Cvoice24.com


ঘর চুরির আশঙ্কায় আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছে না উপকূলবাসীরা

প্রকাশিত: ১০:৫১, ৯ নভেম্বর ২০১৯
 ঘর চুরির আশঙ্কায় আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছে না উপকূলবাসীরা

ছবি : আকমাল হোসেন

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ বাংলাদেশ-ভারত উপকূলের দিকে ক্রমশ ধেয়ে আসছে। খুলনা, বরিশালে ১০ নম্বর ও চট্টগ্রামে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশন থেকে মাইকে “বুলবুলের” ভয়াবহতার কথা বলে মাইকিং করা হলেও সাড়া নেই উপকূলবাসির।

উপকূল এলাকায় খেজুর তলা, মুসলিমাবাদ বেড়ি বাঁধ, চড় পাড়া, লিংক রোডের কিছু অংশে কয়েকহাজার পরিবারের বসতি। এ এলাকার বাসিন্দারা নিজ থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছেন না। এমনকি জোর করেও তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া যাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তবে উপকূলবাসীদের ভাষ্য অতীতে আমাদের এখানে কিছু হয়নি বরং আমরা আমাদের ঘর ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে গেলে ঘর চুরির আশঙ্কা বেড়ে যায়।

আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসহান মুরাদ বলেন, নগরীতে আমাদের ৭২টির মতো আশ্রয় কেন্দ্র আছে। বেঁড়িবাধ সংলগ্ন অন্যান্য এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে আনতে আমরা সর্বাত্মক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু তারা কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে আসছেন না। ট্যুরিস্ট পুলিশ, সিটি করপোরেশনের লোকজনও আমাদের সাথে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে চট্টগ্রামে খোলা হয়েছে প্রায় ৪হাজার আশ্রয়কেন্দ্র। এসব কেন্দ্রে যেতে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। আজ সকালেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়।

৪০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জয়নাল আবেদিন সিভয়েসকে বলেন, আমাদের ৯টি আশ্রয় কেন্দ্র আছে এবং ১টি মেইন সেন্টার করা হয়েছে পতেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়তে। কিন্তু উপকূলে বসবাসরতদের বলেও আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে আনতে পারছি না। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, যখন বাতাসের বেগ বৃদ্ধি পেতে শুরু করে তখন তারা(উপকূলবাসী)সরে যেতে তাড়াহুড়া শুরু করেন।

তিনি আরো বলেন,ইপিজেডের পশ্চিম দিকে বেড়িবাঁধের বাইরের যারা বসবাস করছে তাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি।কারণ সেখানে জলোচ্ছ্বাস হলেই পানিতে ডুবে যাবে ঘরবাড়ি। এ ব্যাপারে আমি জেলা প্রশাসনের এডিসিকে জানিয়েছি।

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় উপকূলীয় বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে মাঠে নেমেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে বেড়িবাঁধ এলাকায় সকলকে  সরিয়ে নেওয়াসহ মাইকিং করে সসচেতন করছেন।

এ ব্যাপারে নগর ছাত্রলীগের উপ-গণযোগাযোগ সম্পাদক মিজানুর রহমান সিভয়েসকে বলেন, খেজুর তলা, মুসলিমাবাদ, মিরাপাড়া এলাকায় ছাত্রলীগের মাঈন,পারভেজ,আরেফিন কয়েকটি দল নিয়ে কাজ করছে।     

জেলা প্রশাসনের স্টাফ অফিসার তানভীর ফরহাদ শামীম জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। শুকনো খাবারের পাশাপাশি ভাত-খিছুড়ি আয়োজনের নির্দেশনা রয়েছে। একই সাথে থাকছে পানি ও চিকিৎসার ব্যবস্থা ।

জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন জানান, চট্টগ্রামে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৪৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও ২ হাজার ২৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১ হাজার ২৫০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। সম্ভাব্য দুর্যোগে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অধিদফতরের বরাদ্দকৃত ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা জিআর ক্যাশ, ৩৪৯ মেট্রিক টন জিআর চাল, ৬৮১ বান্ডিল ঢেউটিন, দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ৫০০ তাঁবু প্রস্তুত রাখা হয়েছে।


-সিভয়েস/এসসি

আকমাল হোসেন

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়