Cvoice24.com


বিশ্ব খাদ্য সংস্থাকে অবাক করে দিয়েছে বাংলাদেশ : তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১৫:৪৫, ১৫ নভেম্বর ২০১৯
বিশ্ব খাদ্য সংস্থাকে অবাক করে দিয়েছে বাংলাদেশ : তথ্যমন্ত্রী

ছবি : সিভয়েস

আওয়ামী লীগের প্রচার, প্রকাশনা সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আজকের বাংলাদেশ শুধুমাত্র খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ নয় বরং খাদ্য উব্ধৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে। আমাদের দেশ সেই দেশ, যেখানে মাথাপিছু কৃষি জমির পরিমাণ পৃথিবীতে সর্বনিম্ন। আর মানুষের ঘনত্ব পৃথিবীতে সর্বোচ্চ। আমরা পৃথিবীসহ বিশ্ব খাদ্য সংস্থাকে অবাক করে দিয়ে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছি। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার কাছে আমরা 'কেস স্টাডির' দেশে পরিণত হয়েছি। তারা আফ্রিকার দেশগুলোর কাছে আমাদের দেশকে তুলে ধরছে।’

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) নগরীর আগ্রাবাস্থ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে উন্নয়নের এক দশক শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তথমন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, ‘২০০৮ সালের দিকে দেশের জনগনের ৪১ শতাংশ দারিদ্র সীমার নিচে বাস করত। এখন সেটি অর্ধেকে নেমে মাত্র ২০ শতাংশ হয়েছে। ৫০ এর দশকের কাছাকাছি আমাদের দেশ খাদ্য ঘাটতির জনপদে রূপান্তরিত হয়। তখন আমাদের জনসংখ্যা ছিল ৪ কোটি ৭০ লক্ষ। সেই থেকে এখন জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ কোটি ৭০ লক্ষ। মাথাপিছু কৃষি জমির পরিমান ২০-২৫ শতাংশ কমেছে। কারণ শহর বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্ধিত জনসংখ্যার জন্য বাসস্থান নির্মাণ করতে হয়েছে। এছাড়া অবকাঠামো উন্নয়নসহ অনেক ইন্ড্রাস্ট্রি বেড়েছে।’

‘আমাদের দেশ আগে যখন দুর্যোগের কবলে পড়ত। তখন আমরা বহির্বিশে^র কাছ থেকে সাহায্য সহযোগিতা চাইতাম। আর এখন আমরা অন্য দেশগুলোকে সাহায্য সহযোগিতা করছি। নেপাল যখন ভূমিকম্পে ক্ষতির মুখে পড়ে, তখন আমরা তাদেরকে ৩০ হাজার টন চাল সহায়তা দিয়েছি। শ্রীলঙ্কায় যখন দুর্যোগ হলো, বাংলাদেশ তখন সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। অর্থ্যাৎ এখন সব উল্টে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘আজ থেকে ১০-১৫ বছর আগেও বিদেশ থেকে পুরোনো কাপড় আমাদের দেশে আসতো। সে কাপড় ধোলাই ও ইস্ত্রি করে ঢাকার বঙ্গোবাজার আর চট্টগ্রামের জহুর হকার মার্কেটে বিক্রি হতো। আর সেই কাপড় কিনে আমরা উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষেরা সেগুলো পরতাম। আর এখন আমরা নতুন কাপড় তৈরি করে বিদেশে পাঠাচ্ছি। তারা সেগুলো পরছে। এ পরিবর্তন শেখ হাসিনার জাদুকরি নেতৃত্বের জন্যই সম্ভব হয়েছে।’

‘আজ থেকে ১০ বছর আগে ভরদুপুরে বা সন্ধ্যার পরে ঢাকাসহ চট্টগ্রাম শহরের অলিতে গলিতে ‘মা আমাকে একটু বাসি ভাত দেন’ এমন ডাক শোনা যেত। এখন সেটি শোনা যায় না। কারণ আমরা বাসি ভাতের সমস্যা আমরা সমাধান করেছি। তাই এখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পোস্টারে ‘ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত’ এখন আর লিখি না। এখন শুধু ‘দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ’ লিখা হয়। এই বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ আমরা ক্ষুধাকে জয় করেছি। না হয় দেশ খাদ্য রপ্তানিকারক হতে পারত না।’

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য উপ কমিটির সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে সভায় মুখ্য আলোচক ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন, বিশেষ অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সংসদ সদস্য এমএ লতিফ ও চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম।

সভার শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুছ ছাত্তার।

এসময় সংসদ সদস্য এমএ লতিফ বলেন, জাপানের মিনারেল রিসোর্সেস নেই। একইসাথে কোরিয়াও খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ দেশ নয়। কিন্তু ভেনিজুয়েলা, নাইজেরিয়া খনিজ সম্পদে ভেসেও কিছুই করতে পারেনি। কিন্তু  চীন, জাপান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া তাদের জনসম্পদের কারণে এগিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, টানেল হয়ে যাচ্ছে এর জন্য চট্টগ্রামের মানুষকে আন্দোলন করতে হয়নি। কিন্তু একটি শাহ আমানত সেতুর জন্য ১২ বছর আন্দোলন করতে হয়েছিল। আর প্রধানমন্ত্রী এখন দেশে ১০০ ইকোনমিক জোনও করে দিচ্ছেন। কিন্তু সেগুলোতে কাজ করার জন্য আমাদের দক্ষ জনবল নেই। সেজন্য আমাদের সন্তানদের কারিগরি শিক্ষামুখি করতে হবে।

সভায় এফবিসিসিআই, চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক, বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

-সিভয়েস/এএফ/এসসি

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়