬ সালের ৬ আগস্ট ডা. শাহাদাত হোসেনকে সভাপতি, আবু সুফিয়ানকে সহসভাপতি ও আবুল হাসেম বক্করকে সাধারণ সম্পাদক করে কেন্দ্র থেকে তিন সদস্যের চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির অংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

আংশিক কমিটি ঘোষণার এক বছর পর চট্টগ্রাম মহানগরে ২৭৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয়া হয় ২০১৭ সালের ১১ জুলাই। কিন্তু এখন পর্যন্ত নির্বাহী কমিটির সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে বসা হয়নি নগর বিএনপির। দলটির কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে নেওয়া ‘এক নেতার এক পদ নীতি' সেই সিদ্ধান্তটিও নগর কমিটিতে কার্যকর হয়নি।

দলীয় সূত্র জানায়, নতুন নেতৃত্ব সামনে আনার লক্ষ্যে আনকোরা নেতাদের অনেককে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়। কিন্তু নতুনদের প্রত্যাশা অনুযায়ী সক্রিয় করা যায়নি। চট্টগ্রাম মহানগর ওয়ার্ড ও থানা কমিটি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া পুরোপুরি শেষ হয়নি। ফলে নগরীর মাঠপর্যায়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা.শাহাদাত হোসেন বলেন, নগরীর সগ্রিকভাবে বিএনপির সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পুরোদমে চলছে। প্রায় ওয়ার্ড ও থানা কমিটি দেয়া হয়েছে। নির্বাহী কমিটির সভা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিসিয়াল ভাবে আমাদের বসা হয়নি। কিন্তু আনফিসিয়াল ভাবে ৭ বা ৮ বার বসা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, নেতা-কর্মীদের প্রত্যাশামতো নগর কমিটি হয়নি। পদে প্রত্যাশিত বা দাবিদার নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ-অসন্তোষ দানা বাঁধছে। নগর কমিটি দপ্তর সম্পাদক রিংকু দাস ও ত্রান ও পুর্নবাসন সম্পাদক মীর কাওচার এলাহি মারা যাওয়ায় পদ ২ টিও এখনো খালি রয়েছে।

বিএনপির গঠনতন্ত্রে বলা আছে, প্রতি তিন বা ছয় মাসে অন্তত একবার নগর কমিটির নির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। যদিও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির ৩ বছর ৪ মাসে একবারও এখনো হয়নি সভা অনুষ্ঠিত হয়নি।

জানা গেছে, বারবার তাগিদ দিয়েও ‘এক নেতার এক পদ’ নীতির সিদ্ধান্ত পুরোপুরি কার্যকর করা যায়নি। কমিটিতে একাধিক পদধারী নেতা রয়েছে। তাঁরা নগর কমিটির পদের পাশাপাশি ওয়ার্ড ও থানা কমিটি অথবা বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পদে রয়েছেন।

নগর বিএনপি সূত্র জানায়, একাধিক নেতা একটি পদ রেখে অতিরিক্ত পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে কয়েকজন ছাড়া কেউই পদ ছাড়েননি। চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি গাজী সিরাজ ও যুবদলের সভাপতি মোশারফ হোসেন দিপ্তি এখনো একাধিক পদে রয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুর রহমান শামীম বলেন, কমিটির পর থেকে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সামগ্রিক রাজনীতিতে বিএনপির অবস্থান সন্তোষজনক। এক নেতার এক পদ নীতি কার্যকর শুরু হয়েছে। কয়েকজন জন ছাড়া অন্যরা একটি পদ ছেড়ে দিয়েছেন। শিগগিরই নগর ছাত্রদলের সভাপতি হয়ে গেলে এটি পুরোপুরি কার্যকর হবে।

তিনি আরো বলেন, বিএনপির সভা করতে বাধা, হামলা,মামলা সম্মেলন করতে বাধা—এসবের মধ্যেই সাংগঠনিক পুনর্গঠন চলছে। নানা বাধা-বিপত্তির মধ্যে নগর বিএনপিকে অগ্রসর হতে হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনকে সভাপতি ও দস্তগীর চৌধুরীকে (প্রয়াত) সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত ১৫১ সদস্যের এ কমিটি ২০০৫ সালে ভেঙে দেয়া হয়। এরপর থেকে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির আর কোনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। কখনও আহ্বায়ক কমিটি, কখনও বা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকটি পদ নিয়ে অসম্পূর্ণ কমিটি ঘোষণা করা হয়। সর্বশেষ ২০১৬ সালে ১৬ আগস্ট ডা. শাহাদাত হোসেনকে সভাপতি ও আবুল হাশেম বক্করকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়।পরবর্তী এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা দেয়ার কথাও জানানো হয়েছিল।

সিভয়েস/এসসি

মিনহাজুল ইসলাম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়