Cvoice24.com


সাঙ্গু’র ভাঙন আতঙ্কে বান্দরবানের গোয়ালিয়াখোলাবাসী

প্রকাশিত: ১২:১৩, ২৩ আগস্ট ২০১৯
সাঙ্গু’র ভাঙন আতঙ্কে বান্দরবানের গোয়ালিয়াখোলাবাসী

ছবি-প্রতিনিধি

বর্ষা শুরুর আগে বান্দরবান সদর উপজেলার গোয়ালিয়াখোলায় দেখা দিয়েছিলো সাঙ্গু নদীর ভাঙন। বর্ষা মৌসুমে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। ফলে সাঙ্গুর অব্যাহত ভাঙনে বরাবরের মত এবারও ভিটে-মাটি হারানোর শঙ্কায় নদীর পাড়ের মানুষ। ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি, ভাঙনের সময় নয় বরং আগে থেকেই ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

এদিকে গত বছরের সাঙ্গু নদী ভাঙনের ভয়াল দৃশ্য আজও ভুলতে পারেনি এলাকাবাসী। নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষের চোখে এখনো ভেসে উঠে নদীতে তলিয়ে যাওয়া ভিটে-মাটি হারানোর সেই দুঃষহ স্মৃতি।

শুক্রবার (২৩ আগষ্ট) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গোয়ালিয়াখোলার প্রায় দুই কিলোমিটার নদীর পাড় ভাঙনের কবলে পড়ে পানিতে তলিয়ে গেছে। বর্তমানে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। নদীর পাড়ের যে সরু রাস্তাটি ছিল, সেটিও এখন নদীর সাথে মিশে গেছে। বাদ পড়েনি স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য সামসুল আলমের বাড়িও, সেটিও দু-একদিনের মধ্যে নদীর সাথে মিশে যাবে। কয়েকটি গাছ হেলে আছে নদীর পাড়ে, সেগুলোও হারিয়ে যাবে ক্ষণিকের মধ্যে। আগের যে খেলার মাঠটি ছিলো তাও দেখা মেলেনি।

জানা গেছে, সাঙ্গু নদীর ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে নদী পাড়ে বসবাসকারী হাজারো মানুষের। প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ নদীর পাড়ে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ নদী ভাঙন। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন দেখা দিয়েছে বান্দরবান সদর ইউনিয়নের উত্তর গোয়ালিয়াখোলা, গোয়ালিয়াখোলা, রোয়াজা পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায়।

গোয়ালিয়াখোলা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক মিয়া বলেন, সারাবছর ধরে সাঙ্গু নদীর এই ভাঙন অব্যাহত থাকে। বর্ষা এলেই ভাঙনটি ভয়াবহ রূপ নেয়। বাড়ির সামনে বাপ দাদার রেখে যাওয়া ভিটাখানাও নদীর ভাঙনে তলিয়ে গেছে। নদীর পানি বাড়তে থাকা ও বর্ষায় বৃষ্টির প্রভাবে সাঙ্গু নদীর ভাঙন আরও বেড়েছে। গত তিন-চার সপ্তাহের ভাঙনে বাড়ি, আশপাশের জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন আমি নিঃস্ব। আমার সাজানো সংসার লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে রাক্ষুসী সাঙ্গু। দুশ্চিন্তা আর হতাশায় প্রতিমুহুর্ত কাটাচ্ছি।

গোয়ালিয়াখোলার উন্নয়ন মূলক সংগঠন গ্রীন সোসাইটির সভাপতি জামাল উদ্দিন রাসেল বলেন, নদী উত্তাল হয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত নদীর পাড় ভাঙছে। এভাবেই গত এক সপ্তাহে অনেকের ভিটা জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।  আমরা দীর্ঘদিন ধরে ভাঙন রোধের দাবি জানিয়ে আসছি। এখনই ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সামনে আরো অনেক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

৩ নম্বর বান্দরবান সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, গোয়ালিয়াখোলা এলাকা সাঙ্গু তীরবর্তী হওয়ায় অন্তত ৫০ একর আবাদি কৃষি জমি ও ভিটা বাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। অতিভারী বৃষ্টি ও সাঙ্গুর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে ঝড়ে আঘাত হানায় ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এখনই ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নিলে চলতি মৌসুমে আরো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

নদী ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান সিভয়েসকে বলেন, ভাঙনটি অনেক দীর্ঘ, তাই আমরা ভাঙন রোধে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। চলতি বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকার নদীর ভাঙন রোধে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। শীঘ্রই ওই কমিটির মাধ্যমে আমরা বান্দরবানের বিভিন্ন ভাঙন এলাকা সনাক্ত করতে পারবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নিতে সক্ষম হবো।  

-সিভয়েস/এসএ

বান্দরবান (সদর) প্রতিনিধি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়