Cvoice24.com


মুজিববর্ষের শেষে মানুষ শতভাগ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসবে : তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১৬:০৮, ১৫ নভেম্বর ২০১৯
মুজিববর্ষের শেষে মানুষ শতভাগ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসবে : তথ্যমন্ত্রী

ছবি : সিভয়েস

আওয়ামী লীগের প্রচার, প্রকাশনা সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘দেশে ৯৪ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে। আগামী মুজিববর্ষের শেষে দেশের মানুষ শতভাগ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় চলে আসবে। তাইতো এখন গ্রামে ফ্রিজের পাশাপাশি এসির শো-রুমও গড়ে উঠেছে।’

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) নগরীর আগ্রাবাস্থ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কক্ষে শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে উন্নয়নের এক দশক শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ‘গত ১০ বছরের তুলনায় এখনকার মানুষের পোশাক-আশাক ও চলাফেরা বেশ চাকচিক্যময় হয়েছে। আগের মানুষের দাবি ছিল- দু‘বেলা দু‘মুঠো খাওয়ার ব্যবস্থা করা। আর এখন তাদের সেই দাবি মিটে গেছে। এখন তারা বিদ্যুতের খুটি চায়। দুই বছর পর সেই দাবিও থাকবে না।’

স্বাধীনতার পর পাকিস্তানের মনে সংশয় ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা ভেবেছিলো বাংলাদেশ আদৌ দেশ হিসেবে টিকে থাকতে পারবে কিনা। সেটি নিয়ে তারা আত্মতুষ্টিতে থাকতো। কিন্তু আজকে সমস্ত সূচকে আমরা পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে বহুদূর এগিয়ে গেছি। আমরা হিউমেন ইনডেক্সে ভারত-পাকিস্তান দুটি দেশকেই অতিক্রম করেছি। স্বাধীনতার পর আমাদের গড় আয়ু ছিল ৩৯ বছর। আজ সেটি ৭৩ বছর। যেখানে পাকিস্তানে ৬৮-৬৯ এবং ভারতে ৭১ বছর।’

‘আগে কলকাতায় গেলে বাংলাদেশ সম্পর্কে অন্যরকম ধারণ পোষণ করা হতো। এখন সেটি বদলে গেছে। বাংলাদেশের মানুষ আগে কলকাতায় বেড়াতে যেত, আর এখন কলকাতার মানুষ বাংলাদেশে বেড়াতে আসছে। এবং টাকার মানও প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘রাত ১২টায় যখন টেলিভিশন দেখি, তখন কারো কারো বক্তব্যে মনে হবে গত দশ বছরে দেশে কিছুই হয়নি। বরং মনে হবে দেশটা যেন কয়েক হাত দেবে গেছে। কিন্তু ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অর্থনীতিতে নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী ড. অমর্ত্য সেন বলেছেন- বাংলাদেশের অগ্রগতি থেকে ভারতেরও অনেক কিছুই শেখার আছে।’

‘আজ বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া থেকে পৃথিবীর অন্য দেশগুলোর শেখার আছে বলেছেন। বিগত বছরে আমাদের জিডিপির অগ্রগতি ছিল ৮.১। কিন্ত এ বছর আমাদের লক্ষ্য ৮.২ করার।’
চট্টগ্রাম বাংলাদেশের প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি দেশের অন্যতম প্রধান শিল্পনগরী ও প্রধান সমুদ্রবন্দর। এ বন্দর দিয়ে দেশের আমদানি-রপ্তানি ৯৩ ভাগ হয়। গত ১০ বছরে আমরা কোথায় গিয়েছি তা বিশ্লেষণ করা দরকার। যেখানে আগে আমাদের মাথা পিছু আয় ছিল ৬০০ ডলার। আজকে সেটি ২০০০ ডলার হয়েছে।’

চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মধ্যে রয়েছি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রথম শিল্প বিপ্লব শুরু হয় ১৭৬০ সালে। তার বহু বছর পর ১৮৫২ সালে ভারতবর্ষে ইস্টিক ইঞ্জিন দিয়ে ট্রেন চলে। এছাড়া বিদ্যুৎ আবিষ্কারের মধ্যে দিয়ে দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লব শুরু হয়। এবং ১৯৬০ এর দশকে কম্পিউটার আবিষ্কারের মাধ্যমে তৃতীয় শিল্প বিপ্লব শুরু হয়। আমাদের দেশে সেই কম্পিউটার আসে ১৯৯০ এর দশকে। অর্থ্যাৎ তৃতীয় শিল্প বিপ্লব থেকে আমরা কয়েকবছর পিছিয়ে ছিলাম। আর চতুর্থ শিল্প বিপ্লব হচ্ছে ইনফরমেশন টেকনোলজি এবং রোবটিক্সের ব্যবহার।’

‘তারই লক্ষ্যে শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তখন আমাদের দলের অনেকেই সেই বিষয়টি বুঝতে পারেননি। এছাড়া বিএনপিসহ অনেকেই সেটি নিয়ে হাসি ঠাট্টা করেছিলো। আজকে সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ স্বপ্ন থেকে বাস্তবতায় রূপ নিয়েছে। কারণ প্রায় ১৭ কোটি মানুষের দেশে আজ ১৫ কোটি মানুষ মোবাইল ব্যবহার করছে। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের সময় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৫০ লাখ। আজ সেটি সাড়ে ৯ কোটি ছাড়িয়েছে। শুধু ফেসবুক ব্যবহার করছে সাড়ে ৩ কোটির বেশি। এছাড়া অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সেটি প্রায় ৪ কোটিতে দাঁড়িয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আজ থেকে ১০ বছর আগে আমাদের জিডিপির পয়েন্ট ছিল ৯১.৬৩ বিলিয়ন। আর আজকে সেটি ৩শ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে। আমাদের অর্থনীতি আজকে পিপিবিতে বিশে^র ৩১তম। পৃথিবীতি প্রায় ৪৫-৫০টি উন্নত দেশ আছে। তার মধ্যেও আজ বাংলাদেশ অর্থনীতিতে এ সমৃদ্ধি অর্জন করেছে। যেটি আগামী কয়েক বছর পর ২৭-২৮ তম অর্থনীতির দেশে রূপান্তরিত হবে। এছাড়া গত কয়েক বছরে বিশ্বের অর্থনীনৈতিক অগ্রগতিতে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।’

-সিভয়েস/এএফ/এসসি

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়