‘ভুল চিকিৎসা’র অভিযোগ, মৃত্যু পথযাত্রী শিশু ইয়ামিন
নগরের হালিশহর থানার ছোটপুল এলাকায় ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে মো. ইয়ামিন নামের এক শিশু মৃত্যু পথযাত্রী বলে অভিযোগ উঠেছে। শিশুটি নগরের সিটি স্কুল থেকে এবারের প্রাইমারি স্কুল সার্টিফিকেট (পিএসসি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা রয়েছে। কিন্তু ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণে বর্তমানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে শিশুটি।
এদিকে ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবার দাবি করছেন, গত ৩১ অক্টোবর শিশু ইয়াসমিন চোখে যন্ত্রণা অনুভব করলে তার পরিবার স্থানীয় ডা. সইয়দ মোহাম্মদ জাফর উল্লাহ’র শরণাপন্ন হোন। কিন্তু ডাক্তার কোন পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই কিছু এন্টিবায়োটিক ঔষধ প্রয়োগ করলে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে শিশুটির রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনার পর একাধিকবার চেষ্টা করেও ডাক্তারের সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি বলেও সিভয়েসকে জানায় পরিবারটি।
পরিবার সূত্র জানায়, গত ৩১ অক্টোবর ইয়ামিন স্কুলের প্রাইভেট পড়তে গিয়ে চোখে যন্ত্রণা অনুভব করলে বাসায় চলে আসে এবং পরিবারকে চোখের সমস্যার কথা জানায়। পরে তার পরিবার ছোটপুলের ব্রিকফিল্ড এলাকার খাজা ড্রাগ ফার্মেসিতে ডা. সইয়দ মোহাম্মদ জাফর উল্লাহ কে দেখালে তিনি কোন পরীক্ষা ছাড়া ইয়ামিনকে ওষুধ লিখে দেন। পরে সেসব ওষুধ খাওয়ার পরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ইসলামিয়া ব্যাংক হাসপাতালে।পরবর্তীতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের আইসিইউ তে নেন পরিবারের সদস্যরা। সেখানে ডাক্তাররা তাকে আইসিউতে রেখে চিকিৎসা দিলেও শিশুটির শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে নেয়া হয় ঢাকার এ্যাপোলো হাসপাতালে।
ইয়ামিনের ছোট চাচা রহমান বাবুল এ্যাপোলো হাসপাতাল থেকে সিভয়েস কে বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার এ্যপোলো হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষার পরে জানা যায় ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে অকেজো হয়ে পড়েছে তার দুই কিডনি। এছাড়াও ফুসফুসে পানি চলে এসেছে, বন্ধ হয়ে গেছে পাকস্থলী সংক্রান্ত স্বাভাবিক শরীরবৃত্তীয় কাজ।
এসব জানার পর আবারো ঐ ডাক্তারের সাথে মুঠোফোনের যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
এছাড়াও গত সপ্তাহেও শিশুটির শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ার পর ডাক্তারটির চেম্বারে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেখানেও চেম্বারটি বন্ধ দেখতে পান শিশুটির পরিবার।
ডা. জাফর উল্লাহ কে দেখানোর পর শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় উল্লেখ করে শিশুটির চাচা রহমান বাবুল বলেন, ঢাকার এ্যপোলো হাসপাতালের ডাক্তাররা বলছেন এখন আল্লাহর উপর ভরসা করা ছাড়া অন্য কোন পথ নেই। মৃত্যপথযাত্রী শিশুটির শরীরের চামড়া কালো হয়ে গেছে। চোখ নষ্টের দিকে যাচ্ছে বলেও জানান তার পরিবার।
পরিবারের অভিযোগের ব্যাপারে ডা. সইয়দ মোহাম্মদ জাফর উল্লাহ কে ফোন করা হলে তার ব্যবহৃত ২টি নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন আজিজুল হক সিদ্দীকি সিভয়েস কে বলেন, আমাদের কাছে এ ব্যাপারে কোন অভিযোগ আসে নি। যদি ভুল চিকিৎসার তথ্য সত্য হয়ে থাকে তবে অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে শিশুটির এমন দূরবস্থায় গতকাল রাতে হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বরাবর অভিযোগ করেন পরিবারটি।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে সংশ্লিষ্ট বরাবর যোগাযোগ করা হলে হালিশহর থানার ওসি ওবায়েদুল হক সিভয়েস কে বলেন, কাল রাতে ইউসুফ (শিশুটির বড় চাচা) নামে এক ব্যক্তি আমাদের ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার ব্যাপারে লিখিত একটি অভিযোগ করেছেন। ব্যাপারটি আমলে নিয়ে আমরা সেটির তদন্ত করছি।
সিভয়েস/ এএইচ/এএস
সিভয়েস প্রতিবেদক