Cvoice24.com


‌‌‘বাঁচতে হলে জানতে হবে’

প্রকাশিত: ১৫:৩৮, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯
‌‌‘বাঁচতে হলে জানতে হবে’

খাদ্যে ভেজাল, অপরিস্কার-অপরিছন্ন পরিবেশে খাদ্য উৎপাদন, পরিবেশন ও বাজারজাতকরণ, ভোক্তা হিসাবে পণ্য ক্রয় ও সেবা ব্যবহারে ভোক্তা হিসাবে প্রতিনিয়তই জনগণ ভোগান্তির শিকার ও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। অনেকেই এটাকে নিয়তির নিয়ম হিসাবে মেনে নিচ্ছেন। আবার অনেকেই জানেন না, ভোক্তা হিসাবে প্রতারিত হলে আইনী প্রতিকার পাওয়া যায়। অন্যদিকে “বাঁচতে হলে জানতে হবে”, শ্লোগানের মতো জেনে শুনে যাচাই করে খাদ্য, পণ্য ও সেবা গ্রহণ করতে হবে। না হলে প্রতারিত হবার সম্ভাবনাই বেশি। 

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) চান্দগাঁও সিডিএ স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে নিরাপদ খাদ্য ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন নিয়ে প্রচারণা কর্মসূচিতে বক্তাগণ উপরোক্ত মন্তব্য করেন।

বক্তারা বলেন, দেশিয় ক্রেতা-ভোক্তারা অসচেতন ও নিস্ক্রিয় থাকায় অসাধু ব্যবসায়ীর সংখ্যা যেরকম বাড়ছে, তেমনি খাদ্যে ভেজাল, পণ্য ও সেবা প্রদানে অসাধু ব্যবসায়ীর অপতৎরতা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। ভোক্তারা ব্যবসায়ীদের পণ্য ও সেবা ব্যবহার করলে ব্যবসায়ীদের লাভ হবে। কিন্তু দেশে তা না হয়ে ব্যবসায়ীদের করুণার উপর ভোক্তাদেরকে নির্ভর করতে হচ্ছে অনেক জায়গায়। কারণ তারাই জনগণকে জিম্মি করে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে যাচ্ছেন। 

তারা বলেন, খাদ্য ও পণ্য ব্যবসায়ীদের তৎপরতা এতটাই প্রসার ঘটেছে যেখানে শিক্ষার্থীদের টিফিনেও সাম্রাজ্যবাদী ব্যবসার থাবা পড়েছে। শিক্ষার্থীরা এখন আর মায়ের দেয়া টিফিন খেতে আগ্রহী নয়, তারা বাজারের হোটেল ও দোকান থেকে জাঙ্ক ফুড টিফিন হিসাবে খেতে অভ্যস্ত। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে তরুণ সমাজকে নিরাপদ খাদ্য ও ভোক্তা অধিকার বিষয়ে সচেতন ও সোচ্চার করতে হবে। 

বক্তারা আরও বলেন, ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও নিরবে অনেকে প্রতিকারের জন্য আইনী সহায়তা নিতে আগ্রহী না হয়ে নিস্ক্রিয় থেকে যাচ্ছে। অন্যদিকে আইনী দীর্ঘসূত্রিতা ও জঠিলতার কারণে জনগণ ক্ষতিগ্রস্থ ও হয়রানির শিকার হলেও সরকারি অফিস বা আদালতের দ্বারস্থ হতে আগ্রহী নয়। কিন্তু অনেকেই জানেন না ভোক্তা হিসাবে ক্ষতিগ্রস্থ ও ভোগান্তির শিকার হলে একজন ভুক্তভোগী ক্ষতিপুরণ ও প্রতারিত হলে সরাসরি অতি সহজে বিনা কোর্ট ফি ও অ্যাডভোকেট নিযুক্তি ছাড়াই মোবাইল, ফেসবুক, ইন্টারনেট, চিঠির মাধ্যমে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ আইনে অভিযোগ দাখিল করে ক্ষতিপুরণ দাবি করতে পারেন। আর অভিযোগ প্রমাণিত হলে জরিমানার পঁচিশ শতাংশ অভিযোগকারী পাবেন। কিন্তু সাধারণ জনগণ ও ভোক্তারা এ বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা না থাকায় ভোক্তা অধিকার সুরক্ষায় সরকারের এ যুগান্তকারী উদ্যোগ থেকে তেমন সুবিধা পাচ্ছে না। তাই ভোক্তাদের বিশেষ করে ছাত্র ও তরুণদেরকে এ যুগান্তকারী আইন জানানোর জন্য ব্যাপক গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। আর খাদ্যে ভেজাল মানুষ হত্যার চেয়ে জঘন্য। কারণ একজনকে খুন করলে সঙ্গে সঙ্গে মরবে। কিন্তু খাদ্য ও ওষুধে ভেজালের কারণে মানুষ ধুকে ধুকে মরতে হচ্ছে। যা মানুষ খুনের চেয়েও ভয়াবহ।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রামের আয়োজনে ও ক্যাব ডিপিও জহুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রচারণা কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সিডিএ স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নরুল আলম। 

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর চান্দগাঁও ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন খালেদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আবদুল মান্নান। 

মাল্টিমিডিয়া প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিপ্তরের সহকারী পরিচালক নাসরিন আকতার ও পাঁচলাইশ থানা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাকিয়া খাতুন। 

আলোচনায় অংশ নেন ক্যাব মহানগরের সদস্য সেলিম সাজ্জাদ, ক্যাব পাঁচলাইশের যুগ্ম সম্পাদক সেলিম জাহাঙ্গীর, ক্যাব কর্মকর্তা তাজমুন নাহার, শম্পা কে নাহার ও জেড এইচ শিহাব প্রমুখ।

-সিভয়েস/এমএম/এসএ

সিভয়েস ডেস্ক

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়