Cvoice24.com


চাকরির নামে প্রতারণা, দুজনকে জেল হাজতে প্রেরণ

প্রকাশিত: ১৬:৫৯, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯
চাকরির নামে প্রতারণা, দুজনকে জেল হাজতে প্রেরণ

ছবি-প্রতিনিধি

‘বিএমএম ফাউন্ডেশন’ নামে একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নাম করে লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় আটক কথিত চার কর্মকর্তার মধ্যে দুজনকে সন্দেহভাজন দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। তবে ওই সংস্থাটি ভুয়া প্রমানিত হওয়ার পরেও পুলিশের এমন কর্মকাণ্ডে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগীরা।

পুলিশ বলছে সব খতিয়ে দেখে চার জনের মধ্যে দুজনকে সন্দেহভাজন দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে এরমধ্যে কেউ তাদের বিরুদ্ধে মামলা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আদালতে প্রেরণ করা দুজন হলেন, ‘বিএমএম ফাউন্ডেশন’ নামে ভুয়া ওই প্রতিষ্ঠানটির কথিত চেয়ারম্যান এসএম মাসুম বিল্লাহ ও ফিন্যান্স অফিসার আবুল বশর খাঁন শাহাদাত হোসেন।

বিডি জবস’র মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেয় ‘বিএমএম ফাউন্ডেশন’ নামে একটি ভুয়া সংস্থা। এতে ৪টি শূণ্য পদে ১২ জন লোক নেওয়ার কথা। ১২টি শূণ্য পদের জন্য ইন্টারভিউ ফি বাবদ ৩০০ টাকা করে ১২’শ প্রার্থীর কাছ থেকে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা আদায় করে। এসময় পরীক্ষার্থীদের সন্দেহ হলে তারা সংস্থার কাগজপত্র এবং ওয়েবসাইট দেখতে চান। এসবের কোন সদুত্তর দিতে না পারায় চাকরি প্রার্থীরা একটি কক্ষের ভেতরে তাঁদের আটকে রেখে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশের এসআই প্রদীপ কুমারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

অভিযুক্ত ওই চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নেয়া ব্যবস্থায় সন্তুষ্ট নন ভুক্তভোগীরা। হাতেনাতে আটককৃত চার কর্মকর্তার মধ্যে দুজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে দেখিয়ে অন্য দুজনকে ছেড়ে দেয়ার মধ্যে কোন ধরনের রহস্য আছে বলে ধারণা করছেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগী প্রার্থী মোহাম্মদ জয়নাল আবেদিন জনি জানান, ওই সংস্থাটি সম্পূর্ণ ভূয়া প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু পুলিশ তাদের সন্দেহভাজন হিসেবে দেখিয়েছে। তারা এতগুলো মানুষের সাথে প্রতারণা করার পরেই পুলিশের এমন পদক্ষেপ ভাল হয়নি।

রায়হান ইকবাল নামে আরেক প্রার্থী জানান, বিএমএম ফাউন্ডেশনের এনজিও ব্যুরো’র পক্ষ থেকে অনুমোদনের বৈধ কোন কাগজ-পত্র নেই। এছাড়া তারা ৩০০ টাকা করে পরিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে।  পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছে। বাধ্যতামূলক টাকা আদায় সহ তাদের বিরুদ্ধে নানা অপকর্ম প্রমানিত হওয়ার পরেও পুলিশের এমন ব্যবস্থা সবাইকে হতাশ করেছে। 

কক্সবাজার মডেল থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) খায়রুজ্জামান জানান, ইন্টারভিও’র নামে প্রার্থীদের সাথে প্রতারণার অভিযোগে বিএমএম ফাউন্ডেশনের চার কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছিল। তার মধ্যে ওই সংস্থার চেয়ারম্যান এসএম মাসুম বিল্লাহ ও ফিন্যান্স অফিসার আবুল বশর খাঁন শাহাদাত হোসেনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ তারা ছিল ইন্টারভিও গ্রহণকারী। সংস্থাটি এনজিও ব্যুরো’র কোন কাগজ-পত্র দেখাতে না পারলেও তারা কিছু বৈধতার কাগজপত্র দেখাতে পেরেছে। এই অবস্থায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মামলা বা অভিযোগ দায়ের করলে তা গ্রহণ করা হবে। আর তা প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ‘বিএমএম ফাউন্ডেশন’ নামে একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নাম করে কয়েক’শ ব্যক্তির কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠে।  শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের তারাবনিয়ার ছড়াস্থ শহীদ তিতুমীর ইনস্টিটিউটে চাকরির ইন্টারিভিউ নিতে গেলে প্রতারক চক্র ধরা পড়ে। এসময় প্রতারণার ফাঁদে পড়া চাকরি প্রার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওই সংস্থার চার কর্মকর্তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

সিভয়েস/এএস

কক্সবাজার প্রতিনিধি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়