Cvoice24.com


বারই পাড়া খাল খননে ভূমি অধিগ্রহণে অনুমতি পেল চসিক

প্রকাশিত: ১৪:৫৩, ১ অক্টোবর ২০১৯
বারই পাড়া খাল খননে ভূমি অধিগ্রহণে অনুমতি পেল চসিক

বহদ্দার হাট বারই পাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল নতুন খনন প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণের অনুমতি পেল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। ফলে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চুড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। 

খাল খনন প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পূর্ব বাকলিয়া, পশ্চিম বাকলিয়া, দক্ষিণ বাকলিয়া, শুলকবহর, মোহরা, চান্দগাঁওসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন হবে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। 

তিনি বলেন, বারই খাল সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা। এখানে নগর উন্নয়ন বা যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা জলাবদ্ধতা। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর জটিলতায় ভরা এই প্রকল্পটি শুরু করার উদ্যোগ নিই। এরই ধারাবাহিকতায় আজ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়া গেছে। 

চসিক সূত্রে জানা যায়, আজ দুপুরে ঢাকায় ভূমি মন্ত্রণালয়ে ভূমি মন্ত্রী সাইফুূ্জ্জামান চৌধুরী  জাবেদের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় ভূমি বরাদ্দ কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বারই পাড়া খাল খনন প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহনে অনুমতি প্রদান করা হয়। 

এ ব্যাপারে সভায় অংশগ্রহণকারী চসিকের প্রতিনিধিত্বকারী প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মুফিদুল আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বারই খাল খনন প্রকল্পে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রকল্পটিতে ব্যয় হচ্ছে ১২৫৬ কোটি ১৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। 

২০১৪ সালের জুলাই মাসে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়। কিন্তু অর্থাভাবে ভূমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় প্রকল্পের কাজ থমকে যায়। পরবর্তীতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নে বরাদ্দকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়।

এ ব্যাপারে প্রকল্পের পরিচালক চসিকের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক বলেন, বহদ্দারহাট বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৬৫ ফুট প্রস্থ নতুন খাল খনন প্রকল্পের মূল কাজ চলতি মাসের মধ্যে শুরু হতে পারে। ২০২০ সালের জুন মাস প্রকল্প বাস্তবায়নের শেষ সময়সীমা।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এখন আর অর্থের সমস্যা নেই। প্রকল্পে সরকার অর্থ জোগান দেবে ৭৫ শতাংশ আর ২৫ শতাংশ দেবে চসিক। 

চসিক সূত্র জানায়, সরকারের কাছ থেকে এই পর্যন্ত ৯১৪ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৮৫১ কোটি টাকা ভূমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে দিয়েছে চসিক। এর আগের সরকার থেকে পাওয়া ৬৩ কোটি টাকার মধ্যে ৬০ কোটি টাকা ভূমি অধিগ্রহণে দেয়া হয়। বাকি তিন কোটি টাকা প্রকল্পের জন্য ইক্যুপমেন্ট কেনা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। 

জানা যায়, খাল খননের নতুন প্রকল্পে খালের দুই পাশে প্রতিরোধ দেয়াল নির্মাণ করা হবে। খালের উভয় দিকে ২০ ফুট করে সড়ক ও ৬ ফুট করে ওয়াকওয়ে থাকবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ১৯৯৫ সালে যে ড্রেনেজ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করেছিল তাতে তিনটি খাল নতুন খননের প্রস্তাব ছিল। এর মধ্যে একটি বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত। অন্য দুটি হলো নয়াখাল থেকে শীতল ঝর্ণা এবং মুরাদপুর থেকে বহদ্দারহাট। পরে ২০ বছরের মধ্যে ওই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা থাকলেও তা আলোর মুখ দেখেনি।

২০১৪ সালে নগরের বহদ্দারহাটসহ আশপাশে প্রধান সড়ক-উপসড়ক ও এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে সরকার বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত একটি নতুন খাল খননের জন্য ৩২৬ কোটি ৮৪ লাখ ৮১ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়। তবে প্রয়োজনীয় অর্থ না পাওয়ায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়নি। 

২০১৫ সালে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। খাল খননের সংশোধিত প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৫৬ কোটি ১৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। সংশোধিত প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর একনেকে অনুমোদন হয়।

প্রকল্পটিতে ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ এক হাজার ১০৩ কোটি টাকা এবং স্থাপনা বাবদ ১৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে। বাকি টাকা ব্যয় হচ্ছে খাল খননসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রমে। খালের গভীরতা ১২-১৩ ফুট হতে পারে। সড়কের দুই পাশে ২০ ফুট রাস্তা, ৬ফুট ওয়াকওয়ে ও সিটিং জোন করা হবে। ছয়টি সেতু এবং নদীর মুখে একটি স্লুইস গেট নির্মাণ করা হবে প্রকল্পের আওতায়।

-সিভয়েস/এসএ

উজ্জ্বল দত্ত 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়