চসিকের নগর ভবন প্রকল্প আইপেক সভায় পাস

প্রকাশিত: ১৪:৫৩, ২৯ আগস্ট ২০১৯
চসিকের নগর ভবন প্রকল্প আইপেক সভায় পাস

ফাইল ছবি।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন গৃহিত ২০২ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে আধুনিক নগর ভবণ নির্মাণ প্রকল্পটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ‘প্রকল্প পর্যালোচনা কমিটি’র (আইপিইসি/আইপেক) সভায় অনুমোদন পেয়েছে। 

আজ বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিকালে ঢাকাস্থ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইপিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন গৃহিত ২০২ কোটি ২৪ লাখ টাকার “আধুনিক নগর ভবন নির্মাণ প্রকল্প” ও ৩২৯ কোটি ৬৬ লাখ ২৩ হাজার টাকার “স্মার্ট সিটি প্রকল্প” দুটি উত্থাপন করা হয়। এর মধ্যে নগর ভবন নির্মাণ প্রকল্পটি সভায় অনুমোদন দেয়া হয়। পাশাপাশি স্মার্ট সিটি প্রকল্পটি ফিজিবিলিটি স্টাডি করে প্রতিবেদনসহ পরবর্তী সভায় পুনরায় উত্থাপনের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। 

এ ব্যাপারে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের জন্য একটি আধুনিক নগর ভবন প্রয়োজন। সময়ের প্রয়োজনে একটি দৃষ্টিনন্দন আইকনিক বহুতল ভবনের চাহিদা ছিল। সেই চাহিদার কথা মাথায় রেখে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে নগর ভবনের নকশা তৈরি করা হয়েছে। দৃশ্যমানের চট্টগ্রাম নগরী গড়ার প্রত্যয় বাস্তবায়নে নগর ভবন নির্মাণ আরো একটি পদক্ষেপ। প্রকল্পটি আইপিইসি’তে অনুমোদনের মধ্য দিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল। নগর ভবনটি নির্মিত হলে আগামী ৩০/৪০ বছরের অবকাঠামো চাহিদা পূরণ হবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। 

মেয়র আরো বলেন, বিগত সময়ে নগর উন্নয়নে গৃহিত ছয়টি প্রকল্প পাস হয়েছে। এডিপি’র অর্থায়নে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৯৭৪ কোটি ৫৬ হাজার টাকা। বর্তমানে কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। অপর প্রকল্পগুলোর কাজ চলমান রয়েছে। 

এ ব্যাপারে চসিকের প্রকল্প তত্ত্বাবধানকারী নির্বাহি প্রকৌশলী মো. জসিম উদ্দীন বলেন, আজ প্রকল্প পর্যালোচনা সভায় আমাদের দুইটি প্রকল্প আইপিইসি’তে উত্থাপিত হয়েছে। এর মধ্যে নগর ভবন প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়েছে। এখন এটি পরিকল্পনা কমিশনে যাবে। সেখান থেকে প্রি একনেক সভায় এটি উত্থাপিত হবে। স্মার্ট সিটি প্রকল্পটি ফিজিবিলিটি স্টাডি করে পরবর্তী সভায় উত্থাপনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। 

চসিক সূত্রে জানা যায়, ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে নগরীর ৪১ ওয়ার্ডকে কেন্দ্রীয়ভাবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে ৪৯১ কোটি টাকা ব্যয় বাজেটে “স্মার্ট সিটি প্রকল্প”র একটি ডিপিপি প্রস্তুত করা হয়। চলতি বছর ৩ এপ্রিল প্রকল্পটির ডিপিপি (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল) স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে সহযোগিতার ব্যাপারে ইতোমধ্যে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনকে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। সেসময় স্থানীয় সরকারের পর্যবেক্ষণের পর প্রকল্পের ডিপিপি’টি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য চসিকের পক্ষ থেকে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় আজ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আইপিইসি সভায় প্রকল্পটি উত্থাপিত হলে তা পর্যালোচনা করে আরো ফিজিবিলিটি স্টাডি করার জন্য বলা হয়েছে। 

এদিকে নগর ভবন নির্মাণ প্রকল্পের উন্নয়ন প্রস্তাবনা’ (ডিপিপি) মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছিল গত মার্চ মাসে। এই পর্যন্ত আরো দুইবার মেয়র নাছির প্রকল্পের ডিপিপি পাঠিয়েছিলেন। প্রথমবার ২০১৫ সালে ৭৪ কোটি টাকায় এবং দ্বিতীয় বার ২০১৭ সালে ডিপিপিটি সংশোধন করে ১২০ কোটি টাকায়। তখন ভবন নির্মাণে জনতা ব্যাংকের কাছ থেকে ১০০ কোটি টাকা ঋণও চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু এতে আপত্তি জানায় অর্থ মন্ত্রণালয়। ফলে সৃষ্টি হয় অর্থ সংশ্লিষ্ট জটিলতা। তবে মেয়রের একান্ত প্রচেষ্টায় সব জটিলতা নিরসন হয়ে আইপিইসি’তে অনুমোদনের মাধ্যমে নগর ভবন নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নগর ভবন নির্মাণে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে "ইতিবাচক সংকেত" পেয়ে মেয়র নাছির প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ডিপিপি সংশোধন করেন। এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে তিনি গত ২০ জুন আন্দরকিল্লা থেকে নগর ভবনের দপ্তর অস্থায়ীভাবে স্থানান্তর করেন টাইগার পাসে।

-সিভয়েস/এসএ

উজ্জ্বল দত্ত 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়