Cvoice24.com

অন্তরের আলো দিয়ে চবি ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সাকিল খান
স্বপ্ন পূরণের পথে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা এগিয়ে

প্রকাশিত: ১০:৩৩, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯
স্বপ্ন পূরণের পথে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা এগিয়ে

ছবি : সিভয়েস

চোখের আলোয় পৃথিবীর সৌন্দর্য দেখতে পায় না সে। তবুও থেমে যায়নি। বড় হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে হামাগুঁড়ি দিয়ে এগিয়ে চলে স্বপ্নের পথে। শিক্ষার আলোয় নিজেদের আলোকিত করার প্রাণপণ চেষ্টায় পিছিয়ে নেই সাকিল খান। সুস্থ সবল মানুষের মত মেধা মননে কৃতিত্ব রেখেছে দৃষ্টি প্রতিবন্ধি সে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় মেধাস্থানে জায়গা করে নিয়েছে সাকিল।

অন্তরের আলো দিয়ে ২০১৪ সালে জেএসি পরীক্ষায় জিপি-৪ ও ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম নগরীর হামজারবাগ রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে  থেকে এসসসি জিপি-৪.৪৫ পেয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় সাকিল খান। পরে ২০১৯ সালের চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে অধীনে এইচএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে জিপি-৫ পেয়ে ২০১৯-২০২০ সেশনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। সে সরকারি দৃষ্টি ও বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধি বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।

জানা যায়, চট্টগ্রাম সাতকানিয়া উপজেলার পশ্চিম বাজালিয়া এলাকার মো. আইয়ূব খান ও ফারজানা বেগম দম্পতির ৩ ছেলেমেয়ের মধ্যে সাকিল খান সবার বড়। তাদের ৩ ছেলেমেয়ের মধ্যে ১ ছেলে ও ১ মেয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধি।দৃষ্টি প্রতিবন্ধি মেয়েও এইবার রহমানিয়া স্কুল থেকে জেএসি পরীক্ষা দিয়েছে। মেঝে ভাই বেসকারি পলিটেনিকেলে ডিপ্লোমা পড়ছে।

চট্টগ্রাম সরকারি দৃষ্টি ও বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধি বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম সরকারি দৃষ্টি ও বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধি বিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষার্থী বিভিন্ন কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে। যারমধ্যে ৮ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। তারমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন। সকল শিক্ষার্থী মানবিক বিভাগ থেকে অংশ গ্রহণ করেছিল। তাদের মধ্যে একজন শাকিল খান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।

অনুভুতি জানাতে গিয়ে সাকিল খান সিভয়েসকে বলেন,  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অথবা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্র বিজ্ঞান অথবা সমাজ বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার স্বপ্ন ছিল। সে স্বপ্ন আমার পূরণ হয়েছে। রাজনীতি বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের পরে ভবিষ্যতে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার হয়ে কলেজে শিক্ষক হিসেবে দেশে শিক্ষার আলো বিস্তারে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চাই। একইসঙ্গে দেশ ও মানবতার কল্যাণে কাজ করতে চাই।

চট্টগ্রাম সরকারি দৃষ্টি ও বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধি বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ সিভয়েসকে বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী যখন কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায় তখন আমার যে কী আনন্দ লাগে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। জীবনের অধিকাংশ সময় তাদের মধ্যদিয়ে অতিবাহিত হয়েছে। তাদের জন্য কিছু করতে পারাটা আমার জীবনের সাফল‌্য বলে আমি মনে করি।

সাকিল খান বলেন, ভর্তি চান্স পেয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করছি  এবং চট্টগ্রাম সরকারি দৃষ্টি ও বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। পাশাপাশি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি যাদের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আসা।

রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের (পাঁচলাইশ) প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আবু তৈয়ব সিভয়েসকে বলেন, আমার বিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থী আজ তার জীবনের লক্ষ‌্যে পৌঁছতে পেরেছে তার জন্য আমি এবং আমার বিদ্যালয় গর্বিত।

-সিভয়েস/এমআই/এসসি

 

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়