Cvoice24.com

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের ১ম পুনর্মিলনী
র‌্যালি জুড়ে আবেগ মিশালি উচ্ছ্বাস

প্রকাশিত: ১৬:৩৫, ২১ নভেম্বর ২০১৯
র‌্যালি জুড়ে আবেগ মিশালি উচ্ছ্বাস

দেশের ভিন্ন ভিন্ন প্রান্ত পেরিয়ে ছুটে আসার উদ্যেশ্য কী? উত্তরে বলেছেন, জমাট বাধা উচ্ছ্বাস আর বন্ধুত্বের আবেগ আর ভালোবাসা ছড়িয়ে তারণ্যে ফিরে যেতে চাই।  নগরীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের ১ম পুনর্মিলনীতে আসা একাধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। 

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বেলা সাড়ে তিনটায় ‘প্রাণের উৎসবে, মাতি উল্লাসে’  বাদশাহ মিয়া সড়কস্থ বিশ্ববিদ্যালয়টির চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে শুরু হয় বিশাল এক উৎসব র‌্যালি। এতে অংশ নেয় ১ম থেকে ৪৯তম ব্যাচের প্রায় ৮ হাজারের অধিক প্রাক্তন শিক্ষার্থী। সাথে বর্তমান শিক্ষার্থীরাদেরও অংশ নিতে দেখা গেছে। পরে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে র‌্যালিটি সিআরবির শিরীষ তলায় গিয়ে শেষ হয়।

র‌্যালিতে অংশ নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭ তম ব্যাচের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মোখলেসুর রহমান মুকুল। তিনি বলেন,  জন্মের ছয় মাস পর চোখের আলো হারিয়েছি। আমার হয়তো চোখ নেই। কিন্তু মনের চোখ দিয়ে এই রঙিন উৎসবকে উপভোগ করছি। মনে হচ্ছে, বন্ধুদের সাথে নিয়ে ফিরে গেছি তিন যুগ আগের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়টির ১ম ব্যাচের শিক্ষার্থী মুন্সী নজরুল ইসলাম ও ফরিদ আহমদও একই উচ্ছ্বাসে নিজেদের মাতাতে সামিল হয়েছেন। সত্তোরোর্ধ দুজনই ছিলেন গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী । বর্তমানে তারা দুইজনই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। এর মধ্যে মুন্সী নজরুল ইসলাম ছিলেন চবির সাবেক শিক্ষক। সবার মতো তারাও প্রথমবারের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের র‌্যালিতে অংশগ্রহণের সুযোগ হাতছাড়া করেননি।

র‌্যালিকে ঘিরে একদিন আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় শাটল ট্রেনের প্রতিকী, ঘোড়ার গাড়ি, ঢাক-ঢোল, ভুভুজেলা নিয়ে প্রস্তুত রাখা হয়।  বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পরনেও দেখা যায় লাল-সবুজ-নীল আর কমলা রঙের টি-শার্ট। এছাড়া মাথায় উৎসবের ক্যাপ আর হরেক রঙের বেলুন নিয়ে সারা নগরী মাতিয়ে তুলেন তারা।

পরে শিরীষ তলায় সন্ধ্যার পর শুরু হয় মনোজ্ঞ বাউল উৎসবের। যেখানে দেশের খ্যাতনামা বাউল শিল্পীরা তাদের পরিবেশনায় মাতিয়ে রাখেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের। 

এর আগে কবুতর উড়িয়ে উৎসবটির উদ্বোধন ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও চট্টগ্রাম ৬ আসনের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। 

পুনর্মিলনী উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয় ১২ তম ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার, অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি ও সরকারের প্রাক্তন মূখ্য সচিব আবদুল করিম, এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম ও পুনর্মিলনী উদযাপন পরিষদের আহবায়ক আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী নাসিমসহ প্রমূখ।

এসময় তারা বলেন, অনেক গুণীজন, রথী-মহারথীরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ছিলেন। এর মধ্যে অনেককে আমরা হারিয়েছি, অনেকে এখনও আমাদের মাঝে আছেন। এই অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গঠনের মাধ্যমে সবাইকে এক প্ল্যাটফর্মে আনায় উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমরা আজ বন্ধু, সিনিয়র-জুনিয়রদের সঙ্গে সময় কাটাতে অনেক দূর থেকে ছুটে এসেছি। 

তারা আরও বলেন, এই আয়োজনের যখন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তখন আয়োজকরা ভেবেছিলেন দুই-তিন হাজার অংশ নেবেন। কিন্তু আট হাজারের বেশি প্রাক্তন শিক্ষার্থী পুনর্মিলনীর রেজিস্ট্রেশন করার মাধ্যমে আয়োজকদের অনুপ্রাণিত করেছেন। ফলে আয়োজনটি অনেক বড় হয়েছে। তাই ছোট খাট ভুল ত্রুটি এড়িয়ে যাবেন। আমরা সবাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্য। 

উল্লেখ্য, আগামীকাল শুক্রবার মূল উৎসবে আলোচনা সভা, উপাচার্যবৃন্দ সম্মাননা, শোক প্রস্তাব, স্মৃতিচারণ, র‍্যাফেল ড্র, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ দিনব্যাপী নানা আয়োজন রাখা হয়েছে।

-সিভয়েস/এএফ

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়