Cvoice24.com

চট্টগ্রামে আজ, মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪

সময় ঘন্টা মিনিট সেকেন্ড


সংকটে চট্টগ্রাম কলেজ, অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনেই কেটে যায় বছর

প্রকাশিত: ১৪:৩৬, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯
সংকটে চট্টগ্রাম কলেজ, অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনেই কেটে যায় বছর

১৮৩৬ সালে চট্টগ্রাম জেলা স্কুল হিসেবে জন্ম বর্তমান সময়ের চট্টগ্রাম উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম কলেজের। প্রতিষ্ঠালগ্নের তেত্রিশ বছর পরে ১৮৬৯ সালে এটিকে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়। মূলত তখন থেকেই এটি চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ বা চট্টগ্রাম কলেজ নামে পরিচিত।

শুধু মাত্র ইতিহাস ঐতিহ্যে নয় প্রতিবছর উচ্চ মাধ্যমিক ফলাফলে বোর্ডের সেরা কলেজের তকমা রয়েছে  দেড়’শ বছরের সাক্ষী এই কলেজটির। কলেজে নিয়মিত ক্লাস হয়। ডিগ্রি এবং স্নাতক পর্যায়ে ইনকোর্স পরীক্ষাগুলোও সম্পন্ন হয় নিয়মিত । তবে শিক্ষক সংকট আর জরাজীর্ণ একাডেমিক ভবনের কারণে সূচিপত্রের নিয়ম রক্ষায় বেগ পেতে হচ্ছে কলেজ কর্তৃপক্ষকে। তার ওপর রয়েছে সারা বছরই পাবলিক পরীক্ষার চাপ।

চট্টগ্রাম কলেজের প্রধান সহকারী গোলাম কিবরিয়া জানান, পুরো বছর জুড়ে উচ্চ মাধ্যমিকে ১ টি, ডিগ্রিতে (পাস কোর্স) ৩টি, স্নাতক পর্যায়ে ৪টি এবং স্নাতকত্তোর পর্যায়ে ২টি সহ মোট ১০টি পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সঙ্গে রয়েছে সরকারি বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষা। 

পাবলিক পরীক্ষার হিসাব সমীকরণে বেসামাল হচ্ছে বিদ্যাপীঠটির মূল একাডেমিক পাঠ্যক্রম। কলেজ কর্তৃপক্ষ সূত্রমতে, এসব পরীক্ষায় পরিক্ষার্থীর ধারণ ক্ষমতা প্রায় ২ হাজার ৩ শত জন। কিন্তু প্রায় প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে প্রায় ৩৫ শত পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত এসব কক্ষের মধ্যে কোনটি আবার হারিয়েছে ব্যবহারের উপযোগিতা। পরীক্ষার্থীর সুযোগ সুবিধার কথা না ভেবে কলেজটির ল্যাবেও নেয়া হচ্ছে পরীক্ষা।

সরেজমিনে দেখা যায়, সংস্কার কাজ চলছে পুরনো ভবনগুলোতে। এর মধ্যই নেওয়া হচ্ছে পরীক্ষা। তবে বন্ধ রয়েছে প্রসাশনিক ভবনের গ্যালারি কক্ষ । ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত গ্যালারি কক্ষগুলো। এসব কক্ষগুলোতে নষ্ট হয়ে পড়েছে দরজা জানালা।

পরীক্ষা কেন্দ্রের এসব জরাজীর্ণতার সঙ্গে রয়েছে আবার শিক্ষক সংকট। এসব পাবলিক পরীক্ষার দায়িত্ব পালনে প্রায় সারা বছরই ব্যস্ত সময় পার করছেন কলেজটির শিক্ষকেরা। কলেজটির প্রায় ১৭  হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন ১৫৫ জন, যেখানে বিভাগ হিসেবে শিক্ষক থাকার কথা রয়েছে প্রায় ২২৮ জন। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ কলেজটিতে প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল রয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে কর্মচারী রয়েছে ১৪০ জন।

বিভাগ অনুসারে প্রতি বিভাগে ১২ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও মনোবিজ্ঞান বিভাগে রয়েছে ৪ জন, পালি বিভাগে ২জন এবং সংস্কৃত বিভাগে মাত্র ১ জন। এছাড়া শিক্ষক সংকট রয়েছে ভূগোল, উদ্ভিদবিজ্ঞান, ইসলামিক স্টাডিজ সহ বেশ কয়েকটি বিভাগ। রসায়ন বিভাগ ছাড়া বাকি ১৮ টি বিভাগের একই চিত্র। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে স্নাতক চালু থাকলেও এখন পর্যন্ত স্নাতকোত্তর চালু হয়নি।

তবে কলেজটির উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মু. মুজিবুল হক চৌধুরী শিক্ষক ও অবকাঠামোগত সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, এসব ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষ অবগত আছে। সংকট মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, কিছু কক্ষ সংস্কার কাজ চলছে। তবে সব সমস্যা একদিনে সম্ভব নয়। এত সংকটের মাঝেও  শিক্ষার্থীদের কোচিং নির্ভর না করে ক্লাসমুখী করার চেষ্টা চলছে। আশা করছি  ধারাবাহিকভাবে এসব সংকট কেটে যাবে।

সিভয়েস/এএস

আসিফ আহমেদ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়