Cvoice24.com


পর্যটন নগরী কক্সবাজারে সড়কের এ কী হাল!

প্রকাশিত: ০৬:৫০, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯
পর্যটন নগরী কক্সবাজারে সড়কের এ কী হাল!

পর্যটন নগরী কক্সবাজারের প্রধান সড়কসহ প্রায় সবকটি উপ-সড়কের অবস্থা বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। পুরো সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে খানা-খন্দক আর বড় বড় গর্ত। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয় জনগণসহ দেশের নানাপ্রান্ত থেকে বেড়াতে আসা পর্যটকরা। ভুক্তভোগীরা বলছে এটি পর্যটনগরীর স্মরণকালের দুর্ভোগ। বিগত বছরগুলোতে সড়কের এমন বেহাল দশা তারা দেখেনি। এদিকে সড়কের দুরবস্থার কথা স্বীকার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

জেলা প্রশাসক জানান, পর্যটন নগরীর সড়কের উন্নয়নে ৮৭ কোটি টাকার টেন্ডার হয়েছে। তা বাস্তবায়ন হলে উন্নতমানের পর্যটন কেন্দ্রের সড়ক হবে এ নগরীতে।
কক্সবাজারে পর্যটন জোন কলাতলী থেকে বাজারঘাটা হয়ে লিংকরোড় পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়কের কোথাও স্বাভাবিক অবস্থা নেই। পুরো সড়কজুড়েই সৃষ্টি হয়েছে খানা-খন্দক আর বড় বড় গর্ত। প্রধান সড়কের সার্কিট হাউস, লালদীঘির পাড়া, বাজারঘাটা, বার্মিজ মার্কেট, খুরুশকুল রাস্তারমাথা, তারাবনিয়ার ছড়া, হাসেমিয়া মাদ্রাসা, আলির জাহাল, বাসটার্মিনাল ও লিংক রোড়ের অবস্থা শোচনীয়। এছাড়া প্রায় ৩০ টি উপসড়কের অবস্থাও বেহাল। সড়কের এই দূরাবস্থার কারণে পর্যটক সহ স্থানীয়দের দুর্ভোগের শেষ থাকছে না। এতে জনগণ ঠিকমত চলাচল করতে পারছে না, সৃষ্টি হচ্ছে যানজট আর প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। ভুক্তভোগীরা বলছে এই দৃশ্য স্মরণকালের। এর আগে সড়কের এমন বেহাল অবস্থা আগে দেখেনি। আর এর জন্য দায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

শহরের এইচএম নজরুল নামের এক যুবক জানান, কক্সবাজার এখন দুর্ভোগের নগরীতে পরিণত হয়েছে। পর্যটকদের কাছে আমরা লজ্জিত। সড়কের এমন বেহাল দশা আগে কখনও দেখিনি। এরজন্য দায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ সকল দায়িত্বশীলরা। তাদের অবহেলার কারণে যেন পাপের বোঝা বহন করেছে জেলাবাসী।

বাহারছড়ার মফিজুর রহমান নামের আরেকজন জানান, পৌরসভার সড়কের এমন দৃশ্য আমরা কখনও প্রত্যাশা করিনি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের প্রত্যাশা দায়িত্বশীলতের অবহেলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সড়কগুলো ঠিক করে দেওয়া হউক।

রুহুল আমিন সিকদার নামের এক সচেতন ব্যক্তিত্ব জানান, পৌরসভার সড়কের এ দুরাবস্থার জন্য পৌরসভা, উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, সড়ক ও জনপথ বিভাগ সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়ী। তাদের দায় এড়ানোর কোন সুযোগ নেই। তাই তাদেরকেই পর্যটন নগরীর স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে দিতে হবে। অন্যতায় জেলাবাসী তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দেবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী একব্যক্তি জানান, বড় আশা করেই জনপ্রতিনিধিদের ভোট দিয়েছি সড়ক সহ এলাকার শান্তি রক্ষার্থে। কিন্তু উপহার হিসেবে পেলাম দুর্ভোগ। এমনটা প্রত্যাশা করিনি।

সড়কের বেহাল দশার কথা স্বীকার করে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদ বলেন, বর্তমানে শহরের সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। তবে আমরা চেষ্টা করছি নিজস্ব অর্থায়নে কিছু কিছু জায়গায় ঠিক করছি। দুই-এক দিনের মধ্যে ঢাকা গিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করে সড়ক সংস্কারের মাধ্যেমে এই দূর্ভোগ লাগোবের ব্যবস্থা করব। এছাড়া কক্সবাজার উন্নয়নে যে প্লান আছে তা বাস্তবায়ন হলে এই শহরের চিত্র পাল্টে যাবে এটি হবে একটি আধুনিক সড়ক সম্পন্ন আধুনিক পর্যটন নগরী।

এদিকে এই দুর্ভোগের ব্যাপারে জানতে পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।

জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন জানান, কক্সবাজার পৌরসভার সড়কগুলোর দায়িত্বে রয়েছে পৌরসভা, সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এ ৩ সংস্থার সাথে মিটিং হয়েছে। পর্যটন নগরীর উপযোগী রাস্তার জন্য ইতোমধ্যে ৮৭ কোটি টাকার টেন্ডার হয়ে গেছে। আর দ্রুত সময়ের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন হবে।

সচেতন মহল বলছেন, পর্যটন নগরীর সড়কের এমন বেহাল অবস্থা তারা প্রত্যাশা করেনি। তাদের চাওয়া দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কগুলো ঠিক করে জনজীবনে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরি আসুক। ধরে রাখা হউক পর্যটন নগরীর সুনাম।

সিভয়েস/এএইচ

ওমর ফারুক হিরু, কক্সবাজার

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়