Cvoice24.com

চুক্তি শেষ হলেও কাউনসেলিংয়ে পুণ: নিয়োগ নেই
চমেকে এআরটিতে চিকিৎসাধীন রোগীরা হতাশ!

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ৪ ডিসেম্বর ২০১৯
চমেকে এআরটিতে চিকিৎসাধীন রোগীরা হতাশ!

ছবি : সিভয়েস

ফটিকছড়ি উপজেলার আবু সাইদ দীর্ঘদিন এইডস রোগে আক্রান্ত। এইডস সনাক্ত হওয়ার পর থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে অ্যান্টি রিক্ট্রোভাইরাল থেরাপি সেন্টার (এআরটি) এর অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ওষুদ খাওয়ার পরও মনোবল পাচ্ছেনা। বেচেঁ থাকা নিয়ে নানা ধরণের হতাশার মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে দিনগুলি।মনোবল দেওয়ার মতো কাউকে পাচ্ছে না। এই রকম হতাশার মধ্যে আছেন চমেক হাসপতাল এআরটি চিকিৎসাধীন অধিকাংশ রোগী।

এইডস আকান্ত রোগীর এইডসে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু অনিবার্য এবং এর কোনো সঠিক চিকিৎসাও নেই। তবে নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এই ছাড়া কিছু ওষুধ আছে যা এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তিকে সাময়িকভাবে ভালো থাকতে সাহায্য করে। যদিও এটি সম্পূর্ণভাবে এইডস উপশম করে না, তবে এইডস রোগীর মৃত্যু কিছুটা বিলম্বিত করতে পারে। শারীরিকভাবে অসুস্থ হলে যেমন বিভিন্ন চিকিৎসার মাধ্যেমে দ্রুত সুস্থ হতে পারি, মানসিক কোনো সমস্যা দেখা দিলেও ঠিক তেমনি অনেক সময় প্রয়োজন পড়ে বিশেষ পরামর্শের। এইডস রোগীরা সবসময় মানসিক সমস্যা ভোগেন।

এইডস রোগীরা মনের জোরে বাচাঁর স্বপ্ন দেখেন। তাদের প্রয়োজন নিয়মিত কাউন্সেলিং । এইডস রোগী চিকিৎসার চেয়ে কাউন্সেলিং প্রতি জোর দিচ্ছেন এইডস বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবন, ফেনী, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালীর ও কুমিল্লার অধিকাংশ এইডস রোগী চিকিৎসা নেন চমেক হাসপাতালে এআরটিতে। কিন্তু চমেক হাসপাতালে এআরটিতে বর্তমানে তালিকাভুক্ত ৪২১ জন এইডস রোগী থাকলেও তাদের কাউন্সেলিং করার মত কেউ নেই।

এআরটি সূত্র জানা যায়, এআরটিতে চলতি বছর এপ্রিল মাস পর্যন্ত এইডস রোগীদের কাউন্সেলিংয়ে ২ জন কর্মরত ছিলেন। কিন্তু বেসকারি এনজিওর সাথে চুক্তি শেষ হওয়ার পর তাদের পুনরায় নিয়োগ দেয়া হয়নি। তার পর থেকে কাউন্সেলিং এর ২ টি পদ খালি রয়েছে। এছাড়াও প্রোগ্রামিং অফিসার-১ ও পরিসংখ্যানবিদ-১ জনের পদ খালি রয়েছে দীর্ঘদিন যাবত। এআরটিতে সব ধরণের প্রোগ্রামিং ও পরিসংখ্যানবিদের কাজ করতে হচ্ছে কর্মরত ২ জন নার্সেদের। এই কাজ নিয়ে হিমশিম খেতে হয় জানিয়েছেন নার্সরা।

চমেক হাসপাতালের চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগের মেডিকেল অফিসার ও এআরটি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডা. সঞ্জয় প্রসাদ দাশ বলেন, এইডস আক্রান্ত রোগী মাস অন্তর চিকিৎসাসেবা দিতে হয়। জনবল সংকটে এইচআইভি বহনকারী রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কাউন্সেলিং , প্রোগ্রামিং অফিসার ও পরিসংখ্যানবিদ নিয়োগ দিলে সব ধরণের সেবার মানও বৃদ্ধি পাবে। আমাদেরও এইডস রোগী নিয়ে হিমশিম খেতে হবেনা।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা.আখতারুল ইসলাম বলেন, এইডস আকান্ত প্রতিদিন কতই বা রোগী হাসপাতালে আসছে। চিকিৎসক চাইলে চিকিৎসা ও কাউসিলিং উভয়টা করতে পারেন। এইআরটিতে রোগী নিয়ে এত বেশি চাপ নেই। হাসপাতালে তাদের চেয়ে অনেক ওয়ার্ডে আরো বেশি জনবল সংকট রয়েছে। হাসপাতালে জনবল নিয়োগ দিলে জনবল সমস্যাটা কেটে যাবে।

উল্লেখ্য, এআরটিতে এইডস রোগী ৪২১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪৪, নারী ১৮ ও শিশু ৯ জন। এই ছাড়া ২০১৯ সালে নতুনভাবে ৭১ জন শনাক্ত হয়েছে। তৃতীয় লিঙ্গ রয়েছে ২ জন। আক্রান্ত রোগীর মধ্যে নিয়মিত সেবা নেন ৩২৬ জন। এ ছাড়া এইডস রোগে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছর মারা গেছে ১০ জন। ২০১৮ সালে চারজন ও ২০১৭ সালে ৩জন মারা যান।

-সিভয়েস/এসসি

মিনহাজুল ইসলাম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়