Cvoice24.com


কক্সবাজাারে তারেক হত্যা : সন্তানের খুনিদের চিনতে পারার দাবি বাবার

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ১৯ অক্টোবর ২০১৯
কক্সবাজাারে তারেক হত্যা : সন্তানের খুনিদের চিনতে পারার দাবি বাবার

 খুন হওয়া মো: তারেকের ছবি‘র দিকে তাকিয়ে আছেন বাবা

কক্সবাজারের পশ্চিম বাহারছড়ার বাসিন্দা টমটম চালক মো. তারেকে‘র (২১) খুনিদের চিনতে পেরেছে বলে দাবি করেছেন বাবা। আর সেই সূত্র ধরেই এগুচ্ছে পুলিশ।

নিহত তারেকের বাবা আমিরুল ইসলাম জানান, তার ছেলে খুন হয়েছে এক সপ্তাহ হয়। এই ঘটনায় পুলিশ গতকাল রাত পর্যন্ত ২ জনকে আটক করেছে। কিন্তু মূল হত্যাকারীকে এখনো পুলিশ আটক করতে পারেনি। আমিরুল ইসলামের দাবি তার সন্তানকে খুন করেছে একই এলাকার নাছিরের ছেলে জাহাঙ্গীর ও তার সহযোগীরা।

এটি তিনি কিভাবে নিশ্চিত হলেন এমন প্রশ্নে বলেন, যেই রাতে মো. তারেক খুন হয় সেই রাতেই চা খাওয়ানোর কথা বলে জাহাঙ্গীর তাকে ঘর থেকে বের করে। পরদিন সকালে যখন ডায়াবেটিক পয়েন্ট থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তারেকের লাশ উদ্ধার হয়। তখন নিহতের স্ত্রী সাগরিকা স্বামীর নাম্বারে (০১৮৪০৯০০০০৩) ফোন করলে ওই নম্বর রিসিভ করে জাহাঙ্গীর।

মোবাইলে সাগরিকা কে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর তার নাম বলে। তখন সাগরিকা জানতে চায়  তারেকের নম্বর কেন আপনার কাছে?  তখন জাহাঙ্গীর বলে ভুলে তার কাছে চলে আসছে। আবার সাগরিকা জানতে চায় আপনি কি জানেন  তারেক মারা গেছেন? এর উত্তরে জাহাঙ্গীর বলে, ‘তারেক মারা গেলে আমি কি করতান। পুলিশ আমার কিছু করতে পারবে না'। এই বলে জাহাঙ্গীর মোবাইল বন্ধ করে দেয়। আর সেই থেকে নিহত মো. তারেকের মোবাইলে রিং যাচ্ছে না এবং জাহাঙ্গীরও এলাকা থেকে পলাতক। 

এই ঘটনার মাধ্যমে নিহতের বাবা নিশ্চিত হয়েছে তার সন্তানকে জাহাঙ্গীর ও তার সহযোগীরা খুন করেছে।

এ হত্যাকাণ্ডের সাথে আর কেউ জড়িত আছে কিনা এমন প্রশ্নে নিহতের বাবা বলেন, জাহাঙ্গীরের সাথে এই হত্যায়  জড়িত রয়েছে একই এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে মিজান প্রকাশ শিয়াল্লা (২৮)। তাকে পুলিশ ঘটনার পরদিন (১৩ অক্টোবর) আটক করে হাজতে প্রেরণ করেছে। এছাড়া রয়েছে একই এলাকার হামিদ। যাকে পুলিশ ঘটনার দিন (১২ অক্টোবর) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। আর রহস্যজনক কারণে রাতে ছেড়ে দেয়। যদিও পুলিশ তাকে এভাবে ছেড়ে দেওয়াকে ভালভাবে নিচ্ছেন না নিহতের বাবা। এছাড়া জড়িত রয়েছে সমিতি পাড়ার কালুর ছেলে ফুতুইয়া এবং ফুতুইয়া‘র বোন জামাই শাহাবউদ্দিন। তারেকের বাবার দাবি জাহাঙ্গীরকে আটক করলেই বেরিয়ে আসবে হত্যার মূল রহস্য।

নিহতের স্ত্রী সাগরিকাও বলছে তার স্বামীকে খুন করেছে জাহাঙ্গীর। জাহাঙ্গীর তার স্বামীর কাছের বন্ধু। সে যদি প্রকৃত খুনি না হতো তাহলে মৃত স্বামীর মোবাইল কেন তার কাছে? এছাড়া খুনি না হলে কখনো পালিয়ে যেত না। বরং বন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে সহযোগিতা করত।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ আবু মো. শাহজাহান কবির জানান, হত্যাকারীদের ধরতে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তাদেরও টার্গেট জাহাঙ্গীর। যদিও এই হত্যাকাণ্ডের পরদিন (১৩ অক্টোবর) পশ্চিম বাহারছড়ার আবুল হোসেনের ছেলে মিজান প্রকাশ শিয়াল্লা (২৮) ও গত বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) নতুন বাহার ছড়ার আবুল কাশেমের ছেলে আরিফুল ইসলাম (৩০) নামে দুই জনকে আটক করা হয়। 
মিজান প্রকাশ শিয়াল্লাকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। তার লুঙ্গিতে লেগে থাকা রক্ত পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। 
উল্লেখ্য, গত শনিবার ভোরে শহরের ডায়াবেটিক পয়েন্ট সংলগ্ন বিআইএএম ল্যাবর্রেটরি স্কুলের পেছনে ঝাউবাগানে গাছের সাথে বাধা অবস্থায় টমটম চালক মো. তারেকের লাশ দেখতে পায় পথচারীরা। পরে ঘটনাস্থলে এসে নিহতের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাকে মারাত্মকভাবে জখম করে খুন করা হয়েছে।

সিভয়েস/আই

 

 

কক্সবাজার প্রতিনিধি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়