Cvoice24.com


খাগড়াছড়ি আওয়ামী লীগের সম্পাদক পদ পেতে ছয় প্রার্থী মাঠে

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১৩ নভেম্বর ২০১৯
খাগড়াছড়ি আওয়ামী লীগের সম্পাদক পদ পেতে ছয় প্রার্থী মাঠে

আগামী ২৪ নভেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কাউন্সিল। দীর্ঘ সাত বছর পর অনুষ্ঠেয়  কাউন্সিলকে ঘিরে সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে আধা ডজন প্রার্থী এখন মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সভাপতি পদে বিগত কাউন্সিলে ৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও এবার অন্যতম সহসভাপতি অধ্যক্ষ সমীর দত্ত চাকমা ছাড়া আর কেউই মুখ খুলেননি। কয়েক দিন আগে তিনি তাঁর ফেসবুকে প্রার্থিতার ঘোষণা দিয়ে দলের নেতাকর্মীদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

সাধারণ সম্পাদক পদে এখন পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মনির হোসেন খান, জেলার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী, মাটিরাঙ্গার পৌর মেয়র মো. শামছুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম. এ. জব্বার, দলে নবাগত সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শানে আলম এবং জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক মো. দিদারুল আলম প্রচারণা শুরু করেছেন।

এই ছয় প্রার্থীর মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী মো. দিদারুল আলম এর আগে জেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ‘পাহাড়ি-বাঙালি’ ভারসাম্য নীতিরই প্রতিফলন ঘটে আসছে। কোন কোন উপজেলাতেও এটিই অঘোষিত নিয়মেই পরিণত হয়েছে। অতীতের সেই ধারাবাহিকতায় এবারও তাই বহাল থাকার সম্ভাবনা বেশি।
সাধারণ সম্পাদক পদে দিদারুল আলমের সাথে পাল্লা দিয়ে ব্যানার-ফেস্টুনের প্রচারণায় নেমেছেন নির্মলেন্দু চৌধুরী এবং মনির হোসেন খান।

তবে কোন ধরনের প্রচার-প্রচারণায় না গিয়ে কাউন্সিলরদের সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ এবং টেলিফোনে নিজের পক্ষে রায় কামনা করছেন মো. শানে আলম। নির্বাচনী কৌশলে দক্ষ প্রার্থী হিসেবে পরিচিত এই জনপ্রতিনিধি সব সময় নীরবেই নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়ে যান বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

নিজের প্রার্থীর কথা স্বীকার করে শানে আলম জানান, আনুষ্ঠানিক প্রচারণার চেয়ে কাউন্সিলরদের আন্তরিকতাই জরুরি। সে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। দলের শীর্ষ নেতাদের নির্দেশের বাইরে যাবো না।

মো. দিদারুল আলম সবার আগেই প্রচারণায় নেমেছেন। এরই মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীমের সাথেও দেখা করেছেন। প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য হিসেবে তাঁকেও শক্তিশালী প্রার্থী মনে করছেন নেতাকর্মীরা।

তিনি জানান, ভেদাভেদ ভুলে সবাই একমঞ্চে থাকলে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সুফল পাবেন। আমরা একটি সংগঠিত-সংহত আওয়ামী পরিবারের জন্যই এগিয়ে যাচ্ছি।

অন্য প্রার্থীদের নির্মলেন্দু চৌধুরী ও শামছুল হক দুজনই একে-অপরের ঘনিষ্ঠ। তাঁরা দুজন একই সাথে জেলা সভাপতি ও সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা’র বিশ্বস্ত বলে মাঠে প্রচার আছে। শেষতক এই দুই জনের যেকোন একজন  সরে যাবেন বলেই নেতাকর্মীদের ধারণা।

এই দুই নেতা জানান, তাঁরা দলের দুঃসময়ে কঠিন দায়িত্ব পালন করেছেন। দলের নীতি-আদর্শ এবং গঠনতান্ত্রিক ধারাবাহিকতার প্রতি অবিচল ছিলেন এবং থাকবেন। 

জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মনির হোসেন খান একজন ত্যাগী রাজনীতিক। খাগড়াছড়ির আওয়ামী রাজনীতিতে অত্যন্ত ত্যাগী ও মেধাবী ছাত্রনেতা মারুফ-মাসুদের স্বজন হিসেবে তাঁর প্রতি পুরনো রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের আন্তরিকতা লক্ষণীয়। তবে দলের শীর্ষ নেতাদের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি সে ধরনের কোন অনুকম্পা দেখছেন না বলে ক্ষুব্ধ জেলার ত্যাগী নেতাকর্মীরা।

খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, জাতির জনকের হাতে গড়া দল আওয়ামী লীগ একই সাথে একটি সুদৃঢ় আদর্শিক ভিত্তিতেই পরিচালিত হয়। বড়ো দল হিসেবে নেতৃত্বের সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকাটা স্বাভাবিক। তবে কাউকে দলের শৃঙ্খলা ও গঠনতন্ত্র বিরোধী কাজে প্রশ্রয় দেয়া হবে না।

তিনি দাবি করেন, দলের পুরনো ও পরীক্ষিত নেতারাই প্রাধান্য পাবেন। নবাগত ও অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা আছে। আস্তে আস্তে তাদের লাগাম টেনে ধরা হবে।

সিভয়েস/আই

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়