Cvoice24.com


বোয়ালখালীতে হাতির দল লোকালয়ে

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯
বোয়ালখালীতে হাতির দল লোকালয়ে

ছবি : সিভয়েস

বোয়ালখালীতে লোকালয়ে প্রায়দিন হানা দিচ্ছে বন্য হাতির দল। ক্ষয় ক্ষতি করছে ক্ষেত খামার ও বসত বাড়ি। জৈষ্ট্যপুরা, আমুচিয়া ও কড়লডেঙ্গা ইউনিয়নের লোকালয়ে বন্য হাতির দল নেমে এসে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি বসত বাড়ি ভাংচুরের খবর পাওয়া গেছে।

গত এক সপ্তাহ ধরে লোকালয়ে বন্যহাতির দল নেমে আসায় আতংক বিরাজ করছে এলাকায়। গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে শ্রীপুর খরণদ্বীপ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ৩টি বসত বাড়ি ভাংচুর করে হাতির দল।

শ্রীপুর খরনদ্বীপ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মুন্সী পাড়ার বাসিন্দা জাফরান শাহরিয়ার জানান, বৃহস্পতিরাব রাত দেড়টার দিকে বসত ঘরের সামনে বিশাল আকৃতির দুইটি হাতি অবস্থান নেয়। হাতির উপস্থিতি টের পেয়ে পাকা ঘরের ছাদে উঠে পড়ে পরিবারের সদস্যরা। হাতির দলটি ঘরের জানালার গ্লাস ভেঙ্গে ফেলেছে। ভোর ৪টা পর্যন্ত বসত বাড়ির সামনে অবস্থান করে চলে যায়। যাওয়ার সময় পার্শ্ববর্তী সুপারি বাগান ও দুইটি কাচাঁ ঘর এবং একটি রান্নাঘর ভেঙ্গে দেয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য হাছান চৌধুরী বলেন, শুক্রবার ভোরে ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা অমল নাথের বাড়ির সামনে বস্তায় ভরে রাখা ধান খেয়ে ফেলে। এছাড়া একই এলাকার মলয় বড়ুয়া, শিপ্রা বড়ুয়া, শিমুল বড়ুয়া, মন্টু বড়–য়ার ফসল ক্ষেত নষ্ট করে দিয়েছে হাতির দল।

স্থানীয়রা জানান, জ্যৈষ্ঠপুরা-জঙ্গল আমুচিয়া ও আহলা কড়লডেঙ্গা পাহাড়ি অরণ্যে খাদ্যের অভাব দেখা দেওয়ায় লোকালয়ে বারবার হানা দিচ্ছে বন্য প্রাণীর দল। ফলে লোকালয়ে আবাদি জমির ফসলের ক্ষয়ক্ষতিসহ ঘটছে প্রাণহানির ঘটনা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আছিয়া খাতুন বলেন, এ ব্যাপারে সম্বন্বিত উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বনবিভাগের  সাথে আলাপ আলোচনা হয়েছে। অরণ্যে খাদ্যের অভাবের ফলে লোকালয়ে নেমে আসছে হাতির দল। বিষয়টি একদিনে সমাধান করা সম্ভব নয়। তবে প্রাণহানি বা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিরোধে এলাকাবাসীকে সর্তক থাকতে হবে।
এর আগে গত ২৪ নভেম্বর খাদ্যের সন্ধানে নেমে আসা হাতির পাল তান্ডব চালিয়ে গেছে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার লোকালয়ে। প্রাণ গেছে নিরীহ তিন বৃদ্ধের। সাথে একটি গরুর বাছুরের। হয়েছে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি। ৩টি বাচ্চাসহ ৯টি হাতি ছিল এ পালে।
 
বোয়ালখালী উপজেলার পূর্বদিকে জ্যৈষ্ঠপুরা-জঙ্গল আমুচিয়া ও আহলা কড়লডেঙ্গা ইউনিয়ন পাহাড়ের পাদ দেশে। এ পাহাড় রাউজান, রাঙ্গুনিয়া থেকে শুরু হয়ে পটিয়া, চন্দনাইশ হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত বিস্তৃত। এ পাহাড় বান্দরবান, ভারতে মিজোরাম রাজ্য পর্যন্ত প্রসারিত।

এ সুবিশাল প্রাকৃতিক অঞ্চলে বসবাস বিচিত্র প্রাণীকূলে আবাস। তবে দিনদিন এ অঞ্চল গ্রাস করছে এক শ্রেণির মানুষ। প্রাণিকূলের আবাস ভূমি বিনষ্ট হয়ে পড়ছে। ফলে দেখা দিচ্ছে খাদ্যের অভাব।

লোকালয়ে আবাদকৃত আমন ধানের মৌ মৌ গন্ধে ক্ষুধা মেঠাতে পাহাড় ছেড়ে হানা দিচ্ছে হাতির পাল। কষ্টের ফসল রক্ষায় কৃষকের নির্ঘুম পাহাড়। আর বন্য ক্ষুধা নিবারণ। কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নন। ঘটছে বিপত্তি।

এ পাহাড়ি অঞ্চল প্রাণিকূলের অভয়ারণ্য হলেও গত এক দশক ধরে রোহিঙ্গা আবাসন দ্রুত গতিতে গ্রাস করে ফেলে বনাঞ্চল।

-সিভয়েস/এসসি

 

বোয়ালখালী প্রতিনিধি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়