Cvoice24.com


'পিতৃতুল্য হিসেবে ক্ষমা চাইছি'

প্রকাশিত: ১৪:৪৪, ১১ অক্টোবর ২০১৯
                        'পিতৃতুল্য হিসেবে ক্ষমা চাইছি'

ফাইল ছবি।

বুয়েট অডিটোরিয়ামে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এক বৈঠকে উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম নিজের ঘাটতির কথা স্বীকার করেছেন। বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে রোষানলে পড়ে আবরার হত্যার চারদিন পর শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টায় কানায় কানায় পূর্ণ বুয়েট অডিটোরিয়ামে এক বৈঠকে নিজের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করলেন তিনি। শুরুতেই আবরারের জন্য পালন করা হয় এক মিনিট নীরবতা।

আবরারের খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার, আবরার হত্যা মামলার সব খরচ এবং ক্ষতিপূরণ বুয়েট থেকে বহ করান, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্বল্পতম সময়ে মামলা নিষ্পত্তি, অবিলম্বে অভিযোগপত্র প্রকাশ, বিভিন্ন সময়ে নিরর্যাতনে জড়িতদের ছাত্রত্ব বাতিল এবং বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি ছিল তাদের দশ দফার মধ্যে।

তাদের ওই দশ দফার প্রতি সংহতি জানিয়ে আলাদাভাবে সাত দফা দাবি জানায় বুয়েট শিক্ষক সমিতি। রাজনীতি বন্ধের পাশাপাশি দায়িত্বে ‘ব্যর্থতার’ অভিযোগে এর মধ্যে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিও রয়েছে।

ছাত্রলীগের কর্মীদের মারধরে আবরার নিহতের পর ‘দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থতার জন্য’ সমালোচনা আর চাপের মধ্যে ছিলেন উপাচার্য সাইফুল ইসলাম।

বৈঠকে আবরার খুন হওয়ার পর তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু ঘাটতি থাকার কথা স্বীকার করে অধ্যাপক সাইফুল হলভর্তি শিক্ষার্থীদের সামনে বলেন, “আমার ঘাটতি ছিল। পিতৃতুল্য হিসেবে আমি তোমাদের কাছে ক্ষমা চাইছি।”

উপাচার্য বলেন, তোমাদের ১০টা দাবি আমি হাতে পেয়েছি। তোমরা আমার সন্তানের সমান। সন্তানের মত মনে করি। সিসি টিভি থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত অনুসারে… আমরা সরকারের উঁচু পর্যায়ে যোগাযোগ করেছি।

বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে গত রোববার রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। তারপর থেকেই আন্দোলন চালিয়ে আসছেন এই শিক্ষার্থীরা।

বুয়েটের ঘটনার পর ওই আরও মহল থেকেও ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি ওঠে। এই প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তিনি ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে নন। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বুয়েট তাদের ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে পারে।

বৈঠকে শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন উপাচার্য। তিনি বলেন, তোমাদের দাবির প্রেক্ষিতে মামলার এজাহারভুক্ত ১৯ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হল। পাশাপাশি বুয়েটে কোনো রকমের সাংগঠনিক রাজনীতি থাকবে না। আবরারের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে এবং মামলার খরচ বুয়েট কর্তৃপক্ষ বহন করবে। বিচারকাজ দ্রুত শেষ করতে সরকারকে চিঠি দেওয়া হবে। বুয়েটে র‌্যাগিং বন্ধ হবে।

এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের সামনে এলে তাকে আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে পড়তে হয়। শিক্ষার্থীরা সেদিন তাকে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা তার কার্যালয়ে তালাবন্ধ করে রাখে। আবরারের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে বুধবার কুষ্টিয়া গিয়েও এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে ফিরে আসতে হয় অধ্যাপক সাইফুলকে।

-সিভয়েস/এসসি

সিভয়েস প্রতিবেদক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়