Cvoice24.com


পরিত্যক্ত ভবন ভাঙার পাঁচ বছরেও হয়নি নতুন ভবন!

প্রকাশিত: ১৬:৪৭, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯
পরিত্যক্ত ভবন ভাঙার পাঁচ বছরেও হয়নি নতুন ভবন!

পাঁচ বছর আগে জরাজীর্ণ ভবন ভেঙে ফেলা হলেও নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের সালেহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।

পাকা দালানের একটি ভবনের তিনটি কক্ষের পাশাপাশি জরাজীর্ণ একটি টিনসেড কক্ষে চলছে পাঠদান। যেখানে বৃষ্টি হলেই বেয়ে পড়ে পানি। কর্দমাক্ত হয় কক্ষ। পাশাপাশি তীব্র গরমের কারণে ব্যাহত হয় পাঠদান। 

পুরাতন ভবন ভেঙ্গে ফেলার পর সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি তিন বছর আগেও নতুন দোতলা ভবন এবং বিদ্যালয়টি প্রাথমিক থেকে জুনিয়র বিদ্যালয় করার বার বার আশ্বাস দিলেও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় তা বাস্তবায়ন হয়নি। 

জানা গেছে, পাঁচ বছর আগেও বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থী ছিল আড়াইশ’ জনের বেশি। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পুরাতন ভবন ভেঙ্গে অস্থায়ী একটি টিনসেডের পাঠদান কক্ষ নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে টিনসেডের পাঠদানের কক্ষটি দোতলা ভবন এবং বিদ্যালয়টি প্রাথমিক থেকে উন্নীত করে জুনিয়র বিদ্যালয় করার বার বার আশ্বস্ত করলেও কর্তৃপক্ষের অবহেলায় টিনসেড জরাজীর্ণ শ্রেণিকক্ষ রূপ নেয়নি নতুন ভবনে। ফলে নানাবিধ সমস্যার মাঝেই চলছে পাঠদান। গরম মৌসুমে তীব্র গরম আর বর্ষাকালে বৃষ্টির পানিতে কর্দমাক্ত হয়ে পড়ার কারণে ব্যহত হয় পাঠদান । ফলে কমতে থাকে শিক্ষার্থী। বর্তমানে মাত্র দেড়শ’ জনের কিছু বেশি শিক্ষার্থী স্কুলে আসা যাওয়া করছে।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছিমা বলেন, আমি গত নভেম্বরে যোগদানের পর থেকেই স্কুল কমিটির সাথে মাসিক মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। কমিটির সভাপতি ও সদস্যরা টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন। সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা মাহবুব স্যার বলেছিলেন, সরকার বিদ্যালয় উন্নয়নে দুই লাখ চল্লিশ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। আগে দুই লাখ টাকার কাজ শেষ করে চল্লিশ হাজার টাকা বরাদ্দের কাজ শুরু করা হবে।

স্কুল কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. বেলাল বলেন, সতের মাস আগে দায়িত্ব নিয়েছি। দায়িত্ব নেয়ার পর বিদ্যালয়টি উন্নয়নে বিষয়টি নিয়ে ঢাকায় স্থানীয় এমপি'র বাসায় গিয়েছি কয়েকবার। উনি (এমপি) ঢাকা থেকেই কর্তৃপক্ষকে ফোন করেছিলেন। জানিয়েছিলেন টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন। সিরিয়াল অনুযায়ীই কাজ হবে। কক্ষ সংকটের কারণে বিদ্যালয়ের পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে।

এদিকে বিষয়টি নজরে আসার সাথে সাথে গত বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন।

তিনি বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে শিক্ষার্থীদের নানাবিধ সমস্যা নিয়ে ক্লাস করতে দেখে ক্ষোভের সাথে বলেন, সমস্যাটা আসলে আমাদের মানসিকতায়, আমাদের আচরণে। আমরা দায়িত্ব পালনে দায়সারা ভাব নিয়ে চলি। সরকারের গত মেয়াদে শুধুমাত্র হাটহাজারী উপজেলাতেই ৭১টি প্রাইমারি স্কুলের নতুন ভবনের কাজ শুরু হয়েছে। কিছু কিছু শেষ কিংবা চলমান রয়েছে। ১৪৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৭১টিতেই নতুন ভবন পাবে কিংবা পেয়েছে। প্রাইমারি শিক্ষা নিয়ে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ যেমন করছে শিক্ষকও নিয়োগ দিয়েছে। শুধু তাই না সরাসরি প্রকল্পের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের সীমানা দেয়াল এবং গেইটও নির্মাণ করে দিচ্ছে। এক কথায় বলা যায় মহাযজ্ঞ চলছে। কিন্তু নতুন স্কুল ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে কোন স্কুলটাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে তাও যদি আমরা না বুঝি, এ দোষ কি সরকারের। 

তিনি আরো বলেন, এই স্কুলের পুরাতন ভবন ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে ৫ বছর আগে। তিনটি রুম নিয়ে চলছে পাঠদান। বৃষ্টি হলেই দুইটি ক্লাসরুম কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা কেউ কেউ পা পিছলে পড়েছেও কয়েকবার। টিনের ছাদে প্রচন্ড গরম তো আছেই। ৭১টা বিদ্যালয়ের ভবনের আগে এই বিদ্যালয়টিতে ভবন বরাদ্দের বিষয়টি সবার আগে আসা উচিত ছিল। আমি খবর পেয়েই বিদ্যালয়টিতে সিমেন্ট বালু আর ইট নিয়ে নিয়ে গিয়েছি। আশা করছি দু’একদিনের মধ্যে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে।

-সিভয়েস/এসএ/এস
 

বোরহান উদ্দিন, হাটহাজারী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়